দলের কাজকর্মে বিরক্ত হয়ে পদত্যাগ করলেন এক বিজেপি নেতা। আর দলত্যাগের মুহূর্তে আনলেন বিস্ফোরক অভিযোগ। ভোটবাক্সের স্বার্থে চূড়ান্ত বিভাজন চালাচ্ছে দল, এমনটাই অভিযোগ তাঁর। বিস্ফোরক নেতা আর কী কী বললেন? শুনে নিন।
বিস্ফোরক পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে সম্প্রতি দল ছাড়লেন তেলেঙ্গানার বিজেপি নেতা আনন্দ ভাস্কর রাপলু। বছর চারেক আগে তিনি যোগ দিয়েছিলেন গেরুয়া শিবিরে। কিন্তু এই চার বছরেই দলের কাজকর্ম এবং নীতিহীনতায় অতিষ্ঠ হয়েই দল ছাড়লেন তিনি। সাফ জানিয়েছেন, গত চার বছরে তিনি যথেষ্ট অপমানিত ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন।
আরও শুনুন: অন্য প্রেমের গল্প! সমাজের ভ্রুকুটি উড়িয়ে উনিশের যুবককেই মন দিলেন ৫৬-র ‘যুবতী’
রাজসভ্যার এই প্রাক্তন সদস্য দলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছেন তা এক কথায় বিস্ফোরক। জে পি নাড্ডার উদ্দেশে দেওয়া এই চিঠিতে তিনি সাফ জানিয়েছেন, তেলেঙ্গানার প্রতি বিমাতৃসুলভ আচরণ করছে দল। ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে সবরকম সুযোগ-সুবিধা। এরপরই দলের মৌলিক নীতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। তাঁর দাবি, দল ‘পজিটিভ সেক্যুলারিজম’ অর্থাৎ সদর্থক ধর্মনিরপেক্ষতা অনুশীলনের কথা বলে। কিন্তু বাস্তবে তাঁর প্রতিফলন কোথায়? ‘বসুধৈব কুটম্বকম’ কি শুধু কথার কথা! নেতার দাবি, দলের কাজে অন্তত তার ছিটেফোঁটা দেখা যায় না। তাঁর অভিযোগ, প্রয়াত অটল বিহারী বাজপেয়ী যে রাজধর্ম ও ফেডারল স্ট্রাকচারের কথা বলে গিয়েছিলেন, বর্তমানে দল আর তা মান্য করে না। বরং চূড়ান্ত বিভাজন চলে এবং তা ভোটের স্বার্থেই করা হয়।
আরও শুনুন: যৌথ সম্পত্তিতে টেক্কা রাজা চার্লসকেও! ঠিক কত সম্পত্তির মালিক ঋষি সুনাক?
করোনা পরিস্থিতিতে দলের অবস্থান নিয়েও ক্ষুব্ধ ওই নেতা। তিনি জানিয়েছেন, মহামারীর দরুন মৃত্যু হয়েছে, মানুষ দারিদ্র্যের কবলে পড়েছে, এ কথা অস্বীকারের উপায় নেই। অথচ কেন্দ্র সরাসরি বলে দিয়েছিল যে অক্সিজেনের অভাবে কারও মৃত্যু হয়নি। বরং কোভিড মোকাবিলায় সাফল্য উদযাপন করা হয়েছে। সামাজিক ন্যায়, মানুষের ক্ষমতায়নের দিকে যে দলের কোনও দৃষ্টি নেই তা জানিয়ে দিতে দ্বিধা করেননি বিক্ষুব্ধ নেতা। দলের এই নীতিহীনতাই তাঁকে অন্তর থেকে বীতশ্রদ্ধ করে তুলেছে। আর তাই তিনি দলের প্রাথমিক সদস্যপদ ছাড়লেন বলেই জানিয়ে দিয়েছেন। সম্ভবত টিআরআস-এই যোগ দেবেন এই বিক্ষুব্ধ নেতা। তবে তাঁর এই পদত্যাগপত্রে শোরগোল পড়েছে রাজনৈতিক মহলে। গেরুয়া শিবিরের নীতি ও কাজের মধ্যে যে বিস্তর ফারাক, এই চিঠি সে-কথাকেই স্বীকৃতি দিচ্ছে। যা প্রকারন্তরে বিরোধীদের অভিযোগকেই পোক্ত করবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।