নির্ভয়া কাণ্ডের পরে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিল গোটা ভারত। শেষ পর্যন্ত দোষীদের মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। শুধু সে সময়ে নয়, একাধিক ধর্ষণকাণ্ডের ক্ষেত্রেই সাজা হিসেবে দোষীদের নির্বীজকরণের পক্ষে রায় দিয়েছেন অনেকেই। আর এবার তেমনটাই হতে চলেছে থাইল্যান্ডে। সেখানে সম্প্রতি পাশ হয়েছে এমনই বিল। কী বলা হয়েছে সেই বিলে? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
ধর্ষণে দোষী সাব্যস্তদের জন্য এবার কঠোর পদক্ষেপ করল থাইল্যান্ডের শাসনব্যবস্থা। একাধিক বার ধর্ষণ ও নির্যাতনে দোষী সাব্যস্তদের রাসায়নিক ভাবে নির্বীজকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে দেশের সেনেট। শিশু নির্যাতনকারীদের জন্যও বহাল হতে চলেছে একই সাজা। সম্প্রতি থাইল্যান্ডের সেনেটে পাশ হয়েছে এমনই বিল। ১৪৫টি ভোটের মধ্যে ১৪৫টিই গিয়েছে ওই সাজার পক্ষে। নতুন আইন অনুযায়ী, অপরাধীর সম্মতি নিয়েই তাঁকে ইনজেকশন দিয়ে নির্বীজকরণ করানো হবে। গোটা প্রক্রিয়ার সময়ে উপস্থিত থাকবেন শরীর এবং মন- দু’য়ের ডাক্তারই।
আরও শুনুন: ‘অভিশাপ’ দূর করতে কবর খুঁড়ে শবদেহের মুখে জল গ্রামবাসীদের, নেপথ্যে কোন বিশ্বাস?
কী এই রাসায়নিক নির্বীজকরণ? বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, বিশেষ ওষুধ ব্যবহার করে ব্যক্তির শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের স্তরকে কমিয়ে আনা হয়। যা তিন-চার মাস, সর্বাধিক ৬ মাস পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। নিশ্চয়ই ভাবছেন, কোনও অপরাধী কেন নিজে যেচে সায় দিতে যাবে এমন পন্থায়? কারণ ওই আইন অনুযায়ী, ওই ব্যক্তি যদি এই রাসায়নিক নির্বীজকরণ করতে রাজি হয়, তবে তাকে জেল খাটতে হবে না। ছাড়া পাবে সে।
বহু বিশেষজ্ঞই মনে করেন, ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য অপরাধ সমাজ থেকে মুছে ফেলার একমাত্র উপায় নির্বীজকরণ। আর থাইল্যান্ডের সেনেটের সমস্ত সদস্যই তাই ভোট দিয়েছেন এই বিলের পক্ষে। বলাই যায়, কোনও রকম বিরোধিতা ছাড়াই সেখানকার আইনসভায় পাশ হয়ে গিয়েছে এই বিল। এর ফলে এই ধরনের ঘৃণ্য অপরাধের সংখ্যা কমবে বলেই আশা করছে সে দেশের প্রশাসন। এ ধরনের কাজ করার আগে মানুষ একবার হলেও ভাববে, তেমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।
আরও শুনুন: খুনের কিনারায় হিমশিম গোয়েন্দা, আততায়ীকে ধরিয়ে দিল ছাপোষা এক ডাকটিকিট
আমেরিকার আটটি রাজ্য, দক্ষিণ কোরিয়া, পোল্যান্ড-সহ বেশ কয়েকটি দেশে চালু রয়েছে এই রাসায়নিক নির্বীজকরণের শাস্তি। নরওয়ে, ডেনমার্ক, জার্মানির মতো বেশ কিছু দেশে আবার গুরুতর অপরাধের সাজা হিসেবে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে নির্বীজকরণের প্রক্রিয়াও চালু রয়েছে। এবার সেই তালিকায় নতুন করে নাম লেখাল থাইল্যান্ড। এর ফলে ধর্ষণের মতো ন্যক্কারজনক ঘটনা কমিয়ে আনা যায় কিনা, সেটাই এখন দেখার।