কৃষ্ণ হোন কি অর্জুন, পুরাণ-ইতিহাসের পুরুষদের দিকে তাকালেই দেখা যায়, প্রত্যেকের একাধিক স্ত্রী রয়েছে। কেবল স্ত্রীই নয়, অসংখ্য সঙ্গিনীদের রাখার জন্য অনেক রাজা-বাদশাই যে হারেম তৈরি করতেন, সে কথাও নতুন নয়। অর্থাৎ পুরুষের একাধিক যৌন সঙ্গী থাকার বিষয়টি বারেবারেই প্রকাশ্যে এসেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক কালের এক সমীক্ষাতে দেখা গেল এর উলটো ছবি। দেশের একাধিক রাজ্যের পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, সেখানে পুরুষদের চেয়ে বেশি যৌন সঙ্গী রয়েছে মহিলাদেরই। ঠিক কী জানাচ্ছে সমীক্ষা? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
দুই বা তার বেশি সংখ্যক সঙ্গীর সঙ্গে কখনও না কখনও যৌনতায় লিপ্ত হয়েছেন তাঁরা, এমনটাই নাকি জানিয়েছেন দেশের একাধিক মহিলা। আর সে কথাই সম্প্রতি জানিয়েছে এক সমীক্ষা। ঠিক কী জানিয়েছে ওই সমীক্ষা? আসা যাক সে কথাতেই।
আরও শুনুন: স্বামীর মৃত্যুতে বধূকে ‘শাস্তি’ দেওয়াই নিয়ম! বিধবাকে ‘বেচাকেনা’র রীতি আছে এই রাজ্যে
সামাজিক নিয়মনীতির কারণে বিবাহ নামের প্রতিষ্ঠানটির শুরু, অর্থাৎ একগামী সম্পর্কের সূচনা। কিন্তু মানুষ স্বভাবতই বহুগামী, এমন কথাই মনে করে একাধিক গবেষণা। তবে এই বহুগামিতার নিদর্শন পুরুষের মধ্যেই বেশি প্রচলিত, এমন একটা চলতি ধারণাও রয়েছে। আর সত্যি বলতে, প্রাচীন পুরাণ ইতিহাস থেকেই সেই ধারণার শুরু। রাজাবাদশা কিংবা অভিজাত পুরুষ থেকে শুরু করে সম্পন্ন বা সাধারণ গৃহস্থদের মধ্যেও বহুবিবাহের চল ছিল দীর্ঘদিন ধরেই। আর বিবাহ সম্পর্ক ছাড়াও যৌন সম্পর্ক স্থাপনের ঘটনা যে কম ঘটত না, সে কথারও সাক্ষ্য দেয় সেইসব পুরনো দিন। কিন্তু বর্তমানে কেবল পুরুষরাই নন, একাধিক যৌন সঙ্গী থাকার ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই মহিলাদের একটা বড় অংশও। অন্তত তেমনটাই জানাচ্ছে এক সাম্প্রতিক সমীক্ষা। উপরন্তু, ‘ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেল্থ সার্ভে’-র করা ওই সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশের একাধিক রাজ্যে পুরুষদের চেয়ে বেশি যৌনসঙ্গী রয়েছে মহিলাদেরই।
আরও শুনুন: নেহরু চেয়েও পারেননি, মুসলিম ‘বোন’দের জন্য তাই করেছেন মোদি! প্রশংসা কেরলের রাজ্যপালের
সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, যৌন সঙ্গীর সংখ্যার বিচার করলে পুরুষদের পিছনে ফেলে দিতে পারেন ভারতের ১১টি রাজ্যের মহিলারা। এই সমীক্ষার সময়সীমা ছিল ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত। দেশের মোট ২৮টি রাজ্য এবং ৮টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৭০৭টি জেলায় জাতীয় পরিবার এবং স্বাস্থ্য সমীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন এমন ২ লক্ষেরও বেশি নারী এবং পুরুষকে নিয়ে এই সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। আর সেই সমীক্ষা থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানা গিয়েছে, দেশের ১১টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বসবাসকারী মহিলাদের যৌন সঙ্গী পুরুষদের তুলনায় বেশি। এই ১১ রাজ্যের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে রাজস্থান। সেখানকার মহিলাদের সঙ্গীর সংখ্যা গড়ে ৩.১। তুলনায় পুরুষদের সঙ্গীর সংখ্যা গড়ে ১.৮। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে হরিয়ানা, তৃতীয় স্থানে চণ্ডীগড়। এর পর রয়েছে জম্মু-কাশ্মীর, লাদাখ, মধ্যপ্রদেশ, অসম, কেরল, লাক্ষাদ্বীপ, পণ্ডিচেরি এবং তামিলনাড়ু। শহরের চেয়ে গ্রামের মহিলাদের মধ্যেই এই অনুপাত বেশি। আবার অবিবাহিত, বিবাহবিচ্ছিন্ন কিংবা বিধবা মহিলাদের তুলনায় সদ্যবিবাহিত মহিলাদের মধ্যেই এই অনুপাত বেশি বলে জানিয়েছে সমীক্ষা।
তবে যৌন সঙ্গীর সংখ্যার বিচারে মহিলারা এগিয়ে থাকলেও, সমীক্ষা জানাচ্ছে, সঙ্গী ছাড়াও যে কারও সঙ্গে যৌনতার বিচারে এগিয়ে পুরুষরাই। অর্থাৎ স্ত্রী নন কিংবা কখনও একসঙ্গে বসবাস করেননি, এমন কারও সঙ্গে যৌনতা করে থাকেন ৩.৬ শতাংশ পুরুষ। কিন্তু সম্পর্ক নেই এমন পুরুষের সঙ্গে মহিলাদের যৌনতা করার হার সেখানে ০.৫ শতাংশ, এমনটাই দাবি সমীক্ষার।