বাবা-ছেলের সম্পর্কে কখনও মেঘ তো কখনও বৃষ্টি। ধমক-ধামক, মন কষাকষি যেমন আছে, তেমনই আবার আছে মজা-মশকরা, আলিঙ্গনও। সম্প্রতি এক বাবা-ছেলের মজার কথোপকথন ভাইরাল হয়েছে নেটদুনিয়ায়। যা দেখে হাসছেন নেটপাড়ার বাসিন্দারা। কী এমন হাসির কথা হল বাপ-ছেলেয়? আসুন শুনে নিই।
পিতা-পুত্রের সম্পর্ক মানেই বেশ ভারি গোছের একটা ব্যাপার। রাশভারি বাবার কথা উঠলেই বাঙালির চোখে অবধারিত ভেসে ওঠে কমল মিত্র কিংবা ছবি বিশ্বাসের ছবি। সিনেমার পর্দায় তাঁদের গাম্ভীর্যের সামনে পড়ে, এমনকী বাঙালির মহানায়ককেও যে কতবার থতমত খেতে হয়েছে, তার ইয়ত্তা নেই। তবে এই বাপ-ছেলের সম্পর্ক নেহাতই বন্ধ দুর্গ নয়। সেখানে আলো-হাওয়া-খেলা জানলারও দেখা মেলে। সময় যত গড়িয়েছে রাশভারি কমল মিত্ররা ক্রমে নমনীয় হয়েছেন। দূরত্ব ঘুচিয়ে পিতা-পুত্রের সম্পর্ক তাই এখন অনেকটাই খোলামেলা। সম্প্রতি বাবা-ছেলের এমনই মজার কথোপকথনে হেসে খুন হল নেটপাড়া।
আরও শুনুন: রাত্রিযাপনে খরচ নেই এক পয়সা, তবু কেউ থাকতে নারাজ এই হোটেলে! কেন জানেন?
ঘটনার ইঙ্গিত দিচ্ছে ভাইরাল হওয়া একটি হোয়াটস অ্যাপ চ্যাটের স্ক্রিনশট। জিতু নামে জনৈক যুবক সেটি শেয়ার করেছেন নেটদুনিয়ায়। লিখেছেন, ‘রোস্টেড চিকেন খেতে গিয়ে নিজেই রোস্ট হয়ে গেলাম।’ তাঁর এই ‘রোস্ট’ হওয়া অবশ্য কোনও বন্ধুবান্ধবের হাতে নয়, নেপথ্যে আছেন স্বয়ং তাঁর বাবা। ঘটনাটা একটু বিস্তারেই বলা যাক। অনলাইনে অর্ডার নিয়ে খাবার ডেলিভারি দেয় এরকম একটি জনপ্রিয় সংস্থার মাধ্যমে খাবার-দাবার আনতে চেয়েছিলেন জিতু। কিন্তু গোড়ায় গলদ। নিজের বাড়ির ঠিকানা লিখতেই ভুল করে ফেলেছিলেন। ফলে খাবার চলে যায় অন্য জায়গায়। ব্যাপারটা যখন তিনি খেয়াল করেন, তখন সমস্যার কথা জানান সংস্থাকে। এসব ক্ষেত্রে যা নিয়ম, সেইমতো তাঁর টাকা ফিরিয়ে অর্থাৎ রিফান্ড করে দেওয়া হয়। এ পর্যন্ত ঠিক-ই ছিল। কিন্তু এরপরই ঘটনার ক্ল্যাইম্যাক্স। ঠিকানা সংক্রান্ত এই গোলমালের কথা জিতু জানান তাঁর বাবাকেও। উল্লেখ করে দেন যে, টাকা গচ্চা যায়নি। তিনি তাঁর টাকা ফেরত পেয়ে গিয়েছেন। ভেবেছিলেন, তিনি যে ঠকেননি, এই কথা জেনে তাঁর বাবা খুশিই হবেন। কিন্তু মোটেও তা হল না। জিতুর বাবা খুশি তো হননি, উলটে এমন এক জবাব দিয়েছেন, যা পড়ে হেসে কুটিপাটি নেটিজেনরা। জিতুর বাবা জবাবে লিখেছিলেন, ‘আমিও তোকে ভুল করেই অর্ডার দিয়ে ফেলেছিলাম। কিন্তু আমি তো কই রিফান্ড পাইনি!’
আরও শুনুন: পঁচিশ বছরের আত্মীয়তা, হিন্দু কর্মচারীর শেষকৃত্য সম্পন্ন করল মুসলিম পরিবারই
নেটপাড়ায় এই নিয়েই হাসির হুল্লোড়। সকলেই উপভোগ করেছেন এই কথোপকথনকে। কেউ কেউ আবার তারিফ করেছেন জিতুর। যেহেতু ব্যাপারটিকে খুব স্বাভাবিক ভাবেই নিয়েছেন তিনি, এমনকী প্রকাশ্যে আনতেও দ্বিধা করেননি। তবে, ম্যান-অব-দ্য ম্যাচ একজনই। তিনি জিতুর বাবা। নানারকম বিতর্কের জেরে নেটদুনিয়া যখন গম্ভীর, সতর্ক, তখন সেই বন্ধ গড়ে কৌতুকের একচিলতে ফুরফুরে বাতাস বইয়ে দিয়েছেন তিনিই।