বিধর্মীদের আয়ের পথ বন্ধ করে দেওয়া হোক। এই মর্মেই এবার মুসলিমদের বিরুদ্ধে বয়কটের ডাক দিল ছত্তিশগড়ের গেরুয়া শিবির। শুধু তাই নয়, এই অর্থনৈতিক বয়কট সফল করার লক্ষ্যে রীতিমতো শপথ নিয়েছেন বিজেপি এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতারা। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
ফের বয়কটের ধুয়ো তুলে সরব হিন্দুত্ববাদীরা। ধর্মীয় মেলায় ব্যবসা করতে পারবেন না মুসলিম দোকানদারেরা, এই দাবিতে এর আগেও সরব হয়েছিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। এবার ফের একইভাবে বিধর্মীদের উপর অর্থনৈতিক বয়কট চাপানোর জিগির তুলল গেরুয়া শিবির। এই মর্মে সম্প্রতি শপথ নিয়েছেন ছত্তিশগড়ের বিজেপি এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতারা।
কী ঘটেছে ঠিক?
আরও শুনুন: ভিড় ট্রেনে নমাজ পড়ে ইফতার, মুসলিম সহযাত্রীদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়ালেন হিন্দুরা
আসলে সাম্প্রদায়িক হিংসার জেরে দিনকয়েক ধরে অশান্তি ছড়িয়েছে ছত্তিশগড়ে। দুপুরে দুই স্কুলপড়ুয়ার বচসা এবং মারামারি থেকে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল বেমেতরা এলাকায়। সেখান থেকে গোষ্ঠীহিংসার ঘটনায় একাধিক মৃত্যু পর্যন্ত ঘটে গিয়েছে। এর প্রতিবাদে জগদলপুরে জমায়েত করে দক্ষিণপন্থী শিবির। এক ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, সেখানে উপস্থিত ছিলেন বস্তারের প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ দীনেশ কাশ্যপ, রাজপরিবারের কমল চন্দ্র ভঞ্জদেও, জেলা সভাপতি রূপ সিং মাণ্ডবী-সহ প্রায় শ-খানেক সদস্য। আর সেখানেই ভিনধর্মীদের উপর সমস্ত ঘটনার দায় চাপানোর পাশাপাশি অন্য ধর্মের মানুষদের উৎখাতের ডাক দেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা। শুধু মুসলিম নয়, তাঁদের নিশানায় এবার খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরাও। আর সেই কারণেই ভিনধর্মী মানুষদের আয়ের পথ বন্ধ করে দিতে উঠেপড়ে লেগেছেন এই নেতারা। তাঁদের সাফ দাবি, অন্য ধর্মের কেউ যাতে এই এলাকায় ব্যবসা করতে না পারেন। হিন্দু দোকানদারদের দোকানের সামনে নিজের ধর্মপরিচয় লিখে টাঙিয়ে রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। ভিনধর্মী মানুষদের আয়ের পথ বন্ধ করার লক্ষ্যে রীতিমতো শপথ নিয়েছে এই জমায়েত। তবে এই ঘটনা থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় দল।
আরও শুনুন: সবার উপর মানুষ সত্য! ঈশ্বরের নামে কখনও শপথ নেননি এই মন্ত্রী
এই প্রথমবার নয়, এর আগেও একাধিকবার ধর্মীয় মেলার মুসলিম ব্যবসায়ীদের প্রবেশ করার ইস্যুতে কট্টর মনোভাব প্রকাশ করেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। চলতি বছরেই একাধিকবার বিজেপিশাসিত কর্ণাটকে তারা সুর চড়িয়েছে, যাতে ধর্মীয় উৎসবে ব্যবসার সূত্রেও মুসলিমদের প্রবেশ করতে দেওয়া না হয়। আর এবার ছত্তিশগড়েও ঘটল একই কাণ্ড। ঘটনার নিন্দায় সরব হয়েছেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল। সাম্প্রদায়িক অশান্তিকে হাতিয়ার করে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিদ্বেষ ছড়াতে চাইছে বিজেপি, এই মর্মে বিজেপি শিবিরকে তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী।