আইনত বিচ্ছেদ হয়নি। কিন্তু স্বামীর আচরণের কারণেই তাঁর সঙ্গে একত্রে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। এমন ক্ষেত্রে স্ত্রীকে খোরপোশ দিতে বাধ্য থাকবেন কোনও ব্যক্তি, জানিয়ে দিল আদালত। ঠিক কী রায় আদালতের? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
বিবাহবিচ্ছেদের পর খোরপোশের জন্য আবেদন জানাতে পারেন স্ত্রী। কিন্তু আইনি বিচ্ছেদ না হলেও ক্ষেত্রবিশেষে খোরপোশ পেতে পারেন কোনও মহিলা। সম্প্রতি এক মামলার প্রেক্ষিতে এমনই রায় দিল দিল্লি হাই কোর্ট। আদালতের মতে, স্বামী স্ত্রীকে তাঁদের দাম্পত্য সম্পর্ক মেরামত করার জন্য অনুরোধ জানাতে পারে আদালত। কিন্তু এজাতীয় কোনও নির্দেশ বলবৎ থাকার কালে যদি দেখা যায়, স্বামীর আচরণের কারণে স্ত্রী তাঁর সঙ্গে থাকতে পারছেন না, তাহলে অপরাধ আইন মোতাবেক স্বামী তাঁকে খোরপোশ দিতে বাধ্য থাকবেন। অর্থাৎ, তথ্যপ্রমাণে স্বামীর অন্যায় আচরণের দিকটি প্রমাণিত হলে ওই ব্যক্তি খোরপোশ দিতে অস্বীকার করতে পারবেন না, এমনটাই রায় আদালতের।
আরও শুনুন: ৩০০ পুরুষের সঙ্গে ৩০০ ভঙ্গিতে যৌনতার রেকর্ড! পর্ন তারকার যুগ শেষ বলে দাবি করলেন সেই অভিনেত্রীই
দাম্পত্য বিষয়ক এক মামলাতে নিম্ন আদালতের রায় ছিল, দায়রা আদালতের আদেশের প্রেক্ষিতে মহিলা খোরপোশ দাবি করার অধিকারী নন। নিম্ন আদালতের এই সংক্রান্ত একটি রায়কে চ্যালেঞ্জ করে দিল্লি হাই কোর্টে যান এক মহিলা। সেই মামলারই শুনানিতে শেষ পর্যন্ত মহিলার পক্ষেই রায় দিল উচ্চ আদালত। বিচারপতি স্বরাণাকান্ত শর্মা সাফ জানালেন, যদি আদালতগ্রাহ্য তথ্যপ্রমাণে দেখা যায় যে স্বামীর আচরণের কারণেই স্ত্রী তাঁর সঙ্গে থাকতে পারছেন না, তাহলে স্ত্রী ও নাবালক সন্তানদের খোরপোশ দিতে স্বামী অস্বীকার করতে পারেন না। নিম্ন আদালতের পর্যবেক্ষণকে ভুল বলেই চিহ্নিত করেছে হাই কোর্ট। উপরন্তু আদালত আরজি জানিয়েছে, এই সংক্রান্ত মামলাগুলিকে অত্যন্ত সংবেদনশীল দৃষ্টিতে বিচার করতে হবে। প্রাসঙ্গিক মামলাটিতে ২০০৯ সালে খোরপোশ চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ওই মহিলা। কিন্তু প্রাথমিক রায় পেতেই ন’বছর গড়িয়ে গিয়েছিল। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, জীবনযাপনের জন্য খোরপোশ চাওয়ার দাবি এখানে জীবনযাপনের লড়াইতে পরিণত হয়ে গিয়েছে। হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, প্রত্যেকের মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন করার অধিকার রয়েছে। আর সেই অধিকার যাতে নিশ্চিত হয়, মানবিক ও সংবেদনশীল হয়ে সেই বিষয়টি দেখতে হবে আদালতকে। তাই যত দ্রুত সম্ভব এই জাতীয় মামলার নিষ্পত্তি করে ফেলা উচিত, এমনটাই অভিমত জানাল দিল্লি হাই কোর্ট।