পুত্রসন্তান চাই, তান্ত্রিকের কথায় বধূকে প্রকাশ্যে নগ্ন করে স্নান করাল পরিবার

জনসমক্ষে নগ্ন হয়ে স্নান করতে বাধ্য হলেন ত্রিশ বছরের এক যুবতি। স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজনই তাঁকে জোর করে এমন কাজ করিয়েছেন বলে অভিযোগ ওই মহিলার। জানা গিয়েছে, এক তান্ত্রিকের নির্দেশেই পুত্রসন্তান পাওয়ার আশায় এই কাণ্ড ঘটিয়েছে ওই পরিবার। মহিলার স্বামী, শ্বশুর শাশুড়ি এবং তান্ত্রিকের নামে দায়ের হয়েছে মামলা। পুনের এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

আরও শুনুন: ঋতুকালে মহিলা কর্মীরা রেড স্টিকার পরুন! অদ্ভুত দাবি কাফে মালিকের

ওই মহিলার অভিযোগ, ২০১৩ সালে তাঁদের বিয়ে হওয়ার পর থেকেই শ্বশুরবাড়িতে নিয়মিত নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তিনি। পণ এবং পুত্রসন্তান জন্ম দেওয়ার দাবিতে স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাঁকে মানসিক এবং শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন বলে জানিয়েছেন মহিলা। এমনকি পৈতৃক সূত্রে পাওয়া তাঁর গয়নাগাঁটি বিক্রি করে দেওয়া, তাঁর সই জাল করে পৈতৃক সম্পত্তি বন্ধক রেখে ৭৫ লক্ষ টাকা ঋণ নেওয়া, স্বামীর নামে এমন একাধিক নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন মহিলা। সেই তালিকাতেই নয়া সংযোজন এই সাম্প্রতিক হেনস্তা।

মহিলার অভিযোগ, এর আগেও পুত্রসন্তান পাওয়ার আশায় একাধিক তান্ত্রিকের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এবার মৌলানা বাবা জমাদার নামে এক তান্ত্রিকের কাছে হাজির হয়েছিলেন তাঁরা। সেই তান্ত্রিকের নিদান ছিল, বিবস্ত্র অবস্থায় প্রকাশ্যে ঝরনার জলে স্নান করতে হবে মহিলাকে। তবেই নাকি নিশ্চিত হবে পুত্রসন্তানের জন্ম। তান্ত্রিকের সেই নির্দেশ মেনে মহিলাকে রায়গড় জেলায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর জনসমক্ষেই তাঁকে নগ্ন হয়ে স্নান করতে বাধ্য করে পরিবার।

আরও শুনুন: সদ্যোজাত কন্যাকে জ্যান্ত পুঁতে ফেলা হল মাটিতে , ‘বেটি বঁচাও’-এর উল্টো পথেই কি হাঁটছে দেশ?

‘বেটি বচাও বেটি পড়াও’-এর বার্তা দিতে সরকার যতই সোচ্চার হোক, সমাজে পুত্রসন্তান কামনার ছবিটা কিন্তু বিশেষ বদলায়নি। কিছুদিন আগে জন্মাষ্টমী উপলক্ষেও দেখা গিয়েছে, পুত্রসন্তান লাভের আশায় অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের নিয়ে নির্ধারিত দিনের আগেই অপারেশন থিয়েটারে হাজির তাঁদের পরিবার। বিজ্ঞান যতই বলুক, সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণের পিছনে মানুষের হাত নেই, কিন্তু অন্ধবিশ্বাসের সামনে সেইসব বৈজ্ঞানিক যুক্তি নিতান্তই অসহায়। সম্প্রতি সেই চাহিদারই নগ্ন প্রকাশ দেখা গেল মহারাষ্ট্রের এই ঘটনায়।