দেশজুড়ে শিরোনামে শিক্ষা দুর্নীতি। একের পর এক কেন্দ্রীয় পরীক্ষা বাতিলে সরব দেশের পড়ুয়ারা। অথচ এই আবহেও মোদি সরকারকে বিশেষ ধন্যবাদ জানাচ্ছেন পড়ুয়াদের অনেকেই। ঠিক কেন এই কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
শিক্ষা দুর্নীতির অভিযোগে তোলপাড় গোটা দেশ। একের পর এক পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস, যার দরুন গোটা পরীক্ষাটাই বাতিলের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে কেন্দ্র সরকার। এতেই রীতিমতো সমস্যায় পড়েছেন পড়ুয়ারা। দীর্ঘদিন ধরে পড়াশোনার পর পরীক্ষা বাতিল হলে কার ভালো লাগে! এই নিয়ে কেন্দ্রকে দুষতে ছাড়ছেন না বিরোধীরা। পড়ুয়ারাও অনেকেই আন্দোলনে শামিল হয়েছেন। তবে সম্প্রতি বিশেষ এক কারণে মোদি সরকারকে ধন্যবাদও জানাচ্ছেন পড়ুয়াদের একাংশ।
দুর্নীতির সঙ্গে শিক্ষা ব্যবস্থার নাম জড়ানো নতুন কিছু নয়। এর আগে বিভিন্ন রাজ্যে পরীক্ষায় কারচুপির অভিযোগ এসেছে। পরীক্ষার আগে প্রশ্ন ফাঁস হয়ে যাওয়ার ঘটনাও শোনা গিয়েছে বহুবার। তবে কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় এই ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ বেশ হইচই ফেলেছে। বিশেষ করে প্রশ্ন ফাঁসের সন্দেহে একের পর এক কেন্দ্রীয় পরীক্ষা বাতিল হওয়ায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ পড়ুয়ারা। এদিকে, শিক্ষা দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসার মাত্র কয়েকদিন আগেই তৃতীয়বার সরকার গড়েছে বিজেপি। প্রধানমন্ত্রীর কুরসিতে নরেন্দ্র মোদি। ইতিমধ্যেই নতুন মন্ত্রীসভা গড়ে বিশেষ বৈঠক সেরেছেন মোদি। সেখানে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নিজে কৃষকদের জন্য বিশেষ প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছেন। অন্যদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, সন্ত্রাসদমনে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। একইভাবে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন সেরে ফেলেছেন জিএসটি সংক্রান্ত একটি বৈঠক। যেখানে আগামী অর্থবর্ষে কোন কোন জিনিস কেন্দ্রীয় করের আওতায় থাকছে বা থাকছে না সেসব নির্দিষ্ট করা হয়েছে। আর সেই বৈঠকের সঙ্গেই দেশের পড়ুয়াদের বিশেষ সুবিধার প্রসঙ্গ জড়িয়েছে। জানা গিয়েছে, ছাত্রাবাসকে এবার জিএসটি-র আওতামুক্ত করা হচ্ছে। অর্থাৎ পিজি বা হস্টেলের খরচে যোগ হবে না জিএসটি কর। অবশ্যই তার জন্য বিশেষ শর্ত রয়েছে। তবে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে মোটের উপর খুশি দেশের পড়ুয়ারা।
এমন অনেকেই রয়েছেন যারা বাড়ি থেকে অনেকটাই দূরে কোথাও পড়াশোনার জন্য গিয়ে থাকেন। সেক্ষেত্রে পড়ার খরচের পাশাপাশি থাকার খরচও চালাতে হয়। তার ওপর যদি জিএসটি বসে, তাহলে সমস্যা তো বটেই। নিয়ম অনুযায়ী এতদিন তেমনটাই করতে হত পড়ুয়াদের। যার ফলে পড়াশোনার খরচের প্রায় সমান হয়ে যেত থাকার খরচ। সরকারের এই নতুন পদক্ষেপে এই সমস্যা মিটবে বলেই আশাবাদী পড়ুয়ারা। এর ফলে উচ্চশিক্ষার খরচ অনেকটাই কমবে। যা সাধারণ মধ্যবিত্ত ঘরের পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষায় আগ্রহ যোগাতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি যারা বিভিন্ন জায়গা থেকে ধার দেনা করে উচ্চশিক্ষা চালিয়ে যেতেন, তাঁদেরও বিশেষ উপকার হবে। তাই এই সিদ্ধান্তের জন্য মোদি সরকারকে বিশেষ ধন্যবাদ জানাচ্ছেন পড়ুয়া ও তাঁদের অভিভাবকরা। যদিও এর সঙ্গে শিক্ষা দুর্নীতির কোনও যোগ নেই। সেই আন্দোলনের সঙ্গে অনেকেই সক্রিয় ভাবে জড়িয়েছেন। তবে পিজি, হস্টেল খরচে জিএসটি মুক্তি অনেকের সুবিধা করে দিয়েছে বলেই জানাচ্ছেন দেশের পড়ুয়াদের একাংশ।