পাণ্ডবদের পাঁচখানা গ্রাম ছেড়ে দিক কৌরব পক্ষ, যুদ্ধ থামাতে চেয়ে বলেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ। সেই প্রসঙ্গ টেনেই এবার যোগী আদিত্যনাথের সওয়াল, হিন্দুরা তো মুসলিমদের মাত্র তিনটি মসজিদ ছেড়ে দিতে বলছে। অর্থাৎ, অযোধ্যার পর এবার কাশী-মথুরার দাবিতে মান্যতা দিলেন যোগীও। ঠিক কী বললেন তিনি? শুনে নেওয়া যাক।
অযোধ্যায় রাম মন্দির প্রতিষ্ঠার পরপরই কাশী ও মথুরাতেও মন্দির ফিরে পাওয়ার দাবিতে সুর চড়িয়েছে হিন্দু পক্ষ। কাশীর জ্ঞানবাপী মসজিদ এবং মথুরার শাহি ইদগাহ মসজিদ নিয়ে যে আইনি লড়াই চলছিল, তাও নয়া মোড় নিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মুসলিম পক্ষকে শান্তিপূর্ণ ভাবে ওই দুই মসজিদ ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছেন রাম মন্দির ট্রাস্ট কর্তা। এমনকি দাবি করেছেন, কাশী-মথুরা মুক্ত হলে আর অন্য কোনও মসজিদের দখল নিয়ে মাথা ঘামাবে না হিন্দুরাও। এবার সেই সুরেই কথা বললেন খোদ যোগী আদিত্যনাথও। মহাভারতের প্রসঙ্গ টেনে এনে এই দাবির পক্ষে সওয়াল করলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ রুখতে চেয়েছিলেন শ্রীকৃষ্ণ। সেই কারণেই কৌরব পক্ষকে তিনি অনুরোধ করেছিলেন, যাতে পাণ্ডবদের পাঁচ ভাইয়ের জন্য পাঁচটি গ্রাম ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এই ন্যূনতম দাবিও মানতে রাজি হননি দুর্যোধন। আর এরপরেই শুরু হয় কুরুক্ষেত্রের ভয়ানক যুদ্ধ, যেখানে কৌরব বংশ ধ্বংস হয়ে যায়। যোগী আরও বলেন, যেখানে কৃষ্ণও পাঁচটি গ্রাম চেয়েছিলেন, সেখানে হিন্দুরা তো মাত্র ৩টি জায়গার দাবি জানিয়েছে। অর্থাৎ, অযোধ্যার পর এবার কাশী-মথুরার দাবিতে মান্যতা দিলেন যোগীও।
আরও শুনুন:
হিন্দু দেব-দেবীকে অপমান করা বন্ধ হোক, নতুন আইন চাইছেন বিজেপি নেতা
অযোধ্যায় রাম মন্দির গড়ে রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠাকে নিজেদের হারানো জমি পুনরুদ্ধার করা বলেই দাবি করছেন হিন্দুত্ববাদীরা। রাম মন্দিরের মতোই বারাণসীর জ্ঞানবাপী ও মথুরার শাহি ইদগাহ মসজিদ নিয়েও টানাপোড়েন চলছে দীর্ঘদিন ধরে। হিন্দু পক্ষের দাবি, ওই দুই মসজিদের জায়গাতেও আগে মন্দিরই ছিল। যা ভেঙে মসজিদের গোড়াপত্তন করেন মুসলিম শাসকেরা। আদালতের নির্দেশে ইতিমধ্যেই জ্ঞানবাপীতে পূজার্চনা শুরু করেছেন ভক্তরা। এবার এই দুই মসজিদ নিয়ে সরব হলেন যোগীও। নিজের কথার সপক্ষে রামধারী সিং দিনকর-এর বই ‘রাসমিরাঠি’ থেকে ‘কৃষ্ণ কি চেতাবনি’ অংশটি উল্লেখ করেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, যে অন্যায় ঘটেছে তা ৫০০০ বছর আগের কথা। সেইজন্যই তার মিটমাট করা জরুরি। আর তাই তাঁরা মাত্র তিনটি জায়গা চাইছেন, যেখানে ঈশ্বরের মনুষ্যজন্ম হয়েছিল বলে ভক্তদের বিশ্বাস। কিন্তু কুরুবংশের মতো এখানেও জমি ছাড়ার ক্ষেত্রে অনর্থক একগুঁয়েমি দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ তাঁর। তিনি আরও বলেন, এই একবগগা মনোভাবের সঙ্গে যখন ভোটের রাজনীতিও জুড়ে যায়, তখনই সেখান থেকে সংকটের শুরু। অর্থাৎ মহাভারত ও কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের প্রসঙ্গ তুলে এবার মন্দির ইস্যুতে মুসলিম পক্ষের উপর কার্যত আরও চাপ বাড়ালেন যোগী আদিত্যনাথ।