তিনি ব্রাজিলের মানুষ। তবু পড়েন বেদ-বেদান্ত। পুজো-আচ্চা, ধ্যানেই খুঁজে পান শান্তি। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মন-কি-বাত অনুষ্ঠানে তাঁর কথা উল্লেখ করেছিলেন। সাধারণ মানুষের ধর্মভাবনা নিয়ে একটা বড় ভুল ভাঙিয়ে চলেছেন তিনি। কে তিনি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
আরাম আর সুখ কি এক? চেষ্টা করলে আরাম-বিলাস-আয়েশ হয়তো মেলে। কিন্তু সুখ? সোনার রাজপ্রাসাদে থেকেও তো কেউ অবসাদগ্রস্ত হতে পারেন। সুখ তখনই সম্ভব যদি নিজের ভিতরে আসে পরিবর্তন। সম্ভব হয় নিজেকে জানা। নিজেকে খোঁজার সূত্রেই ভারতীয় দর্শন, ধর্ম-ভাবনার নিবিড় সংস্পর্শে চলে এসেছিলেন তিনি। জোনাস লোপেস মাসেট্টি। ব্রাজিলের এই অধ্যাত্মগুরুই এখন সকলকে শোনাচ্ছেন আত্ম অনুসন্ধানের উপায়। ভাঙিয়ে দিচ্ছেন ধর্ম-ভাবনা নিয়ে মানুষের সাধারণ ভুল ধারণা।
মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। তবে, এই প্রথাগত শিক্ষার বাইরে অন্য এক খোঁজ বরাবরই জারি ছিল তাঁর অন্তরে। খোঁজ করতে করতে চলে এসেছিলেন ভারতে। ২০০৫ সালে, এসেছিলেন প্রথমবার। ছিলেন মাস ছয়েক। সেই সময়েই ভারতের ধর্ম ও অধ্যাত্মসাধনার মূলমন্ত্রগুলি আত্মস্থ করেছিলেন। পরে সংস্কৃত শিখতে শুরু করেন। পড়তে শুরু করেন বেদ। ২০০৮ সালে আবার আসেন ভারতে। এবার গুরুর কাছে নিজেকে নিবেদন করে অধ্যাত্মসাধনার পাঠ নেন। ভারতীয় দর্শনের ঐশ্বর্যময় দুয়ার খুলে যায় তাঁর সামনে। পরে দেশে ফিরে সেই ধারাই বজায় রাখেন। সাধারণ মানুষকে জীবনে সুখের হদিশ দেন তিনি, ভারতীয় অধ্যাত্মসাধনার রীতি মেনেই। মন-কি-বাত অনুষ্ঠানে তাঁর কথা উলেখ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যা তাঁর কাছে বিশেষ প্রাপ্তি বলেই জানিয়েছেন তিনি।
ভারতের অধ্যাত্মসাধনার কথাই সকলকে জানান তিনি। আর সেই সঙ্গে ভাঙিয়ে দেন, ধর্ম নিয়ে মানুষের সাধারণ ভুল ধারণা। তিনি বলেন, বহু মানুষই ধর্ম ও আধ্যাত্মিকতাকে এক করে ফেলেন। দুটো আলাদা জিনিস। নিজের জীবনকে সার্থক ও অর্থপূর্ণ করে তোলা হল যাপনের একটি পদ্ধতি। নীতিগত ভাবে যা মানুষকে মানবতাকে উন্নত করে, তার মধ্যে কোনও দ্বন্দ্ব থাকতে পারে না। ধর্ম হল ন্যায়ের পথ। আধ্যাত্মিকতা আর সম্প্রদায়গত ধর্মধারণাকে এক না করে ফেলার কথাই জগৎবাসীকে শুনিয়ে যান তিনি।