অন্য ধর্মের প্রতি বিদ্বেষ নয়। বরং সম্প্রীতির এক অনন্য উদাহরণ। হিন্দু মন্দির তৈরির উদ্দেশ্যে আড়াই কোটি টাকার জমি দান করে নজির গড়ল এক মুসলিম পরিবার। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
তৈরি হবে বিশ্বের বৃহত্তম হিন্দু মন্দির। আর সেই প্রকল্পের জন্যই জমি দান করল একটি পরিবার। একটু আধটু জমি নয়। সেই জমির যা পরিমাণ, বাজারদর অনুযায়ী তার অর্থমূল্য দাঁড়ায় আড়াই কোটি টাকা। এই বিপুল মূল্যের জমি রীতিমতো লেখাপড়া করে মন্দির তহবিলে দান করেছে ওই পরিবারটি। আশ্চর্যের কথা হল, ধর্মপরিচয়ে কিন্তু তারা হিন্দু নয়। পরিবারটি আদতে ইসলাম ধর্মাবলম্বী। ইশতিয়াক আহমেদ খান ও তাঁর পরিবারের এহেন সিদ্ধান্ত তাই বিস্মিতই করেছিল মন্দির কর্তৃপক্ষকে। তবে এই কাজকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অভিনব দৃষ্টান্ত হিসেবেই স্বীকার করে নিচ্ছেন তাঁরা।
আরও শুনুন: কেবল দেবতাই নন, সমন্বয়ের বার্তা দিয়ে দেশের এই মন্দিরে পূজিতা হন রাক্ষসীও
ব্যবসায়ী ইশতিয়াক আহমেদ খান বর্তমানে কর্মসূত্রে গুয়াহাটির বাসিন্দা। কিন্তু তিনি আসলে চম্পারনের ভূমিপুত্র। আর চম্পারনেই তৈরি হবে এই মন্দির। পরিকল্পনা মোতাবেক মন্দিরের যে মানচিত্র তৈরি হয়েছে, তার মধ্যেই পড়ছে ইশতিয়াকের পরিবারের দখলে থাকা ওই জমি। এ কথা জেনে বিনামূল্যেই ওই জমি মন্দির তহবিলে দান করার সিদ্ধান্ত নেন ইশতিয়াক ও তাঁর পরিবার।
আরও শুনুন: শুধু মাথার চুল থেকেই আয় প্রায় ১২৬ কোটি টাকা! তিরুপতি মন্দিরের বার্ষিক আয় কত জানেন?
বিহারের চম্পারন জেলার কৈথওয়ালিয়া এলাকায় এই বিশাল মন্দির গড়ার পরিকল্পনা করেছে পাটনার মহাবীর মন্দির ট্রাস্ট। বিশ্বের বৃহত্তম হিন্দু মন্দির হিসেবেই এই মন্দিরটিকে গড়ে তুলতে চান কর্তৃপক্ষ। তাঁরা এর নামকরণ করেছেন বিরাট রামায়ণ মন্দির। এমনকি দ্বাদশ শতাব্দীতে নির্মিত কম্বোডিয়ার আঙ্কোরভাট মন্দির, যা বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের মধ্যে অন্যতম, তাকেও এই মন্দির ছাড়িয়ে যাবে বলে দাবি মন্দির কর্তৃপক্ষের। এদিকে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করার জন্য প্রয়োজন বিপুল পরিমাণ জমির। ইতিমধ্যেই ১২৫ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে, দ্রুতই ওই এলাকার আরও ২৫ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে বলেও জানিয়েছেন মন্দির ট্রাস্ট। বলাই বাহুল্য, হিন্দু এবং মুসলিম উভয় ধর্মের মানুষেরই জমিজমা রয়েছে এই বিশাল এলাকায়। আর সেই মুসলিমদের সাহায্য ছাড়া তাঁদের এই স্বপ্নের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা আদৌ সম্ভব ছিল না, এ কথা স্পষ্টই জানিয়েছেন মহাবীর মন্দির ট্রাস্টের প্রধান কর্তা, আচার্য কিশোর কুনাল। দুই সম্প্রদায়ের ভ্রাতৃত্ব এবং সম্প্রীতিকেই তুলে ধরেছে ওই মুসলিম পরিবারটির এহেন সিদ্ধান্ত, এমনই অভিমত জানিয়েছেন তিনি।