দেশ জুড়ে সমালোচনার দরুনই চেয়ারম্যানের মন্তব্য থেকে নজর ঘোরাতে আসরে নামতে হল সংস্থাকে? এ প্রশ্ন থাকছেই। তবে, ভারতীয় কর্মসংস্কৃতির বদল নিয়ে যে চর্চা এই মন্তব্যে শুরু হয়ে গেল, তার রেশ ভবিষ্যতেও থেকে যাবে বলে মনে করছেন অনেকেই।
সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা কাজ। নারায়ণমূর্তির প্রস্তাবিত ৭০ ঘণ্টা কাজের থেকেও ঘণ্টা কুড়ি বেশি। ভারতীয় কর্মসংস্কৃতি কি এবার সেদিকেই এগোবে? এল অ্যান্ড টি-র চেয়ারম্যান এস.এন সুব্রমণিয়ানের মুখ থেকে এ কথা শোনামাত্রই শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক। প্রতিবাদও হয়েছে জোরদার। তবে, এবার চেয়ারম্যানের পাশে দাঁড়াল সংস্থা। জানানো হল, পুরোটা না জেনে-বুঝেই তাঁর কথার ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।
দেশের তরুণদের যে আরও বেশি সময় কাজ করতে হবে, এ প্রস্তাব প্রথম শোনা যায় ইনফোসিস কর্তা নারায়ণমূর্তির মুখে। তখন থেকেই এ নিয়ে নানা সমালোচনা চলছে। বেশিক্ষণ কাজ করলেই একজন কর্মীর সৃজনশীলতা বাড়বে কি-না এই নিয়েই যাবতীয় চর্চা। অন্যদিকে এই পদ্ধতিতে শ্রমিকের অধিকার যে ক্ষুণ্ণ হবে, তা নিয়েও সরব হয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। এই প্রেক্ষিতেই অন্য মাত্রা পেয়ে যায় সুব্রমণিয়ানের বক্তব্য। তিনি যেই ৯০ ঘণ্টা কাজের কথা বললেন, তখন মোটামুটি ধরে নেওয়া হল যে, দেশের সংস্থার শীর্ষকর্তারা মোটের উপর এই পথেই হাঁটতে চলেছেন। তবে, সংস্থার পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয় হল, বিষয়টি মোটেও সেরকম নয়। এল অ্যান্ড টি-র এইচআর হেড সনিকা মুরলীধরন চেয়ারম্যানের পাশে দাঁড়িয়ে জানিয়েছেন যে, প্রেক্ষিতহীন ভাবেই তাঁর মন্তব্য নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এবং তা নিয়ে অনর্থক বিতর্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে। সনিকা বলছেন, যা বলা হয়েছে তা সংস্থার নীতি নয়। পলিসি হিসাবে যে তা চালু করা হচ্ছে, তাও নয়। হালকা মেজাজেই চেয়ারম্যান কথাটি বলেছেন। কিন্তু সেটিকেই সংস্থার পলিসির সঙ্গে মিলিয়ে পুরো মন্তব্যেরই অপব্যাখ্যা করা হচ্ছে।
সংস্থার শীর্ষকর্তা হিসাবে চেয়ারম্যানের নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন সনিকা। বলেছেন, অফিসকর্মী নয়, বরং সকলকে বৃহত্তর পরিবারের একজন হিসাবেই ভাবেন তিনি। ফলত কর্মীদের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের দিকে তাঁর যে নজর থাকবে না, এমনটা নয়। তা ছাড়া কর্মীদের স্বার্থের পরিপন্থীও তিনি কিছু করবেন না। পুরো বক্তব্যে হালকা চালে বলা একটি কথা নিয়ে যেভাবে সর্বত্র বিতর্ক হচ্ছে, তাতে তিনি হতাশ বলেই জানিয়েছেন সনিকা।
তবে কি দেশ জুড়ে সমালোচনার দরুনই চেয়ারম্যানের মন্তব্য থেকে নজর ঘোরাতে আসরে নামতে হল সংস্থাকে? এ প্রশ্ন থাকছেই। তবে, ভারতীয় কর্মসংস্কৃতির বদল নিয়ে যে চর্চা এই মন্তব্যে শুরু হয়ে গেল, তার রেশ ভবিষ্যতেও থেকে যাবে বলে মনে করছেন অনেকেই।