যারা ধর্মের দিক দিয়ে হিন্দু, কেবল তাদের দলে টানলেই কাজ শেষ নয়। এবার পৌঁছে যেতে হবে অন্য ধর্মের মানুষের কাছেও। লখনউয়ের সভা থেকে স্বয়ংসেবকদের এমনই নির্দেশ দিলেন সংঘপ্রধান মোহন ভাগবত। ঠিক কী বলেছেন তিনি? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
শুধু হিন্দু নয়, অন্য ধর্মের মানুষের কাছেও সংঘের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে হবে। আর তার জন্য মসজিদ কিংবা চার্চেও পৌঁছে যেতে হবে স্বয়ংসেবকদের। এই মর্মেই সংঘের কর্মীদের সাফ নির্দেশ দিলেন খোদ সংঘপ্রধান মোহন ভাগবত।
আরও শুনুন: ইসলাম ধর্মাবলম্বী সাংসদকে ধর্ম তুলে কটূক্তি, বিতর্কে জড়িয়েছেন আগেও… কে এই রমেশ বিধুরি?
সাধারণভাবে হিন্দুত্ববাদী বলেই পরিচিত আর.এস.এস। হিন্দুদের পক্ষে সুর চড়ানোর পাশাপাশি মাঝে মাঝেই ভিনধর্মের বিরুদ্ধে বিতর্কিত মন্তব্য করে বসেন গেরুয়া শিবিরের একাধিক নেতাই। এমনকি হিন্দুরাষ্ট্রের দাবিতেও প্রথম থেকেই সরব সংঘ। যারা ধর্মের দিক দিয়ে হিন্দু, ভারত যাদের পিতৃভূমি, কেবল তারাই এ দেশে থাকতে পারবে বলে একাধিকবার দাবি করেছে তারা। কিন্তু এবার খোদ সংঘপ্রধানের মুখেই যেন শোনা গেল খানিক অন্য সুর। লখনউয়ের তিন দিনব্যাপী সমাবেশ থেকে মোহন ভাগবত স্পষ্টই জানালেন, কেবল হিন্দুদের দলে টানলেই কাজ শেষ হবে না। আস্থা অর্জন করতে হবে ভিনধর্মের মানুষদেরও, তাদেরকেও সংঘের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। মুসলিম, খ্রিস্টান এবং শিখদের কাছেও পৌঁছতে হবে সংঘকে। আর সেই কারণেই তাঁর সাফ নির্দেশ, মসজিদ, চার্চ এবং গুরুদ্বারে যেতে হবে সংঘের কর্মীদের। সেখানে গিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলতে হবে, যোগাযোগ বাড়াতে হবে, আর এইভাবেই অন্য ধর্মের মানুষের মধ্যেও সংঘের মতাদর্শকে ছড়িয়ে দিতে হবে বলেই জানিয়েছেন মোহন ভাগবত। শুধু তাই নয়, দলিতদের মধ্যেও সংঘকে বেশি করে পৌঁছে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সংঘপ্রধান। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের প্রকল্পগুলির সুবিধা পাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে হবে তাদের, আর সেইভাবেই আস্থা অর্জন করতে হবে দলিত সম্প্রদায়ের।
আরও শুনুন: মুসলিম-বিদ্বেষের কারণে ঠকছেন হিন্দুরাই! কেন এমন দাবি মৌলানার?
এমনিতে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের একটি শাখা রয়েইছে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের জন্য। রাষ্ট্রীয় মুসলিম মঞ্চ নামের এই শাখাটি মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘের ভাবধারা ছড়ানোর কাজ করে থাকে। কিন্তু অন্য ধর্মের জন্য এমন পৃথক শাখা নেই সংঘের। সেই ঘাটতি মেটাতেই এবার তৎপর আর.এস.এস। সামনেই চব্বিশের লোকসভা নির্বাচন, যেখানে ফের গদি ধরে রাখার জন্য সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপাবে গেরুয়া শিবির। এদিকে ২০২৫ সালেই সংঘের শতবর্ষ উদযাপন শুরু হবে। তার আগে দেশজুড়ে আর.এস.এস-এর একাধিপত্য কায়েম করার লক্ষ্য নিয়েই এবার পথে নামতে চলেছে সংঘ। যোগীরাজ্যে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে আলোচনার পরেই সেই লক্ষ্যে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলেন সংঘপ্রধান মোহন ভাগবত।