প্রেমের গল্প বদলে গেল সাম্প্রদায়িক হুমকিতে। অনলাইনে গেম খেলতে গিয়ে প্রেম, আর সেই টানেই ভারতে এসে বিপাকে পড়েছিলেন পাক তরুণী। তবে তারপরেও নিজের দেশে ফিরতে চাননি তিনি। কিন্তু এবার সেই তরুণীকেই দেশে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে হুমকি এল বালোচ থেকে। না হলে এই ঘটনার প্রতিশোধ নেওয়া হবে সেখানকার হিন্দুদের উপর, দেওয়া হল হুঁশিয়ারিও। কী ঘটেছে ঠিক? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
প্রেমের টানেই ভিনদেশে ছুটে এসেছিলেন সীমা হায়দার। আইনকানুনের তোয়াক্কাও করেননি। এদিকে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে যা সম্পর্ক, তাতে এমন ঘটনা ঘটলে ফল যে ভাল হবে না তা বলাই বাহুল্য। হয়ওনি। ভারতে অবৈধ প্রবেশের জেরে জেলেও যেতে হয় ওই পাক তরুণীকে। ঘটনায় খোদ মোদির কাছে আরজি জানিয়েছিলেন তরুণীর স্বামী, যাতে তাঁর স্ত্রীকে পাকিস্তানে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এবার আর আরজি নয়, ওই তরুণীর ভারতে আসার জেরে সরাসরি হুমকি এল বালোচ থেকে। যেখানে বলা হয়েছে, ওই তরুণীকে পাকিস্তানে ফেরত পাঠানো না হলে সেখানে রক্তগঙ্গা বইবে। ওই অঞ্চলে বসবাসকারী হিন্দুদের খুন ধর্ষণের হুমকিও দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে, এতদিন যা ছিল নিছকই প্রেমের কাহিনি, এবার সেখানেও মাথা চাড়া দিয়ে উঠল সাম্প্রদায়িক উসকানি।
আরও শুনুন: স্ত্রীর হাতে ‘তিন তালাক’ আইন, বান্ধবীর অস্ত্র ‘লাভ জিহাদ’! ফাঁপরে পড়ে হিন্দু হতে চান মুসলিম যুবক
জানা গিয়েছে, অনলাইনে গেম খেলার সূত্রে এক ভারতীয় যুবকের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল সীমার। বছর তিরিশ বয়সের এই তরুণী বিবাহিতা, চার সন্তানও রয়েছে তাঁর। কিন্তু প্রেম কি আর অত কিছু মানে! প্রেমিকের কাছে আসার জন্য কোনও ঝুঁকি নিতেই পিছপা হননি তরুণী। এমনিতে কোনও সাধারণ মানুষের পক্ষে ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে যাতায়াত করা প্রায় অসম্ভব। কিন্তু পাসপোর্ট ভিসার পরোয়া না করেই ভারতে পালিয়ে আসেন সীমা। সঙ্গে নিয়ে আসেন নিজের চার সন্তানকেও। নয়ডায় তাঁর অনলাইন প্রেমিকের কাছে পৌঁছেও যান সীমা। কিন্তু বেআইনিভাবে অনুপ্রবেশের জেরে ওই পাক তরুণীকে আটক করে পুলিশ। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দৌলতে এ কথা জেনে আগেই মোদি সরকারের কাছে স্ত্রীকে ফেরানোর আরজি জানিয়েছিলেন তাঁর স্বামী। এদিকে সম্প্রতি জামিন পেয়েছেন সীমা। কিন্তু এত কিছুর পরেও প্রেমের পথ থেকে সরতে নারাজ তিনি। বরং হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়ে এ দেশেই থেকে যেতে চেয়েছেন ওই পাক তরুণী।
আরও শুনুন: স্ত্রী ভালবাসেন অন্য পুরুষকে, নিজে দাঁড়িয়ে দুজনের বিয়ে দিলেন স্বামী
কিন্তু ওই তরুণী কী চান, সে কথায় গুরুত্ব দিতে নারাজ কেউই। পরিবার ও রাষ্ট্রের চাপের পর এবার এল সাম্প্রদায়িক হুমকিও। জানা গিয়েছে, বালোচ দস্যুদের তরফেই ওই হুমকি দেওয়া হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সেই হুমকি ভিডিও। যেখানে দেখা গিয়েছে, ওই তরুণী যে অঞ্চলের বাসিন্দা, সেখানকার হিন্দুদের রাইফেল তাক করে ভয় দেখাচ্ছে চারজন মুখোশধারী। আর তাদের মাঝখানে বসেই এক ব্যক্তির হুঁশিয়ারি, ভারত যদি সীমা হায়দারকে পাকিস্তানে ফিরিয়ে না দেয়, তাহলে এই এলাকার হিন্দুদের ধর্ষণ করে মেরে ফেলা হবে। ঘটনা এভাবে নয়া মোড় নিতে উদ্বিগ্ন সকলেই। একইসঙ্গে ওই তরুণীর নিরাপত্তা নিয়েও চিন্তা করছেন নেটিজেনদের একাংশ।