বিদেশমন্ত্রী হিসেবে বরাবরই বিশ্বের দরবারে দেশের মাথা উঁচু রাখতে চান জয়শংকর। সেক্ষেত্রে জাতীয় স্বার্থে আঘাত লাগে, এমন কিছু মেনে নিতে তিনি একেবারেই নারাজ। সম্প্রতি সে প্রসঙ্গে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’-র সমর্থকদের তুলোধোনা করলেন তিনি। ঠিক কী ঘটেছে? আসুন শুনে নিই।
রাজ্যসভায় বক্তৃতা রাখতে শুরু করেছেন বিদেশমন্ত্রী। মোদির সাম্প্রতিক বিদেশ সফর নিয়েই মূলত কথা বলতে শুরু করেন তিনি। কিন্তু সংসদ জুড়ে তখন শুধুই ‘ইন্ডিয়া ইন্ডিয়া’ রব। কথা থামাতে বাধ্য হন জয়শংকর। এরপরই সাংবাদিক সম্মেলনে বিরোধীদের একহাত নিলেন তিনি।
আরও শুনুন: রাজীব, মনমোহনের থেকে মোদির বিদেশসফর অনেকটাই আলাদা, কেন এমন দাবি বিদেশমন্ত্রীর?
একাধিক ইস্যুতে প্রায়শই সরগরম থাকে রাজ্যসভা। এদিনও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সবেমাত্র কথা বলা আরম্ভ করেছেন বিদেশমন্ত্রী জয়শংকর। আর তখনই ‘ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়া’ স্লোগানে সভাকক্ষ ভরিয়ে তোলেন বিরোধীরা। উল্টোদিকে ‘মোদি,মোদি’ স্লোগানও ভেসে আসে বিজেপির তরফে। বিরক্ত হয়ে মাঝপথে থামতে বাধ্য হন জয়শংকর। ঘটনায় বেজায় চটেছেন তিনি। এরপরই সাংবাদিক সম্মেলনে রীতিমতো তুলোধনা করেন বিরোধীদের। তাঁর কথায়, এদিন মূলত প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফর নিয়েই কথা বলতে শুরু করেছিলেন তিনি। বিদেশ নীতিতে ভারতের সাম্প্রতিক সাফল্য সহ একাধিক ইস্যুতে বক্তব্য রাখার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। আর এই সবই জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সম্পর্কিত। তাই জয়শংকরের মতে, এই আলোচনা যে কোনও রাজনৈতিক দ্বন্দের উর্ধে থাকা উচিত। এদিন স্রেফ দেশের সাফল্যের কথা তুলে ধরতে চেয়েছিলেন তিনি। যার সঙ্গে কেন্দ্র সরকারের কোনও সম্পর্ক নেই। তাই সেই আলোচনায় বিরোধীদের অংশ না নেওয়া, মোটেও পছন্দ হয়নি জয়শংকরের। উলটে এদিন রাজ্যসভায় তাঁকে কার্যত কথাই বলতে দেওয়া হয়নি। তাই ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ হয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর।
আরও শুনুন: সংখ্যালঘুরা বেশি সুবিধা পেয়েছেন মোদির আমলেই! কোন তথ্যে এমন দাবি বিজেপি নেতার?
সাংবাদিক সম্মেলনে ঘটনা নিয়ে সরব হন বিদেশমন্ত্রী। বিরোধীদের উদ্দেশে তাঁর কটাক্ষ, নাম ‘ইন্ডিয়া’, অথচ তাঁরাই জাতীয় স্বার্থ বোঝেন না! সেইসঙ্গে স্পষ্ট ভাষায় নিজের ক্ষোভের কারণ জনসমক্ষে বলেন জয়শংকর। তাঁর মতে, বিভিন্ন দলের মতামত ভিন্ন হতেই পারে। কিন্তু জাতীয় স্বার্থের অবহেলা একেবারেই উচিত নয়। এদিন মূলত বিদেশনীতি নিয়ে কথা বলতে চেয়েছিলেন তিনি। যেখানে বাধা দেওয়া, অনুচিত বলেই মনে করেছেন তিনি। একইসঙ্গে কীভাবে বিদেশ সফরে প্রধানমন্ত্রী সম্মানিত হয়েছেন সেইসব কথাও উল্লেখ করেন তিনি। তাঁর কথায়, দল-মত নির্বিশেষে দেশের এই সাফল্যে সকলের উচ্ছসিত হয়া উচিত। কিন্তু সংসদের পরিবেশ তা একেবারেই জানান দেয়নি। বরং বিরোধীরা, দেশ অপেক্ষা রাজনৈতিক স্বার্থকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন বলে মনে করেছেন জয়শংকর। এমন পরিস্থিতি আসলে দেশের উন্নতিকেই খানিক থমকে দেয়। সবশেষে এমনটাই আক্ষেপের সুরে জানান বিদেশমন্ত্রী।