বিজেপি জমানায় যোগীরাজ্যে বদেলেছে অনেক কিছুই। আইন-কানুন নিয়েও সন্তুষ্ট রাজ্যবাসী। এমনকি রাজ্যের মুসলিমরাও এর কৃতিত্ব বিজেপিকেই দিয়েছেন। আসন্ন নির্বাচনে কি এর প্রভাব পড়বে? বিজেপিকে সমর্থনের বিষয়ে কী বলছেন যোগীরাজ্যের মুসলিমরা? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
একসময় সন্ধে নামলেই বাড়ির বাইরে পা রাখা দায় ছিল। মহিলারা তো বটেই, পুরুষরাও রাতের অন্ধকারে প্রয়োজন ছাড়া বেরোতেন না। আর এতেই যেন অভ্যস্থ হয়ে উঠেছিলেন উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দারা। কিন্তু বিজেপি জমানায় সেই ছবি বদলেছে বলেই দাবি রাজ্যবাসীর। বিশেষ করে সে রাজ্যের মুসলিমরা এই বদল নিয়ে বেশ সন্তুষ্ট। যার জন্য বিজেপিকে ক্রেডিট দিতেও তেমন আপত্তি নেই তাঁদের। কিন্তু প্রশ্ন অন্য জায়গায়!
আরও শুনুন: মন্দির নির্মাণে সম্প্রীতি বাড়বে না বিভেদ? ভোটের মুখে জবাব দেশের জনতার
এই বদলের জন্য কি বিজেপিকে ভোট দেবেন তাঁরা?
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে যোগী আদিত্যনাথ শপথ গ্রহণ করেছেন ২০১৭ সালে। এর মধ্যে ২০২২ এর নির্বাচনেও জিতেছেন যোগী। এই ৭ বছরে একাধিকবার শিরনামে এসেছে তাঁর নাম। সব ক্ষেত্রেই খবরের ধরণ মোটামুটি এক। কড়া হাতে অপরাধ দমন করছেন মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ। বুলডোজার দিয়ে বেইআইনি নির্মাণ ভেঙে দেওয়া থেকে শুরু করে আরও কত কি! প্রশ্ন উঠেছে নৈতিকতা নিয়ে। বিরোধী শিবিরের কটাক্ষও কম আসেনি। তবু নিজের মেজাজে এগিয়ে গিয়েছেন যোগী। যার ফল অবশ্য সে রাজ্যের মানুষ হাতে নাতে পেয়েছেন। অনেকেই সর্ব সমক্ষে স্বীকার করেন, বিজেপি জমানায় উত্তরপ্রদেশের অপরাধ রীতিমতো কমেছে। National Crime Records Bureau (NCRB)-এর রিপোর্টেও সেই ছবি ধরা পড়েছে। এমনকি গোটা দেশের গড় অপরাধের হারের তুলনায় যোগীরাজ্যের অপরাধের পরিমাণ কম বলেই দাবি কেন্দ্রীয় সংস্থার। একই দাবি সে রাজ্যের মুসলিমদের অনেকেরও। বাড়ির মহিলারা আজকাল নিশ্চিন্তে রাতে বেরোতে পারে। যেটা একময় কল্পনাতেও আনা কঠিন ছিল। এমনই মত সে রাজ্যের মুসলিম বাসিন্দাদের। কিন্তু এত কিছুর পরেও বিজেপিকে ভোট দিতে নারাজ যোগীরাজ্যের মুসলিমরা।
আরও শুনুন: ইভিএম নয়, ফিরুক ব্যালট! এই দাবিতেই যোগীরাজ্য থেকে ভোটে লড়ছেন আইনজীবী
যার কারণ হিসেবে ধর্মের প্রসঙ্গ টেনেছেন তাঁরা। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে দেখা যাচ্ছে, যোগীরাজ্যের বেশ কিছু মুসলিম মনে করেন, বিজেপি তাঁদের ধর্মের বিরুদ্ধে। এক্ষেত্রে বুলডোজার দিয়ে মসজিদ ভেঙে দেওয়ার মতো ঘটনাকে তুলে আনছেন তাঁরা। যোগীরাজ্যের ওই মুসলিম বাসিন্দাদের দাবি, মসজিদ ভেঙে দেওয়া তাঁরা কোনওভাবেই মানতে পারেননি। তাই বিজেপিকে ভোট দেওয়া তাঁদের কাছে নিতীবিরুদ্ধ কাজ। এদিকে বিজেপির আমলেই যে রাজ্যের সুরক্ষা এই পরিমাণ বেড়েছে তা স্বীকার করতে এতটুকু আপত্তি নেই তাঁদের। পূর্বের নির্বাচন থেকে মোটামুটি একটা ধারণা জন্মায়, যে উত্তরপ্রদেশের মুসলিম ভোট বিজেপির ঝুলিতে সেইভাবে আসে না। বিশেষ করে সে রাজ্যের পশ্চিম অংশে সমাজবাদী পার্টি বা অন্য কোনও দলের নামেই ভোট বাক্স ভরান মুসলিমরা। তাহলে আসন্ন নির্বাচনেও কি সেই ছবি বদলাবে না? প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।