‘এ’ ফর অর্জুন, ‘বি’ ফর বলরাম। ছোটদের অক্ষর চেনানোর জন্য এভাবেই হিন্দু পুরাণের দ্বারস্থ হয়েছে যোগীরাজ্যের এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কেন এহেন উদ্যোগ নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
বিদেশি ভাষার অক্ষর, কিন্তু তা চেনার পথে সহায়ক হবে দেশীয় সংস্কৃতি। এই উদ্দেশ্য নিয়েই ছোটদের বইয়ের ভোল বদলে দিয়েছে যোগীরাজ্যের এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ছোটদের ইংরেজি অক্ষর চিনতে শেখার সেই চিরপ্রচলিত প্রথম ধাপ ‘এ ফর অ্যাপেল’, ‘বি ফর বল’-কে নাকচ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। পরিচিত সেই ভাষা বদলে সেখানে এসেছে ‘এ’ ফর অর্জুন, ‘বি’ ফর বলরাম, ‘সি’ ফর চাণক্য। ডি-তে রয়েছেন ধ্রুব, ই-তে একলব্য, আই-তে ইন্দ্র এবং এইচ চিনিয়েছে হনুমানকে। ইংরেজি বর্ণমালার ২৬টি অক্ষরই এভাবে মূলত পুরাণ, আর কয়েকটি ক্ষেত্রে দেশের কোনও ঐতিহাসিক চরিত্রের নামে চিহ্নিত করা হয়েছে। বলা ভাল, ছোটদের ইংরেজি অক্ষর চেনানোর জন্য সরাসরি হিন্দু পুরাণেরই দ্বারস্থ হয়েছে লখনউয়ের আমিনাবাদ ইন্টার কলেজ।
আরও শুনুন: কেবল ধর্ষণের প্রমাণ নয়, সেনাবাহিনীতেও চলত ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’, কোন দেশের নিয়ম জানেন?
হ্যাঁ, এমনটাই উদ্যোগ নিয়েছে যোগীরাজ্যের এই ১২৫ বছরের পুরনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ওই কলেজের তরফে এমনভাবেই ছোটদের বইতে ইংরেজি বর্ণমালার ভোলবদল করা হয়েছে। ইংরেজি অক্ষরগুলিকে কাজে লাগিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ দেশের ইতিহাস ও পুরাণের নানা চরিত্র ছোটদের চেনাতে চেয়েছে। উদ্দেশ্য, ছোট থেকেই শিশুদের মধ্যে দেশের ইতিহাস এবং পুরাণ সম্পর্কে সচেতনতা বিস্তার করা। শুধু শব্দটিই নয়, ওই চরিত্রগুলির সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বর্ণনাও রয়েছে বইয়ে। যেমন, অর্জুন শব্দের প্রেক্ষিতে বলা হয়েছে, অর্জুন খুব বড় একজন বীর ছিলেন। বলরামকে চিহ্নিত করা হয়েছে কৃষ্ণের ভাই বলে। লখনউয়ের ওই কলেজের অধ্যক্ষ সাহেব লাল মিশ্র বলেন, ‘‘ভারতীয় সংস্কৃতি সম্পর্কে ছাত্রছাত্রীদের ধারণা খুব কম। তাই আমরা ওদের জ্ঞান বাড়ানোর জন্য এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।’’ শুধু ইংরেজি নয়, হিন্দি অক্ষরের ক্ষেত্রেও একই পথে হাঁটার কথা ভাবছেন প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ। তবে হিন্দিতে অক্ষরের সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় তার তালিকা প্রস্তুত করতে সময় বেশি লাগছে বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ।
আরও শুনুন: পাকিস্তানের প্রেম-কথা! সামাজিক চোখরাঙানি এড়িয়ে ৫২-র শিক্ষককেই বিয়ে ২০-র ছাত্রীর
হিন্দুরাজ্য প্রতিষ্ঠা নিয়ে বারেবারেই সরব হয়েছেন গেরুয়া শিবিরের অন্যতম প্রধান নেতা তথা উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। গেরুয়া শিবিরের তরফে ইতিমধ্যেই বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে স্কুলপাঠ্য ইতিহাসের বিভিন্ন অংশ বদলে দেওয়ার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। এবার যোগীরাজ্যেই ছোটদের বই ঘিরে এহেন উদ্যোগ নিয়ে তাই আলোচনা চলেছে নানা মহলেই। এহেন ভোলবদলের পিছনে কোনও ধর্মভিত্তিক অ্যাজেন্ডা রয়েছে কি না, তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।