সেলাই মেশিন উপহার দিয়েছেন রাহুল গান্ধী। তাতেই বেজায় খুশি যোগীরাজ্যের চর্মকার। কংগ্রেস নেতাকে এর জন্য বিশেষ ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। রাহুলের উদ্দেশে ঠিক কী বলেছেন যোগীরাজ্যের চর্মকার? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
জননায়ক। ঠিক এই বিশেষণ দিয়েই নেটদুনিয়ায় রাহুল গান্ধীর কয়েকটি ছবি ছড়িয়েছে। যদিও সেখানে একা রাহুল নেই। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন এক চমর্কার। দুজনের হাতেই জুতো। দেখে মনে হবে, কংগ্রেস নেতাকে জুতো সেলাই শেখাচ্ছেন ওই চর্মকার। বাস্তবে ঘটেছে ঠিক তেমনটাই। রাহুলকে জুতো সেলাই শিখিয়েই চর্চায় এসেছেন যোগীরাজ্যের ওই চর্মকার। আর এবার সেই চর্মকারকে নতুন সেলাই মেশিন উপহার দিলেন রাহুল গান্ধী।
লোকসভায় জোড়া আসনে জিতে সংসদে ফিরেই চোখা বক্তৃতায় ঝড় তুলেছেন রাহুল গান্ধী। মণিপুর থেকে মানবধর্ম, একাধিক ইস্যুতে বিঁধেছেন শাসক দল বিজেপিকে। অথচ একসময় তাঁকে স্রেফ ‘পাপ্পু’ বলে স্রেফ উড়িয়ে দিত বিজেপি। অথচ এখন তাঁকে নিয়ে কথা বলছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী মোদি। নেপথ্যে অবশ্য বেশকিছু কারণ রয়েছে। যার মধ্যে রাহুলের জনসংযোগ অন্যতম। ভিভিআইপির চেনা গণ্ডি ভেঙে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে যাওয়ায় রাহুলের জুড়ি মেলা ভার। কংগ্রেস সাংসদের এই আচরণ যে কোনও রাজনৈতিক নেতার কাছে যথেষ্ট ঈর্ষণীয়। সম্প্রতি সেই প্রমাণ মিলেছে যোগীরাজ্যে। কিছুদিন আগেই এক মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে যাচ্ছিলেন রাহুল গান্ধী। সাংসদের গাড়ি নিজের দোকানের পাশ থেকে যাবে জানতে পেরে আগে থেকেই রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন পেশায় চর্মকার উত্তরপ্রদেশের সুলতানপুরের বাসিন্দা রাম চৈত। রাহুলের গাড়ি আসছে দেখে রাস্তায় এসে হাত দেখিয়ে সেই গাড়ি দাঁড় করান রাম। সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি থেকে নেমে আসেন খোদ রাহুল গান্ধী। কথা বলেন রাম চৈতের সঙ্গে। মন দিয়ে তাঁর অভাব অনটনের কথা শোনেন। জুতো সেলাইয়ের কাজেও হাত লাগান। রাহুলের মতো একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব পাশে বসে জুতো সেলাই করছেন, এ দৃশ্য যেন বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না ওই চর্মকার। তাঁর চোখে মুখে ফুটে উঠছিল বিস্ময় আর খুশির ছাপ। শুধু একসঙ্গে গল্প করা নয়, রাহুল গান্ধী তাঁকে সাহা্য্যের আশ্বাস দিয়েছিলেন বলে জানান রাম চৈত। ঘটনার ছবি সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয় কংগ্রেসের তরফে। সেখানেই রাহুলকে জননায়ক আখ্যা দেয় হাত শিবির।
ঘটনার দিন দুই কাটতে না কাটতেই নিজের কথা রাখলেন বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। রাম চৈতের জন্য নতুন একটি সেলাই মেশিন পাঠিয়েছেন তিনি। আর তাতেই রীতিমতো খুশি যোগীরাজ্যের চর্মকার। রাহুলকে বিশেষ ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, এই মেশিন তাঁর জীবনে অনেক পরিবর্তন আনবে। তাঁর কথায়, এতদিন হাতে সেলাই করার জন্য কোনওক্রমে ২-৩ জোড়া জুতো সেলাই হতো। এবার সেই সংখ্যাটা লাফিয়ে বাড়বে। একদিনে ৮-৯ জোড়া জুতো সেলাই করতে পারবেন বলেই মনে করছেন রাম। এমনটা করতে পারলে তাঁর আর্থিক সমস্যাও অনেকটাই মিটবে। নতুন মেশিনের সামনে হাসিমুখে বসে থাকা রামের ছবিও নেটদুনিয়ায় ইতিমধ্যেই ভাইরাল। সেখানে প্রায় সকলেই রাহুলের প্রশংসায় ভাসিয়েছেন। কীভাবে জনসংযোগ করতে হয় তা রাহুলের থেকে শেখা উচিত, এই মন্তব্যও করেছেন নেটদুনিয়ার একাংশ। সবমিলিয়ে এই ঘটনার জেরে নেটদুনিয়ার রীতিমতো চর্চায় রয়েছেন রাহুল গান্ধী এবং যোগীরাজ্যের চর্মকার।