রাজনীতিতে দলবদল সাধারণ বিষয়। নির্বাচনী ইস্তেহারে এই নিয়ে কড়া নিয়মের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কংগ্রেস। কিন্তু বাস্তবে সেসব মানা হয়নি বলে অভিযোগ বিআরএস নেতা কেটিআর-এর। ঠিক কোন প্রসঙ্গে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে এমন দাবি তুলছেন তিনি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
লোকসভা ভোটে অন্যতম চর্চার বিষয় ছিল সংবিধান। বিরোধী শিবিরের নেতারা বারবার সংবিধান বদলের অভিযোগে সরব হয়েছেন বিজেপির বিরুদ্ধে। এমনকি সংবিধানের প্রতীক নিয়েও মোদি সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন তাঁরা। এবার সেই সংবিধানের প্রসঙ্গ ধরেই বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীকে খোঁচা দিলেন বিআরএস নেতা কেটিআর।
আরও শুনুন: প্রথম পাতায় রাহুলের প্রশংসা দেখেই চটে লাল, সংবাদপত্র বয়কটের ডাক বিজেপি নেতার
তেলেঙ্গানার এই দলে ভাঙন শুরু গত বিধানসভা ভোটের আগে থেকে। সম্প্রতি লোকসভায় সবকটি আসনে পরাজিত হওয়ায়, বিআরএস-এ ভাঙনের মাত্রা আরও বেড়েছে। প্রথমে ছ’জন বিধায়ক এবং প্রবীণ রাজ্যসভা সাংসদ কে কেশব রাও দলত্যাগ করেন। যোগ দেন কংগ্রেসে। এবার তাঁদের পাথেয় অনুসরণ করে হাত শিবিরে যোগ দিয়েছেন বিআরএসের ছ’জন বিধান পরিষদ সদস্যও। ফলে ৪০ সদস্যের বিধান পরিষদে বিআরএসের সদস্য সংখ্যা ২৫ থেকে কমে হয়েছে ১৯। এদিকে কংগ্রেসের সদস্য সংখ্যা চার থেকে বেড়ে হয়েছে ১০। দলত্যাগের পর নিজের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন কে কেশব রাও। কিন্তু দলত্যাগী বিধায়করা এমন কিছুই করেননি। আর এতেই প্রশ্ন তুলেছেন বিআরএস নেতা কে টি আর।
আরও শুনুন: ক্ষমতায় এলে এমনই থাকবেন, না বদলে যাবেন? ব্যাখ্যা দিলেন রাহুল
বিআরএসের দীর্ঘদিনের সদস্য কেটিআর দাক্ষিনাত্য রাজনীতির পরিচিত মুখ। এক সময় সে রাজ্যের মন্ত্রীও ছিলেন তিনি। যদিও এই মুহূর্তে তাঁর পরিচয় স্রেফ বিধায়ক। রাজনৈতিক মহলের দাবি, দলের এই পরিস্থিতিতে বেশ ভেঙে পড়েছেন কেটিআর। বিশেষ করে দলের পুরনো সদস্যরা যেভাবে একের পর এক অন্য শিবিরে যোগ দিচ্ছেন তাতে দলের ভবিষ্যৎ আরও অন্ধকারের দিকে যাচ্ছে বলেই দাবি ওয়াকিবহাল মহলের। এই আবহেও কংগ্রেসকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি কেটিআর। তাঁর দাবি, কংগ্রেস তাঁদের নির্বাচনী ইস্তেহার অমান্য করছে। এই প্রসঙ্গে সংবিধানের উল্লেখ করেছেন তিনি। সরাসরি রাহুলের কাছে প্রশ্ন রেখেছেন, দলবদল দিয়েই সংবিধান ধরে রাখবে কংগ্রেস? আসলে, নির্বাচনি ইস্তেহারে কংগ্রেস দাবি করেছিল, দলবদলু নেতাদের ইস্তফা দিতে হবে নিজেদের পদ থেকে। অর্থাৎ কোনও নেতা নির্দিষ্ট একটা দলের হয়ে বিধান্সভা বা লোকসভায় জয়লাভ করলে তাঁকে সেই দলে থেকেই কাজ করতে হবে। অন্য শিবিরে যোগ দিলে প্রশাসনিক পদ থেকে দিতে হবে ইস্তফা। কিন্তু তেলেঙ্গানায় বিআরএস-এর হয়ে জেতা ৬ বিধায়ক কংগ্রেসের যোগ দিয়েও ইস্তফা দেননি। ফলত কংগ্রেস তাঁদের নির্বাচনী ইস্তেহারে উল্লেখ করা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে, দাবি কেটিআর-এর। এমনটা চলতে থাকলে দেশের মানুষ কীভাবে কংগ্রেসে ভরসা করবেন, সেই প্রশ্নও তুলেছেন কেটিআর। যদিও যেভাবে তাঁর দলে ভাঙন শুরু হয়েছে তাতে এই প্রশ্ন আলাদাভাবে জাতীয় রাজনীতিতে বিশেষ গুরুত্ব পাবে না বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।