মন্দিরের কাজে নিযুক্ত থাকতে পারবেন না কোনও অ-হিন্দু কর্মী। সম্প্রতি এমনই নির্দেশ জারি করেছে তিরুপতি মন্দির কর্তৃপক্ষ। মন্দিরের বর্তমান অ-হিন্দু কর্মীরা কী করবেন, সে কথাও স্পষ্ট জানানো হয়েছে নয়া নির্দেশিকায়। কী বলা হয়েছে সেখানে? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
হিন্দু মন্দির, সেখানে কাজ করবেন স্রেফ হিন্দুরাই। তিরুপতি মন্দিরের সাম্প্রতিক নির্দেশিকায় এমনই আঁচ মিলল। যেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, অন্ধ্রের এই বিখ্যাত বিষ্ণু মন্দিরে এবার থেকে কাজ করতে পারবেন না কোনও অ-হিন্দু। কিন্তু তাঁরা যাবেন কোথায়?
কর্তৃপক্ষের নির্দেশ, মন্দিরের বর্তমান অ-হিন্দু কর্মীদের হয় স্বেচ্ছাবসর নিতে হবে নাহলে বদলি হয়ে যেতে হবে অন্যত্র। সে রাজ্যের যে কোনও সরকারি কাজে তাঁরা পুনরায় নিযুক্ত হতে পারবেন। কিন্তু তিরুপতি মন্দিরে কাজের অনুমতি আর মিলবে না। যদিও ঠিক কতজন কর্মীকে এইভাবে বদলি হয়ে যেতে হবে বা অবসর নিতে হবে, তা জানায়নি কর্তৃপক্ষ। সঠিকভাবে কতজন কর্মী রয়েছে সেই হিসাবও নেই। তবে সংবাদমাধ্যমের সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, বর্তমানে এই মন্দিরে প্রায় ৭ হাজার স্থায়ী কর্মী রয়েছেন। দেশের তো বটেই, বিশ্বের ধনীতম মন্দিরের তালিকায় তিরুপতির নাম উপরের দিকেই থাকবে। প্রতিদিন সেখানে ভিড় জমান লাখ লাখ ভক্ত। দক্ষিণাও জমা পড়ে সেই মতো। সেইসব ঠিকমতো সামলানো-সহ মন্দিরের যাবতীয় কাজ করতে হয় এঁদের। এত সংখ্যক কর্মীর মধ্যে প্রায় শ-তিনেক অ-হিন্দু। এঁদের কাউকেই আর দেখা যাবে না মন্দিরে। তিরুপতি মন্দির পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ‘তিরুমালা তিরুপতি দেবস্থানম’ (টিটিডি) এই মর্মে একটি প্রস্তাব পাশ করিয়েছে। তার বিরোধিতাও হয়নি, এমনকি মন্দিরের বিভিন্ন কর্মচারী সংগঠন এই প্রস্তাবকে সমর্থন জানিয়েছে।
আসলে, টিটিডির দায়িত্ব নেওয়ার পরই চেয়ারম্যান বি আর নাইডু এমন পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছিলেন। এতদিনে তা কার্যকর হল। তাই এই প্রস্তাব মেনে নিতে তেমন সমস্যা হয়নি কারও। আগামীদিনে কর্মী নিয়োগ করা হলেও, স্রেফ হিন্দুদেরই করা হবে। তবে এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে নতুন করে শিরোনামে তিরুপতি মন্দির। কিছুদিন আগেই এখানকার প্রসাদী লাড্ডুতে চর্বি থাকার অভিযোগ ওঠে। সেই নিয়ে বিস্তর গোলমাল হয়েছিল। গোটা দেশের রাজনীতি তোলপাড় হয়েছিল বিষয়টি কেন্দ্র করে। এমনকি দেশের অন্যান্য মন্দিরের প্রসাদ নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। জল গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট অবধি। সেই ইস্যু এখন থেমেছে। এই আবহে অ-হিন্দু কর্মীদের মন্দিরে নিষিদ্ধ করে নতুন করে বিতর্ক উসকে দিল কর্তৃপক্ষ।