আকাশে মেঘের ঘনঘটা, বৃষ্টি এই নামল বলে… এদিকে সঙ্গে নেই ছাতা… যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধে হয় গোছের অবস্থা… কিন্তু কুছ পরোয়া নেহি; একটু উপস্থিত বুদ্ধির জোরেই এ যাত্রা মাথাটুকু অন্তত বাঁচানো যেতে পারে।
কথায় বলে, বর্ষার ছাতা আর শীতের কাঁথা হাতছাড়া করতে নেই মোটেও। বর্ষা তো চলে এসেছে ঝমঝমিয়ে। নাগরিক কবিয়াল বলবেন, এসো হে আষাঢ় ছাতায় তোমায় বরণ করি… কিন্তু প্রতিদিনের ব্যস্ততায় মন এমন পথভোলা, যে, ছাতার কথা মনে থাকলে তবে তো বরণ করা। এদিকে আকাশে মেঘের গুরুগুরু, চারিদিকে আবছা আঁধার… মুষলধারে এক পশলা যে নামবে সে তো বুঝতেই পারছেন, আর ঠিক তখুনি খেয়াল করলেন, আপনার ব্যাগে নেই সেই মোক্ষম জিনিসটি- আপনার ছাতা। মনভুলে সেটিকে ছাড়াই বেরিয়ে পড়েছেন ঘর থেকে। এখন উপায়! হ্যাঁ, অবশ্যই ছাতার বিকল্প আর কিছু নেই, তবে কাজচলতি মাথা বাঁচানোর খানকয় উপায় বাজিয়ে দেখতেই পারেন।
এই বর্ষাকালটা প্রতিদিন অন্তত সঙ্গে রাখুন খবরের কাগজ। সকালের কাগজ পড়া পর্ব সারা হলে মনে করে সেটিকে ঢুকিয়ে নিন ব্যাগে। বা, নিতে পারেন আগের দিনের কাগজ। যদি বর্ষারানির খেয়ালে কাকভেজা হয়ে উঠতেও হয়, তবে মাথা বাঁচাবে এই কাগজই। সুবিধেমতো শুকনো জায়গায় দাঁড়িয়ে ভেজা মাথায় চেপে ধরুন কাগজ, জল শুষে নেবে নিমেষে। এ ছাড়াও ঘড়ি থেকে জুতো, জলে যাই-ই ভিজে যাক না কেন, চটজলদি শুকোনোর কাজে কাগজের জুড়ি মেলা ভার।
যদি সম্ভব হয়, এই সময় কিনে রাখতে পারেন মাইক্রোফাইবারের একটি তোয়ালে। এই বর্ষার দিনে ভিজে গেলে বেশ খানিক কাজে দিতে পারে এই বস্তুটি।
আর-একটি উপকারী জিনিস প্লাস্টিকের ব্যাগ। ছাতা থাকলেও এর উপকার কিন্তু ফেলনা নয়। ভেজা ছাতা এর মধ্যে পুরে রাখতে পারলে নিশ্চিন্ত। আর ছাতাহীন অবস্থায় মোবাইল বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস এর মধ্যে রেখে আপাতত রক্ষা করতে পারেন। আর কোনও উপায় না দেখলে, প্লাস্টিক যদি একটু বড়সড় হয় তো চাপিয়ে দিতে পারেন মাথার উপরও। অন্তত মাথাটা তো বাঁচবে।
এরকম ঘরোয়া টোটকা খানিকটা উপকারে লাগতেই পারে। সেইসঙ্গে আর দু-একটা জরুরি টিপসও থাকল। ভিজে যাওয়া ফোনকে যদি চালের ভিতর ঢুকিয়ে রাখা যায়, তবে, ভিতরে ঢুকে যাওয়া জল অনেকটা শুষে নিতে পারে শুকনো চাল। এই টোটকা তো আজকাল অনেকেই জানেন। সেই সঙ্গে কেউ কেউ পরামর্শ দেন, বর্ষার দিনকালে সঙ্গে এক্সট্রা একসেট মোজা রাখতে। তাতে ভিজে মোজা সারাদিন পরে থাকার যন্ত্রণা থেকে মিলবে মুক্তি। আর আপনার যদি ছাতা হারানোর বাতিক থাকে, তবে একটা পরামর্শ দেওয়া যেতেই পারে। ছাতার উপর আপনার ফোন নম্বরটি লিখে রাখুন। হয়তো আপনার হারানো ছাতা ফিরে এলেও আসতে পারে। বলি, সহৃদয় মানুষ তো আর একেবারেই সব উবে যাননি।
আরও শুনুন : বজ্রপাত থেকে বাঁচতে কী করবেন?
মোট কথা, বর্ষাকাল আদতে যে রোম্যান্টিক, সে শুধু কবিদের জন্য কেন হবে! বর্ষাকে উপভোগ করুন আপনিও। আর যেটুকু যা নৈমিত্তিক ভোগান্তি সেটুকুকে উড়িয়ে দিন ঘরোয়া উপায়েই।