ধর্মীয় নয়, স্রেফ রাজনৈতিক। ফতোয়া সম্পর্কে এমনই মত প্রকাশ করে বিতর্ক উসকে দিলেন কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান। ঠিক কী বলেছেন তিনি? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
যতই ধর্মীয় ইস্যু টেনে ফতোয়া জারি করা হোক না কেন, তার সঙ্গে আদতে ধর্মের কোনও যোগ নেই। কারণ কোনও না কোনও রাজনৈতিক কারণেই ফতোয়া জারি করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ তা আদ্যোপান্ত রাজনৈতিক, কোনও মোটেই ধর্মীয় নয়। এমনটাই মত কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান-এর। ফতোয়াকে রাজনৈতিক হাতিয়ার বলেও চিহ্নিত করেছেন তিনি।
ঠিক কী বলেছেন আরিফ মহম্মদ?
আরও শুনুন: টিভি-ফ্যান সবই চলে, অথচ আসে না বিদ্যুতের বিল! নয়া দিশা দেখাচ্ছেন পদ্মশ্রী জনক
সম্প্রতি আর.এস.এস-এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পাঞ্চজন্য পাবলিকেশনের আয়োজিত একটি সভায় যোগ দিয়েছিলেন কেরলের রাজ্যপাল। আর সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই কথা বলেন তিনি। তাঁর সাফ কথা, কোরানে অন্তত ২০০টি জায়গায় বলা রয়েছে যে, কোনও বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করার অধিকার এক এবং একমাত্র ঈশ্বরের। সোজা কথায়, একমাত্র ঈশ্বরই ঠিক করে দিতে পারেন যে কী ঠিক আর কোনটা ভুল। মানুষের মৃত্যুর পর তাঁর সঙ্গে যখন দেখা হবে, তখনই সে নিজের পাপ পুণ্যের কথা জানতে পারবে, তার আগে নয়। সুতরাং কথায় কথায় যেভাবে কোনও ঘটনাকে অন্যায় বা ধর্মবিরোধী বলে দাগিয়ে দেওয়া হয়, তা করার অধিকার কোনও ব্যক্তি বা কোনও সংগঠন, এমনকি কোনও ধর্মগুরু, এদের কারোরই নেই। এই বক্তব্যে ফতোয়া জারি করার প্রবণতাটিকেই নাকচ করে দিয়েছেন আরিফ মহম্মদ খান।
আরও শুনুন: ভিসার জন্য যৌনতার প্রস্তাব পাক দূতাবাসে, ভারতীয় অধ্যাপিকার অভিযোগে নড়েচড়ে বসল পাকিস্তান
রাজ্যপাল জানিয়েছেন, তিনি কংগ্রেসে থাকার সময় তাঁর বিরুদ্ধেও একাধিক বার ফতোয়া জারি হয়েছিল। আসলে যে কোনও সমাজেই দুটি দৃষ্টিভঙ্গি থাকে বলে মনে করেন তিনি। কিন্তু যাদের হাতে ক্ষমতা থাকে, তারা নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গিকেই সোচ্চারে ছড়িয়ে দিতে পারে। উপরন্তু শাসক সেই দৃষ্টিভঙ্গিকে একরকম ধর্মীয় বৈধতা দেয়। এও আসলে ক্ষমতারই খেলা। আরিফ মহম্মদের মতে, হজরত মহম্মদের মৃত্যুর পর থেকেই ইসলাম ধর্ম রাজনীতির দখলে চলে গিয়েছে। আর সেই কারণেই কথায় কথায় এইভাবে ফতোয়ার ছড়াছড়ি হয় বলে তিনি মনে করেছেন। কোনও ধর্মীয় কারণে নয়, নিছক রাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে এইভাবেই ফতোয়াকে ব্যবহার করা হচ্ছে, এমনটাই সাফ জানিয়েছেন কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান।