কুম্ভস্নান সারলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। তবে শাহী স্নানের বিশেষ দিনে নয়, মোদি স্নান করলেন অন্য এক তিথিতে। মাঘ মাসের এই অষ্টমী তিথিও শাস্ত্রে কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। ঠিক কী কারণে এই তিথিকেই বেছে নিলেন প্রধানমন্ত্রী? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
হাজার নয়, লাখ নয়, কয়েক কোটি ভক্ত ইতিমধ্যেই স্নান সেরেছেন কুম্ভে। যোগী আদিত্যনাথ থেকে অমিত শাহ, সকলেই সেই দলে শামিল। তবে এতদিনেও প্রধানমন্ত্রীকে কুম্ভে দেখা যায়নি। অবশেষে অপেক্ষার অবসান ঘটল, পূর্ব নির্ধারিত সূচি মেনে ফেব্রুয়ারির ৫ তারিখ মহাকুম্ভে স্নান সারলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি।
আরও শুনুন:
রামের গজল! লিখলেন মুসলিম কবি, চিঠিতে প্রশংসা প্রধানমন্ত্রী মোদির
রামমন্দির উদ্বোধন হোক বা কণ্যাকুমারীর বিবেকানন্দ রক, প্রধানমন্ত্রীকে হামেশাই দেশের বিভিন্ন মন্দিরে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়। বিশেষ করে ভোটের আবহে, এমনও কিছু মন্দিরে মোদি হাজির হন, যেখানে তাঁর আগে কোনও প্রধানমন্ত্রী যাননি। এই নিয়ে চর্চা চলে বিভিন্ন মহলে। সমালোচকরা বলেন, ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করার উদ্দেশেই এমনটা করে থাকেন মোদি। যদিও বিজেপির তরফে এই ধরনের মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী মোদির জীবনযাপন সামনে এনে বারবার এটাই প্রমাণ করার চেষ্টা চলে, তিনি আদতে কতটা ধার্মিক। তাই মথুরায় সমুদ্রের নীচে চলে যাওয়া, কিংবা কনকনে ঠাণ্ডায় হিমালয়ের গুহায় ধ্যান করা, বিভিন্ন অবতারে মোদিকে দেখেছে দেশের মানুষ। এবার পালা কুম্ভের। যে ভিড়ে গোটা দেশ, এমনকি বিদেশের মানুষজন সামিল হচ্ছেন, সেখানে হাজির প্রধানমন্ত্রী মোদি। স্রেফ তাঁকে দেখতেই ভিড় জমিয়েছেন অনেকে। নিজের স্নান চুলোয় যাক, মোদি স্নান করছেন এই দৃশ্য দেখাই যেন পরম সৌভাগ্যের! এমনটাই ধারণা প্রধানমন্ত্রীর ভক্তকূলের। তবে কুম্ভ শুরু হয়েছে জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি শাহী স্নান সম্পন্ন হয়েছে। এমনকি বিশেষ যোগ সম্পন্ন মৌনী অমাবস্যাও পেরিয়ে গিয়েছে। এর কোনওটাতেই প্রধানমন্ত্রীকে দেখা যায়নি। এমনকি বসন্ত পঞ্চমীতেও কুম্ভে যাননি মোদি। গিয়েছেন তার ঠিক দুদিন পর, মাঘের অষ্টমী তিথিতে। তাতেই প্রশ্ন উঠছে, কেন এমন সিদ্ধান্ত? কী বিশেষত্ব মাঘের এই তিথির?
শাহী স্নানের দিন না হলেও, শাস্ত্রে এই দিনের গুরুত্ব যথেষ্টই। আসলে, এই তিথি গুপ্ত নবরাত্রির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন। এমনিতে বছরে চারবার নবরাত্রি পালিত হয়। তার মধ্যে দুটি গুপ্ত। অর্থাৎ সাধকরা গুপ্তভাবে তা পালন করেন। বিশেষ তন্ত্রক্রিয়া থেকে গুহ্য সাধনা, সবই চলে এই বিশেষ সময়ে। আর অষ্টমী মানেই অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে শুভ শক্তির জয়ের দিন। তাই এই দিনটিকেই স্নানের জন্য বেছে নিয়েছেন মোদি, এমনটা মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। যদিও এই নিয়ে প্রধানমন্ত্রী দপ্তরের তরফে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। বরং এই দিনটির আরও একটি বিশেষত্ব নিয়ে আলোচনা চলছে। তা হল নির্বাচন। আসলে, এবারের দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের দিন হিসেবেও বেছে নেওয়া হয়েছে ফেব্রুয়ারির ৫ তারিখটিকেই। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি দিল্লির নির্বাচনে হিন্দুত্বের তাস খেলতেই মহাকুম্ভে ডুব দেওয়ার জন্য এই দিনটিকে বেছে নিয়েছেন নমো? এক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মত, মোক্ষলাভের চাইতে হিন্দু ভোটবাক্সের কথা মাথায় রেখেই গঙ্গায় ডুব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।