শুধু ওষুধ খেলে কাজ হবে না। নিয়মিত পাঠ করতে হবে ধর্মগ্রন্থ। তবেই সারবে রোগ। কোনও ধর্মগুরু নয়, রোগিদের এমন নির্দেশ দেন এক চিকিৎসক। নেপথ্যে কী যুক্তি তাঁর? আসুন শুনে নিই।
দ্রুত রোগ সারানোর অব্যর্থ ওষুধ হতে পারে নিয়মিত ধর্মগ্রন্থ পাঠ। এমনই দাবি যোগীরাজ্যের এক চিকিৎসকের। তাই ওষুধের পাশাপাশি, রোগিদের হাতে গীতা, রামায়ন, হনুমান চলিশার মতো বই তুলে দেন তিনি। নির্দেশ দেন নিয়মিত সেসব পাঠ করার। আর এতেই নাকি দ্রুত সেরে যায় রোগ।
আরও শুনুন: প্রশংসা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী, ধর্ম নিয়ে ভুল ভাঙাচ্ছেন ভিনদেশি ধর্মগুরু
কথা বলছি, ডা. নীরজ কুমার সম্পর্কে। কানপুরের বাসিন্দা নীরজ পেশায় একজন কার্ডিওলজিস্ট। সেখানকার নামকরা কার্ডিওলজি ইন্সটিটিউশনে হার্ট সার্জেন হিসেবে তিনি নিযুক্ত। তবে অন্যান্য চিকিৎসকদের তুলনায় তাঁর চিকিৎসা পদ্ধতি কিছুটা আলাদা। এমনিতেই চিকিৎসকরা যে কোনও রোগির মানসিক স্বাস্থ্যের কথা সবসময় খেয়াল রেখে চলেন। কোনও রোগি মন থেকে না চাইলে হাজার চিকিৎসাতেও তাঁকে সুস্থ করা সম্ভব নয়। আর সার্জেনদের এ ব্যাপারে আরও সতর্ক থাকতে হয়। অপারেশন নিয়ে রোগি যেন বিন্দুমাত্র চিন্তা না করেন সেদিকে খেয়াল রাখতে হয় চিকিৎসকদেরই। আর এখানেই অদ্ভুত এক উপায় মেনে চলেন ডা. নীরজ। রোগিদের মানসিকভাবে শক্ত করার জন্য তিনি ধর্মগ্রন্থ পাঠের নিদান দেন। স্রেফ নিদান দেন বললে ভুল হবে, ওষুধ খাওয়ার মতোই তাঁর কড়া নির্দেশ থাকে ওই ধর্মগ্রন্থ পড়ার। কাউকে রামায়ণ, কাউকে হনুমান চলিশা।, কাউকে আবার গীতা, নিজেই উপহার দেন নীরজ। তারপর নির্দেশ দেন নিয়মিত সেসব পাঠ করতে। তাঁর দাবি এর জেরে রোগির মানসিক স্বাস্থ্য অনেকটা উন্নত হয়। ফলে অপারেশন করতে যেমন কোনও অসুবিধা হয় না, তেমনই রোগও সাড়ে দ্রুত।
আরও শুনুন: মন্দিরে বসেই নমাজ পড়েন মুসলিমরা, কোথায় চালু এই রেওয়াজ?
এর আগে অপারেশন থিয়েটারে ধর্মীয় গান চালানোর কথা শোনা গিয়েছিল। অনেকেই দাবি করেছিলেন, এর জেরে রোগিদের মনে জোর আসবে। সেই প্রসঙ্গেই রোগিদের ধর্মীয় বই পড়ানোর অভ্যাস কোরান ডা. নীরজ। একদিন নয়, বিগত এক বছর ধরে এমনটা করে আসছেন তিনি। মূলত অপারেশন করতে হবে এমন রোগিদের কোনও না কোনও ধর্মগ্রন্থ পাঠের নির্দেশ দেন তিনি। শুধু মানসিক স্বাস্থ্য নয়, এর ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ে বলেই দাবি ডা. নীরজের। আর বাকী কাজ হয় ওষুধে। নতুন কোনও রোগি তাঁর কাছ এলেই প্রেসকিপশনের সঙ্গে কোনও না কোনও বই উপহার দেন। তারপর নিয়মিত ওষুধ খাওয়ার মতো সেই বইও পাঠ করতে বলেন। তাঁর দাবি, একবার রোগের কথা শুনলেই সেই নিয়ে নানা দুশ্চিন্তা করতে শুরু করে রোগিরা। যার ফলে রোগ সারার বদলে আরও বেড়ে যায়। নিয়মিত ধর্মগ্রন্থ পাঠ মন থেকে এইসব দুশ্চিন্তা অনায়াসে দূর করে দেয়। আর মন খুশি থাকলে রোগ সারতে বাধ্য। এমনকি অপারেশন থিয়েটার যাওয়ার আগেও বিশেষ ভয় পান না এই রোগিরা, এমনই দাবি ডা. নীরজের। তাই এই ধর্মগ্রন্থ পাঠ করানো নিজের চিকিৎসা পদ্ধতির অঙ্গ বানিয়ে ফেলেছেন তিনি। তাঁর কাছে চিকিৎসা করাতে আসা মানুষজনও এতে বেজায় খুশি। অনেকেই নিষ্ঠাভরে তাঁর নির্দেশ পালন করেন। এবং এই অভ্যাসের জেরেই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন বলে দাবি অনেকের।