দিনে ১৬ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে কাজ। তবু এতটুকু ক্লান্তি নেই। হবেই বা কি করে! তাঁর কাছে এই কাজ করতে পারাটাই তো পরম সৌভাগ্যের। কারণ তিনি যে বহু প্রতিক্ষিত রামলালার মূর্তি তৈরির দায়িত্ব পেয়েছেন। তাই ভগবানের এই কাজে নিজের সবটুকু দিতেও রাজি যোগীরাজ্যের এই শিল্পী। কার কথা বলছি? আসুন শুনে নিই।
একদিকে দুর্গাপুজো, অন্যদিকে নবরাত্রি। উৎসবের আনন্দে মজে গোটা দেশ। কিন্তু সেখানে সামিল হওয়ার সুযোগ নেই সকলের। ইচ্ছা থাকলেও পুজোয় তারা ছুটি পান না। তালিকায় রয়েছেন চিকিৎসক, সাংবাদিক, পুলিশের মতো আরও অনেক জরুরী পরিষেবার মতো কাজের সঙ্গে জড়িত মানুষজন। তবে এবছর সেই তালিকায় রয়েছেন কিছু শিল্পীও। দিনরাত এক করে যাঁরা তৈরি করছেন রামলালার মন্দির। আর তাঁদের মধ্যে, এই মুহূর্তে সবথেকে ব্যস্ত শিল্পী ভিপিন ভাদউরিয়া (Vipin Bhadauria)।
ঠিক ধরেছেন, এই শিল্পীর হাতেই রয়েছে রামমূর্তি তৈরির গুরুদায়িত্ব। তাই দম ফেলার সময় নেই তাঁর। এমন মূর্তি গড়তে হবে, যা সবাইকে তাক লাগিয়ে দেবে। এই পণ নিয়েই রামলালার মূর্তি গড়ার কাজ আরম্ভ করেন ভিপিন। যার জন্য কয়েকমাস আগে নেপাল থেকে আনা হয় বিশেষ কৃষ্ণশিলা। যা যত্ন নিয়ে খোদাই করে শ্রীরামের মূর্তি তৈরি করছেন শিল্পী। তবে এই বিশেষ কাজের জন্য তাঁকেই বেছে নেওয়ার যথষ্ট কারণ রয়েছে। দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে মূর্তি গড়ার কাজ করছেন ভিপিন। এর মধ্যে দেশের বিভিন্ন মন্দিরে তাঁর তৈরি মূর্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এর জন্য সম্মানিতও হয়েছেন তিনি একাধিকবার। স্রেফ ভারত নয়, বিদেশেও তাঁর কদর যথষ্টই। তাঁর গড়া মূর্তি প্রায়শই স্থান পায় বিদেশি মিউজিয়ামে। তবে শুধু মাত্র কর্মজগতের স্বীকৃতিই নয়, ছাত্র হিসেবেও রীতিমতো সুনাম ছিল ভিপিনের। মূর্তি তৈরি নিয়ে ফাইন আর্টস কলেজে পড়াশোনা করেছেন দীর্ঘদিন। সেখান থেকেও ঝুলিতে ভরেছেন গোল্ড মেডেল। তবে শিল্পীর দাবি, এতদিনে তিনি জীবনের সবথেকে সেরা কাজের দায়িত্ব পেয়েছেন। তাই পরম যত্ন নিয়ে গড়ছেন বহু প্রতিক্ষিত রাম মূর্তি।
মনে করা হচ্ছে, আগামী বছরের শুরুতেই উদ্বোধন হবে অযোধ্যার রামমন্দির। প্রথমেই গোটা মন্দির সাধারণের জন্য খোলা হচ্ছে না। কাজ শেষ হতে আরও কয়েক বছর সময় লাগবে। তবে মন্দিরের মতোই গুরুত্বপূর্ণ, গর্ভগৃহে থাকা রামলালার মূর্তিটি। তাই সেখানে এতটুকু খামতি রাখতে চান না কেউই।