হাজার বিতর্ক চলছে ছবিটিকে ঘিরে। ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’। যেমন বাণিজ্যসফল, তেমনই বিতর্কিত। ছবির ভালো-মন্দ শুধু নয়, এর সঙ্গে সরাসরি যোগ আছে রাজনীতিরও। ছবি নিয়ে মন্তব্য করার জেরে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বাড়িতে হামলা পর্যন্ত হয়ে গিয়েছে। এতকিছুর মধ্যে ফের নতুন বিতর্ক উসকে দিলেন অভিনেত্রী টুইঙ্কল খান্না। ছবির জনপ্রিয়তাকে মাথায় রেখেই করলেন বেজায় ঠাট্টা। কী বললেন তিনি? শুনে নেওয়া যাক।
টুইঙ্কল খান্না শুধু অভিনেত্রীই নন, বর্তমানে লেখালিখির জগতেও তিনি সুপরিচিত। তাঁর রসবোধের তারিফ করেন তাবড় তাবড় লেখকরা। সমসাময়িক নানা ঘটনা নিয়ে তিনি সরস এবং যুক্তিপূর্ণ মন্তব্য করেন। আর তা নিয়ে শোরগোল পড়ে বেশ ভালই। তবে তাঁর সাম্প্রতিক মন্তব্যটি একেবারে অন্য মাত্রা পেল। কেননা এবারে তিনি বলেছেন, বিবেক অগ্নিহোত্রীর বিতর্কিত ছবি ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ নিয়ে। শুধু বলেছেন বললে কমই বলা হয়, আসলে ছবিটিকে নিয়ে যারপরনাই ঠাট্টাই করেছেন টুইঙ্কল।
আরও শুনুন: খুদের মাছ ধরার ভিডিওতেই লুকিয়ে জীবনের সাফল্যের মন্ত্র, চিনিয়ে দিলেন আনন্দ মাহিন্দ্রা
এই মুহূর্তে কাশ্মীর ফাইলসের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। কাশ্মিরী পণ্ডিতদের ভিটেমাটি ছাড়তে বাধ্য হওয়ার যন্ত্রণা এ ছবির বিষয়। আর তা প্রকাশ্যে আসা মাত্র শুধু জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তা নয়, রাজনৈতিক সমর্থনও পেয়েছে। বেধেছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপি শাসিত রাজ্যে কেন দ্য কাশ্মীর ফাইলস-কে করমুক্ত করা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। বলেছিলেন, কাশ্মীরি পণ্ডিতদের যন্ত্রণাকে সামনে রেখে বিজেপি দলের নেতাদের পোস্টার লাগানোর কাজ কতাচ্ছে। সেই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা হয়েছিল, জবাব দিয়েছিলেন গেরুয়া শিবিরের শীর্ষ নেতারা। এমনকী কেজরিওয়ালের বাসভবনের হামলাও হয়ে গিয়েছে একপ্রস্থ। অবশ্য কোনও কিছুই থামাতে পারেনি টুইঙ্কল খান্নাকে। এতকিছুর পরেও তিনি এই বিতর্কিত বিষয়ে মন্তব্য করলেন, করলেন তাঁর স্বভাবসিদ্ধ সরস ভঙ্গিতেই। বলছেন, এক প্রযোজককে তিনি জানিয়েছেন যে, এই মুহূর্তে কাশ্মীর ফাইলসকে শ্রদ্ধা জানিয়ে একের পর এক ছবির নামকরণ চলছে। এরকমটাই শুনেছেন তিনি। বড় বড় শহরের নাম না পেয়ে কেউ কেউ আবার ছোট জায়গার নামেই ছবি নামকরণ করছেন যেমন, ‘আন্ধেরি ফাইলস’, ‘সাউথ বম্বে ফাইলস’ ইত্যাদি। মজা করে তিনি তাঁর মা প্রখ্যাত অভিনেত্রী ডিম্পল কাপাডিয়াকেও একটি কথা বলেছেন। বলেছেন যে, তিনি একটি ছবি বানাবেন, যার নাম হবে ‘নেইল ফাইলস’। উত্তরে ডিম্পল বলেছেন, ছবিটি কি ম্যানিকিওর বিপর্যয় নিয়ে। টুইঙ্কলের সরস জবাব, সেটা হতে পারে। আবার সাম্প্রদায়িকতার কবরে পেরেকও হতে পারে। ইংরেজি শব্দ এবং অর্থের ভিন্নতা নিয়ে খেলা করেছেন টুইঙ্কল। আর তার ভিতর দিয়েই বুঝিয়ে দিয়েছেন ছবিটা ঠিক কেমন, আর এ সম্পর্কে তাঁর মতামত আসলে কী। নখ নিয়ে ছবি আর সাম্প্রদায়িকতার কফিনে পেরেক- এই দুটো বিষয় পাশাপাশি রেখেই তুখড় বুদ্ধিমত্তায় যা জানানোর জানিয়ে দিয়েছেন।
আরও শুনুন: মাইনে দিতে পারছেন না কর্মীদের, টাকার খোঁজে পড়শিকেই অপহরণ রেস্তরাঁ মালিকের
এই সমস্ত রসিকতাই নির্দ্বিধায় প্রকাশ্যে এনেছেন টুইঙ্কল। বিতর্কের পরোয়া করেননি। আর আগে তাঁর স্বামী অভিনেতা অক্ষয় কুমার কাশ্মীর ফাইলসের প্রশংসা করেছিলেন। সেই সঙ্গে বলেছিলেন, বিবেকের ছবির জেরে তাঁর ‘বচ্চন পাণ্ডে’র ভরাডুবি হল। তবে কি অক্ষয়ের লোকসানের সঙ্গে টুইঙ্কলের ঠাট্টার কোনও যোগসূত্র আছে? এর উত্তর অবশ্য সকলে ইঙ্গিতেই বুঝতে পারছেন।