সবজি কিনুন বা মাছ, ফুল হোক কি মিষ্টি, একটি জিনিস কিন্তু বদলায় না। তা হল আপনার হাতে ধরা প্লাস্টিক ব্যাগ। কেবল বাজারই নয়, বৃষ্টির সময়ে নিজের মাথাটাও ওই প্লাস্টিক ব্যাগের গহ্বরেই ঢুকিয়ে দেন অনেকে। কিন্তু এবার সে সুখের দিন ফুরোল। সৌজন্যে কেন্দ্রের নিষেধাজ্ঞা। কী হয়েছে ঠিক? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
প্লাস্টিক। সব কাজের কাজি বোধহয় বলা যায় একেই। কাপ থেকে কাঠি, ব্যাগ থেকে ব্যানার, সে সর্বত্রই বিরাজমান। আর ঠিক ততটাই সে হাজিরা দেয় দূষণ ছড়ানোর ক্ষেত্রেও। সেই কারণে বারবারই অভিযোগের আঙুল উঠেছে দৈনন্দিন জীবনের নিত্য প্রয়োজনীয় এই বস্তুটির প্রতি। আর তার জেরে এবার প্লাস্টিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করল কেন্দ্র।
আরও শুনুন: মমতাজের সমাধি ছিলই না আগ্রায়, তবে কেন তাজমহল গড়েছিলেন শাহজাহান?
বছরের গোড়াতেই প্লাস্টিক প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলিকে সতর্ক করেছিল কেন্দ্রের পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড। পাশাপাশি আগাম বার্তা দিয়েছিল দোকানদার, ভেন্ডার এবং আমজনতার উদ্দেশে। যে প্লাস্টিকগুলি পুনর্নবীকরণ করা যায় না, অর্থাৎ মাত্র একবার ব্যবহার করেই ফেলে দিতে হয়, সেই ধরনের প্লাস্টিক যে দেশে নিষিদ্ধ হতে চলেছে, সেই কথাই তখন ঘোষণা করেছিল বোর্ড। আর এবার স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা জারি করে দিল কেন্দ্রের দূষণ নিয়ন্ত্রক দপ্তর। জানা গিয়েছে, চলতি বছরের ১ জুলাই থেকেই কার্যকর হতে চলেছে সেই আদেশ। তবে তার আগেই, জুন মাসের পয়লা তারিখ থেকেই এই নির্দেশ মেনে চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজধানী দিল্লি। সেখানকার সরকারি ভবনে প্লাস্টিক দ্রব্য বর্জনের জন্য কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও শুনুন: তুঙ্গে মাতৃদুগ্ধের চাহিদা, প্রায় ১১৮ লিটার স্তনদুগ্ধ বিক্রি করে নজির মহিলার
নিষিদ্ধ প্লাস্টিক দ্রব্যের তালিকায় কী কী জিনিস অন্তর্ভুক্ত করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা? জানা গিয়েছে, তালিকায় রয়েছে প্লাস্টিকের তৈরি পতাকা, ব্যানার, লজেন্স এবং আইসক্রিমে ব্যবহৃত হওয়া প্লাস্টিকের কাঠি, প্লাস্টিকের কাপ, গ্লাস এবং অন্যান্য বাসন, কানখুশকি, ইউজ অ্যান্ড থ্রো পেন, পাতলা প্লাস্টিকের বোতল, এমনই বিভিন্ন জিনিস। যে জিনিসগুলি প্রায় রোজই বিপুল পরিমাণে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু যেহেতু এইসব জিনিস তৈরি করতে ব্যবহৃত হয় অত্যন্ত পাতলা প্লাস্টিক, যার ঘনত্ব ১০০ মাইক্রনের চেয়ে কম, তা ফের ব্যবহার করা সম্ভব হয় না। তার ফলে এইসব ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক বর্জ্যের পরিমাণ ক্রমশ বাড়তেই থাকে। তা প্রাকৃতিক উপায়ে মাটিতেও মেশে না। সব মিলিয়ে বাড়তে থাকে পরিবেশ দূষণের হার। ক্রমবর্ধমান দূষণের কারণে বিশ্ব উষ্ণায়ন যে কী ভয়াবহ মাত্রায় পৌঁছেছে, তা আজ আর কারও অজানা নেই। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে তাই দূষণ রোধে বড় ভূমিকা নিল কেন্দ্র।