ফের সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষের ছবি দেখা গেল বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটিতে। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে উপাচার্যের বাসভবনের সামনেই তাঁর কুশপুতুল পোড়াল একদল পড়ুয়া। একটি ইফতার পার্টিতে যোগ দেওয়ার দরুন এভাবেই অপদস্থ হতে হল প্রবীণ অধ্যাপককে। শুনে নিন।
বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটির চত্বরে খোদ উপাচার্যের কুশপুতুল পোড়াল একদল পড়ুয়া। জানা গিয়েছে, একটি ইফতার পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন ভাইস চ্যান্সেলর সুধীর কুমার জৈন। তাঁর সেই কাজের বিরোধিতা করেই এমন পদক্ষেপ পড়ুয়াদের।
আরও শুনুন: উজ্জ্বল সম্প্রীতির ভারত, হিন্দুদের শোভাযাত্রায় জলের বোতল এগিয়ে দিলেন মুসলিম পড়শি
কী ঘটেছে ঠিক?
সূত্রের খবর, বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু মুসলিম শিক্ষক এবং পড়ুয়ারা মিলে একটি ইফতার পার্টির আয়োজন করেছিলেন। প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে সেখানে নিমন্ত্রণ করা হয় উপাচার্যকেও। সৌজন্যের খাতিরে সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। আর এই ঘটনার পরেই উগ্র হিন্দুত্ববাদের স্লোগান তুলে আসরে নামে একদল পড়ুয়া। উপাচার্য স্বয়ং ওই ইফতার পার্টি আয়োজন করেছিলেন বলে দাবি করে তারা। তাদের বক্তব্য, ইফতার পার্টিতে যোগ দিতে চাইলে অন্য কোনও মুসলিমপ্রধান প্রতিষ্ঠানে যোগ দিতে পারেন ওই অধ্যাপক। কিন্তু বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন কোনও ঘটনা এর আগে হয়নি বলেই দাবি করেছে তারা। এই নতুন অভ্যাস তৈরি করে উপাচার্য আদতে সবকিছুর মধ্যে রাজনীতিকে টেনে আনতে চাইছেন বলেও তোপ দেগেছে ওই পড়ুয়ারা। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ঐতিহ্যশালী প্রতিষ্ঠানে এহেন ইফতার পার্টির আয়োজন এই প্রথম নয়। বস্তুত বিগত দুই দশক ধরেই এই পরম্পরা চলে আসছে সেখানে। তবে গত দুই বছর কোভিড সংক্রমণের কারণে এই অনুষ্ঠান করা সম্ভব হয়নি।
আরও শুনুন: সাম্প্রদায়িক বিভাজনের সামনে ‘ঝুঁকেগা নেহি’, বৃদ্ধার মনোবল দেখে অবাক মহারাষ্ট্র
উগ্র হিন্দুত্ববাদী অবস্থান থেকেই উপাচার্যের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে ওই পড়ুয়ারা। আর সেই কারণেই প্রাক্তন উপাচার্যের সঙ্গে তাঁর তুলনা টেনে বলা হয়েছে, প্রাক্তন উপাচার্য জি সি ত্রিপাঠী নবরাত্রি চলাকালীন ফলাহারের বন্দোবস্ত করতেন। কিন্তু বর্তমান উপাচার্য সুধীর কুমার জৈন সেই কাজে উৎসাহ দেখাননি, উলটে ইফতার পার্টিতে যোগ দিয়ে তিনি হিন্দুত্ববিরোধী কাজ করেছেন বলে সাফ জানিয়েছে ওই পড়ুয়ারা। এর প্রতিবাদ করতে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে উপাচার্যের বাসভবনের সামনেই তাঁর কুশপুতুল পুড়িয়েছে তারা।
এই ঘটনার পরে সোশ্যাল মিডিয়াতে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসরে শিক্ষা ও শান্তির পরিবেশ নষ্ট করার কোনোরকম চেষ্টা বরদাস্ত করা হবে না বলেই সাফ ঘোষণা করেছে বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটি।