খুঁটিপুজোয় আলপনা দিচ্ছেন মুসলিম মহিলারা। কলকাতার এক ক্লাবে ধরা পড়ল এমনই ছবি। জানা গিয়েছে, স্রেফ খুঁটিপুজো নয়, দেবী দুর্গার আরাধনাতেও একইভাবে শামিল হবেন তাঁরা। ঠিক কোন ক্লাবে দেখা গেল এমন সম্প্রীতির ছবি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
রথের রশিতে টান পড়তেই দুর্গাপুজোর কাউন্টডাউন শুরু। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন ক্লাবে খুঁটিপুজোর মাধ্যমে শুরু হয়ে গিয়েছে পুজো প্রস্তুতি। এই আবহে কলকাতায় ধরা পড়ল অনন্য এক সম্প্রিতীর নজির। শহরের ক্লাবের খুঁটিপুজোয় অংশ নিলেন মুসলিম মহিলারা। শুধু তাই নয়, নিজে আহেত আলপনাও দিলেন তাঁরা।
:আরও শুনুন:
বিয়েতে আসার উপহার! শাহরুখ-রণবীর সহ বরযাত্রীদের দু-কোটির ঘড়ি দিলেন অনন্ত আম্বানি
অনেকেই বলেন, উৎসবের আনন্দে ধর্মের ভেদ থাকে না। সেক্ষেত্রে বাঙালির প্রধান উৎসব দুর্গোপুজো বাদ যায় কীভাবে! প্রতি বছর দুর্গাপুজোয় আনন্দে মাতেন গোটা বিশ্বের বঙ্গসমাজ। পুরুলিয়া থেকে প্যারিস, দেবীর আরাধনায় শামিল হন সকলেই। তবে কলকাতায় দুর্গাপুজোর উন্মাদনা একেবারেই আলাদা। উইনেস্কোর তরফেও এই পুজোকে বিশেষ স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। আর সেই ঘোষণার পর যেন উৎসবের আমেজ আরও বেড়েছে। বিভিন্ন ক্লাবে ট্যাগলাইন হয়ে উঠছে, দুর্গাপুজো এবার বিশ্বজনীন। এহেন উৎসবে ধর্মের ভেদ থাকা একেবারেই বেমানান! তাই কলকাতার এক ক্লাব খুঁটিপুজোর উৎসবেই জুড়লেন মুসলিম মহিলাদের। এমনিতে রথের দিন খুঁটিপুজোর নিয়ম। তবে অনেক ক্লাবই নিজেদের সুবিধামতো রথের আশেপাশে কোনওদিন খুঁটিপুজোর আয়োজন সারেন। কুঁদঘাট উন্নয়িনী সংঘও সেইমতো খুঁটিপুজোর আয়োজন করেছিল রথযাত্রার ৬ দিন পর। এদিন সকাল থেকেই ক্লাব প্রাঙ্গণে সদস্যদের ভিড় ছিল। সকলেই শাড়ি-পাঞ্জাবিতে পুজোর আমেজে মেতেছিলেন। তার মাঝে ছিলেন কয়েকজন বোরখা পরিহিত মহিলাও। সাজ পোশাক দেখেই বোঝা যায় এঁদের প্রত্যেকেই মুসলিম। খুঁটিপুজোর মতো অনুষ্ঠানে এঁরা কী করছেন, সেই প্রশ্নই এসেছিল সকলের মনে। কিন্তু ক্লাব কর্তারা সবকিছু আগেভাগেই জানতেন।
:আরও শুনুন:
জুতো দিয়ে পুজো দিলেই সারবে হাঁটুর ব্যথা! কোথায় রয়েছে এমন মন্দির?
আসলে, মুসলিম মহিলারাও যাতে খুঁটিপুজোয় অংশ নেন সেটাই চেয়েছিলেন ক্লাবকর্তারা। তাঁদের ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়েই ওই মহিলারা বোরখা পরে হাজির হন অনুষ্ঠানে। সেখানে সকলের সঙ্গে মিলে অনুষ্ঠানে অংশ নেন তাঁরাও। বিশেষ এক ফুলের আলপনার ব্যবস্থা করেছিল ক্লাব কর্তৃপক্ষ। সেই কাজেও হাত লাগান মুসলিম মহিলারা। তাঁদের কথায়, প্রতি বছর এমনিই দুর্গাপুজোর আনন্দে শামিল হন তাঁরা। তবে খুঁটিপুজোয় অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়ে প্রত্যেকেই আপ্লুত। এবারের দুর্গাপুজোতেও একইভাবে আনন্দে মাতবেন ওই মুসলিম মহিলারা। এমনটাও জানিয়েছেন সকলে। কেউ কেউ এই দাবি করেছেন, ইদের মতোই দুর্গাপুজোর জন্য অপেক্ষা করেন তাঁরা। সংবিধান অনুযায়ী ভারত ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বর্তমান পরিস্থিতি সে কথা ভোলানোর চেষ্টা করে মাঝেমধ্যেই। কিন্তু সেই আবহে এই ধরনের ঘটনা মনে করিয়ে দেয়, ধর্ম যার যার উৎসব সবার।