পাত্রের বয়স ৫২, পাত্রীর মোটে ২০। পাত্র শিক্ষক, পাত্রী তাঁরই ছাত্রী। বিয়েটা কি তাহলে হল? উত্তর হচ্ছে, দিব্যি হল। যদিও বাধা কিন্তু কম ছিল না। পাকিস্তানের এই দম্পতির প্রেমকথাই এখন ছড়য়ে পড়েছে নেটদুনিয়ায়।
বি.কমের ছাত্রী জোয়া নুর। ভালোবেসেছিলেন তাঁরই শিক্ষক সাজিদ আলিকে। কিন্তু মাঝখানে বাধা হয়ে এসে দাঁড়িয়েছিল বয়সের বিস্তর ফারাক। প্রায় ৩২ বছরের পার্থক্য। পরিবার আর সমাজ কি এ বিয়ে মেনে নেবে? সাতপাঁচ ভাবনা ছিলই। কিন্তু একদিন সে সব কাটিয়ে ওঠার সিদ্ধান্ত নেন কুড়ির জোয়া। সোজা গিয়ে শিক্ষককে জানিয়ে দেন মনের কথা। যে, তিনি সাজিদকে ভালোবাসেন এবং তাঁকেই বিয়ে করতে চান।
আরও শুনুন: জ্বরে পুড়ছে গা, ছিলেন ঋতুমতী… তবু বৃষ্টি ভিজে রোম্যান্টিক গানে অভিনয় রবিনার
বাহান্ন-র সাজিদ তো এমন প্রেমপ্রস্তাব পেয়ে গোড়াতে হকচকিয়েই যান। বয়সের কারণেই তিনি জানেন, এই বিয়ের সমস্যা ঠিক কোথায়। যদিও ছাত্রীকে বিয়ে করার ক্ষেত্রে তাঁর আপত্তি ছিল না। তবু বয়সের পার্থক্যটাই ভাবাচ্ছিল। দোনামোনা করে তাই প্রথমবার ছাত্রীকে ফিরিয়েই দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, সপ্তাহখানেক সময় দাও, ভেবে দেখছি। আর এই এক সপ্তাহেই বদলে গেল মনের রসায়ন। সাজিদও বুঝতে পারেন, জোয়াকে তিনি ভালই বাসেন। এরপর আর দুজনে পিছু ফিরে তাকাননি। আবদ্ধ হন বিবাহ বন্ধনে।
আরও শুনুন: পৃথিবীর ‘সবচেয়ে দুঃখী’ গরিলা, ৩২ বছর ধরেই একচিলতে নোংরা খাঁচায় বন্দি বুয়া নোই
তবে চোখরাঙানি অবশ্য কম ছিল না। দুজনেরই আত্মীয়-পরিজনরা এই বিয়ের কথা শুনে তো রেগে আগুন। কিন্তু সেই চোখরাঙানি উপেক্ষা করেই নিজেদের প্রেমকে পরিণতি দিতে বদ্ধপরিকর ছিলে জোয়া ও সাজিদ। সম্প্রতি নিজেদের প্রেমের গল্প এক ইউটিউবারকে বলেন তাঁরা। আর সেই সূত্রেই তাঁদের কথা জানতে পারে বিশ্ব। এমনিতে রক্ষণশীল সমাজে বাস করেও তাঁরা যে ভালোবাসার জন্য সামাজিক বাধা উপেক্ষা করতে পেরেছেন, সে জন্য বহু মানুষ অভিনন্দন জানিয়েছেন তাঁদের। আর এই বিয়ে ভাগ্যও খুলে দিয়েছে দুজনের। শুধু সুখে ঘরকন্নাই নয়, দুজনে জমিয়ে তুলেছেন ব্যবসাও। জোয়ার উদ্যম আর সাজিদের অভিজ্ঞতার দরুন এখন ব্যবসা করে রোজগারও ভাল হচ্ছে তাঁদের। এসব কথাই দুই অসমবয়সি দম্পতি জানিয়েছেন বিশ্ববাসীকে। তাঁদের জীবনের এই গল্প শেষমেশ বোধহয় একটা কথাই বুঝিয়ে দেয়, ভালোবাসা থাকলে জীবনে সবকিছুই সম্ভব।