তামিলনাড়ু সরকারের উদ্যোগে চেন্নাইয়ের কুইন মেরিজ় কলেজে স্থাপিত হবে রবীন্দ্রনাথের মূর্তি। কবির সঙ্গে দক্ষিণ ভারতের সম্পর্ক ও নারী শিক্ষায় কবির অবদানকে স্মরণ করতেই এই উদ্যোগ। আরও খবর, সেই মূর্তি উদ্বোধনে আমন্ত্রিত হতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তাঁর চেয়ে কে বেশি বুঝত ভারতআত্মাকে! যুবক বয়সে ভারতের দক্ষিণ অংশের প্রেমে পড়েছিলেন তো বটেই, পরে যখন স্বীকৃতি মহাকবি, তখনও একাধিকবার দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে সফর করেছেন আশ্রমিকদের সঙ্গে নিয়ে। বিশেষত তামিলনাড়ুতে। সেই স্মৃতিকে অমিলন করে রাখতে এবার বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে তামিলনাড়ু রাজ্য সরকার। কী সেই উদ্যোগ?
আরও শুনুন: দক্ষ ‘ইঞ্জিনিয়ার’ ছিলেন রাম! এবার তা নিয়ে বিস্তারিত পড়াশোনা করতে হবে কলেজ পড়ুয়াদের
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি পূর্ণাবয়ব মূর্তি স্থাপিত হবে চেন্নাইয়ের কুইন মেরিজ় কলেজে। যে মূর্তির সঙ্গে আবার নাম জুড়তে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কীভাবে? যেহেতু তামিলনাড়ু সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কবির মূর্তি উদ্বোধনে আমন্ত্রণ জানানো হবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কিন্তু কেন হঠাৎ চেন্নাই শহরের মেয়েদের বিখ্যাত কলেজে রবীন্দ্রনাথের মূর্তি স্থাপনের পরিকল্পনা?
একটা কারণ তো দক্ষিণ ভারত ও রবীন্দ্রনাথের সম্পর্ককে সম্মান জানানো। সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, দ্বিতীয় কারণ, নারীশিক্ষা তথা নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়ে বিশ্বকবির অবদানকে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন। সেই কারণেই ১৯১৪ সালে স্থাপিত সমগ্র দক্ষিণ ভারতে মেয়েদের জন্য তৈরি হওয়া প্রথম কলেজে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তি স্থাপনের ভাবনা। সূত্রের খবর, মাস তিনেক লাগবে পূর্ণাবয়ব মূর্তিটি তৈরি করতে।
আরও শুনুন: ব্রিটিশদের তুষ্ট করতেই ‘জনগণমন’ লিখেছিলেন Rabindranath Tagore! সত্যিটা কী?
১৯১৯ সালে বিশ্বভারতীর জন্য অর্থসংগ্রহে দক্ষিণে সফর করেন রবীন্দ্রনাথ। সেবার তৎকালীন মাদ্রাজ (বর্তমান চেন্নাই), থাঞ্জাভুর, ত্রিচি ও মাদুরাইতে ভাষণ দেন তিনি। মাদুরাইতে তিনটি বক্তৃতা দেন। সবকটি ছিল তাঁর স্বপ্নের বিশ্বভারতী সম্পর্কিতই। যার একটি ছিল ‘ভারতের ধর্মীয় চেতনা’, অন্যটি ছিল ‘ভারতের শিক্ষা’। তাঁর এই দুই বক্তৃতা বিপুল সাড়া ফেলেছিল তামিলনাড়ু সহ গোটা দক্ষিণ ভারতে। মনে রাখতে হবে, কবির ভারতের শিক্ষা ভাবনায় ব্রাত্য ছিল না মেয়েরা।
অতএব, মহিলা পড়ুয়াদের কলেজ বাংলা তথা ভারতের কবি রবীন্দ্রনাথের মূর্তি স্থাপন, এবং সেই মূর্তি বাংলার মহিলা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিয়ে যে উদ্বোধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তামিলনাড়ু সরকার, তা কিন্তু এমনি এমনি নয়। বাঙালিদের জন্যও নিঃসন্দেহে এ এক গৌরবেরই বিষয় হয়ে উঠবে, তা নিয়ে সন্দেহ নেই।