অনলাইনে গেম খেলতে গিয়ে প্রেম। সেই টানেই পাকিস্তানের সংসার ছেড়ে ভারতে পালিয়ে এসেছিলেন তরুণী। সঙ্গে এনেছিলেন চার সন্তানকেও। তবে এখানে এসেও বেজায় বিপাকে পড়তে হয় তাদের। যেতে হয় জেলেও। স্ত্রী ও সন্তানদের এই অবস্থা জেনে রীতিমতো চিন্তায় তাঁর পাকিস্তানী স্বামী। সরাসরি মোদি সরকারের কাছে নিজের পরিবারকে ফিরিয়ে দেওয়ার কাতর আর্তি জানিয়েছেন ওই ব্যক্তি। ঠিক কী বলেছেন? আসুন শুনে নিই।
প্রেমের টানে মানুষ কত কিছুই না করে! তাই ভিনদেশে হলেও, প্রেমিকের কাছে ছুটে যাওয়ার আগে এতটুকু বিচলিত হননি এই পাকিস্তানী তরুণী। সন্তানদের যাতে অসুবিধা না হয় তাই তাদের নিয়েই ভারতে পালিয়ে আসেন তিনি। কিন্তু এলেই তো হল না! দেশের আইন অমান্য হলে শাস্তি তো কপালে জুটবেই। এক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। অবৈধ প্রবেশের জেরে তাদের ঠাঁই হয় জেলে। তবে স্ত্রী আর সন্তানদের এমন অবস্থা দেখে রীতিমতো উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন ওই মহিলার স্বামী।
আরও শুনুন: অগ্নিমূল্য বাজারে জমি থেকে চুরি দেড় লক্ষ টাকার টম্যাটো, মাথায় হাত কৃষকের
ঘটনার সূত্রপাত বছর চারেক আগে। অনলাইনে গেম খেলার সূত্রে এক ভারতীয় যুবকের সঙ্গে আলাপ হয় পাকিস্তানের সীমা হায়দার। বছর ৩০-র এই মহিলা ৪ সন্তানের মা। পাকিস্তানে তাঁর ভরা সংসার। কিন্তু এই কবছরে ওই ভারতীয় যুবকের সঙ্গে তাঁর বেশ গভীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দুজনেই ঠিক করেন এবার দেখা করতেই হবে। কিন্তু বিদেশে পাড়ি দেওয়া তো আর সহজ ব্যাপার নয়। তার ওপর যদি ভারত-পাকিস্তানে আসা যাওয়ার ব্যাপার হয়, তাহলে তো কথাই নেই। হাজারও প্রশ্নের জবাবদিহির পর দুই দেশে আসা যাওয়ার সরকারি অনুমতি পাওয়া যায়। কিন্তু সীমাদেবী সেসবের ধার ধারেননি। নিয়মের তোয়াক্কা না করেই তিনি পালিয়ে আসেন ভারতে। চার সন্তানকেও নিজের সঙ্গেই নিয়ে আসেন। সকলে মিলে হাজির হন নয়ডায় তাঁর অনলাইন প্রেমিকের বাড়িতে। তবে বেআইনি ভাবে চার সন্তানকে নিয়ে গ্রেটার নয়ডায় থাকার অভিযোগে ওই পাক তরুণীকে আটক করে পুলিশ। তাঁর চার সন্তান এবং প্রেমিককেও আটক করা হয়।
আরও শুনুন: স্ত্রী ভালবাসেন অন্য পুরুষকে, নিজে দাঁড়িয়ে দুজনের বিয়ে দিলেন স্বামী
প্রথমে স্ত্রী কোথায় গিয়েছেন এ ব্যাপারে কিছুই জানতেন না তাঁর স্বামী গুলাম হায়দার। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দৌলতে ঘটনার খবর তাঁর কাছে পৌঁছায়। সব শুনে বেজায় ভয় পেয়ে যান তিনি। একইসঙ্গে স্ত্রী ও সন্তানদের জন্য যথেষ্ট উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। কিন্তু ভারতে এসে আইনের নিয়ম মেনে স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সামর্থ্য তাঁর নেই। তাই অনলাইনেই মোদি সরকারের কাছে কাতর আর্তি জানিয়েছেন তিনি। স্ত্রী সীমা ও সন্তানদের অবিলম্বে পাকিস্তানে ফেরানোর ব্যবস্থা করুক মোদি সরকার, এমনটাই কাতর কন্ঠ্যে জানিয়েছেন গুলাম। সেইসঙ্গে দেশের সংবাদমাধ্যমগুলিকেও তাঁর এই বার্তা সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। গুলামের কথায়, তিনি যথেষ্ট গরীব। সংসার চালানোর জন্য দিনমজুরের কাজ করতে হয় তাঁকে। তাই তাঁর পক্ষে অনুরোধ করা ছাড়া আর কিছু করার ক্ষমতা নেই। যদিও বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। নয়ডায় থাকা ওই প্রেমিক যুবকের পরিবারের কিছু সদস্যকেও আটক করা হচ্ছে। পাকিস্তান থেকেই গুলাম অভিযোগ তুলেছেন, তাঁর স্ত্রীকে ফাঁসানো হয়েছে বলে। দীর্ঘদিন ধরে গেম খেলার অছিলায় তাঁর কান ভাঙানো হয়েছে বলেই দাবি জানিয়েছেন তিনি। সেই অভিযোগ আদৌ সত্যি কি না, তা খতিয়ে দেখছেন পুলিশ কর্তারা।