লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিচ্ছে আমজনতা। নির্বাচনের আবহে এই ছবি খুব চেনা। কিন্তু নেতাদের লাইনে দাঁড়াতে দেখেছেন কখনও? তাও আবার ভোটের আবহে! কোথায় দেখা গেল এমন ছবি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ভোট বড় বালাই! নির্বাচন এলে কোটিপতি নেতাকেও রাস্তায় খালি পায়ে হাঁটতে দেখা যায়। বাড়িতে যাঁর পোলাও কালিয়া ছাড়া চলে না, সেই তিনিও মাটিতে বসে ভাত-ডাল খান। যে ভাবেই হোক বোঝাতে হবে তাঁরা আলাদা কেউ নন। জনতার মধ্যে থেকে উঠে আসা প্রতিনিধি মাত্র। যিনি জেতার পরে জনতার হয়েই কথা বলবেন। সমাধান করবেন সামাজিক সমস্যা। তাই ভোটটা তাঁকেই যেন দেওয়া হয়, এমন আর্জি নিয়ে দুয়ারে হাজির হন প্রার্থীরা।
আরও শুনুন: টাটা বা আম্বানি নন, বিশ্বের সর্বকালের সেরা ধনী গুজরাটের এই ব্যবসায়ী
অবশ্য, এ কোনও নতুন ব্যাপার নয়। ভোট এলে নেতারা এমনটা করবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তাই বলে বাড়ির বাইরে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন নেতারা! মহারাষ্ট্রের কোলাপুরে গেলে এমন দৃশ্য দেখতেই পারেন। স্রেফ যেতে হবে কোলাপুরের শিরোলি অঞ্চলের এক গ্রামে। সেখানেই থাকেন মালি পরিবারের সদস্যরা। এখনও একান্নবর্তী পরিবারের ধারণায় বিশ্বাসী। এক ছাদের তলাতেই থাকেন সকলে। আর সেই সংখ্যটা প্রায় ৫০। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। কোলাপুরের এই পরিবারের সদস্য সংখ্যাই এতজন। এমনকি ওই গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দাই মালী পরিবারের অংশ। সবমিলিয়ে এক পরিবারের অন্তত ১০০ জন সদস্য মিলেমিশে থাকেন। জীবিকা বলতে চাষবাস। তার জন্য জমিও রয়েছে প্রায় ৮২ একর। সকলের একসঙ্গে মাঠে ঘাটে কাজ করে দিন কাটান। সেখানে যা ফসল হয় তাই দিয়েই তাঁদের চলে যায়। ভোটের আবহে এই বাড়ির সামনেই নেতাদের লাইন পড়ে।
আরও শুনুন: জোট বিনে গীত নাই! স্বাধীনতার আগে থেকেই ভোটে শুরু জোট-যাত্রা
কারণটা আলাদা করে না বললেও চলে। এতবড় পরিবারে ভোটারের সংখ্যাও যে বেশি হবে তা বলাই বাহুল্য। চলতি নির্বাচনে মালি পরিবারের মোট ২২ সদস্য ভোট দেবেন। এছাড়া গ্রামের মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন আরও ৫৯ জন আত্মীয়। এতজন ভোটার এক পরিবার থেকে এলে সেখানে নেতাদের ভিড় তো চোখে পড়বেই। তাই নির্বাচন এলেই কোলাপুরের মালি বাড়ির সামনে নেতাদের লাইন পড়ে। কোনও একটা দল নয়, প্রায় সমস্ত দলের নেতারাই ভিড় জমান ওই বাড়ির সামনে। একটাই দাবি, ভোট যেন তাঁকে দেওয়া হয়। শুধু নেতারা নন, পার্টির সাধারণ কর্মীরাও এই চত্বরেই থাকেন। মালি পরিবারের কারও কোনও প্রয়োজন হলেই ছুটে যান সবার আগে। যে দলের কর্মী সাহায্য করলেন, তাঁরই ধারণা হয় এতগুলো ভোট তাঁদের দিকেই যাবে। সবমিলিয়ে নির্বাচনের আবহে মালি পরিবারের কদর থাকে বেশ ভালোরকমের। এমনি সময়ও তা বদলায় না। এতজন সদস্য থাকার দরুণ এলাকায় ওই পরিবারের আলাদা পরিচিতি রয়েছে। সেইসঙ্গে আজকের দিনে দাঁড়িয়েও ওই পরিবারের সদ্যসরা কীভাবে এক ছাদের তলায় রয়েছেন,তা দেখে অবাক হন অনেকেই।