হিন্দু-বিদ্বেষী মন্তব্য করেছেন রাহুল গান্ধী। লোকসভা অধিবশনের পর, কংগ্রেস সাংসদ সম্পর্কে এমনই অভিযোগ গেরুয়া শিবিরের। এ বিষয়ে ঠিক কী দাবি শঙ্করাচার্যের। কী বলছেন হিন্দু ধর্মগুরু? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
লোকসভায় জোড়া আসন জিতে সংসদে ফিরেছেন রাহুল গান্ধী। শুরুতেই চোখা বক্তৃতায় নজর কেড়েছেন। বিজেপিকে নিশানা করে সরাসরি হিন্দু ধর্মের প্রসঙ্গ তুলেছেন। তাঁর দাবি, হিন্দুরা কখনই হিংসা ছড়ায় না। ধর্মের নামে গোটা দেশে হিংসা এবং ঘৃণা ছড়িয়ে চলেছে বিজেপি। এতেই সমালোচনার ঝড় বয়েছে। বিজেপি সমর্থকদের পালটা অভিযোগ, হিন্দু বিদ্বেষী মন্তব্য ছড়াচ্ছেন কংগ্রেস সাংসদ।
ঘটনার আঁচ পেয়েছেন শঙ্করাচার্যরাও। হিন্দু ধর্মের যে কোনও বিষয়ে তাঁদের মন্তব্য মান্যতা পায়। রামমন্দির প্রতিষ্ঠার সময়ও দেশের ৪ শঙ্করাচার্যের আপত্তি নিয়ে বেশ আলোচনা হয়েছিল। এবার রাহুলের হিন্দু মন্তব্য নিয়েও নিজের মত জানালেন উত্তরাখণ্ডের শঙ্করাচার্য অবিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী। তাঁর দাবি, লোকসভায় রাহুল যে বক্তৃতা দিয়েছেন তাতে হিন্দু ধর্মের প্রতি কোনও অশ্রদ্ধা নেই। বরং রাহুল যা বলেছেন তা সম্পূর্ণ সঠিক বলেই মনে করছেন অবিমুক্তেশ্বরানন্দ। আসলে, ধর্মের অর্থ ধারণা করা। সেখানে ঘৃণার জায়গা নেই। স্রেফ হিন্দু নয়, যে কোনও ধর্মের ক্ষেত্রেই একথা সত্যি। সংসদে দাঁড়িয়ে অভয়মুদ্রাও দেখান রাহুল। এই প্রতীকের সঙ্গে সব ধর্মের কী যোগসূত্র তার ব্যাখ্যাও দেন। সেই নিয়েও বিতর্ক কম হয়নি। ইসলামের সঙ্গে অভয়মুদ্রার কোনও যোগ নেই, এই দাবিতে সরব হন জনপ্রিয় মৌলবি। তবে রাহুলের মন্তব্যের সবথেকে বেশি বিরোধিতা করতে দেখা যায় বিজেপি নেতাদেরই।
বিরোধী দলনেতার বক্তব্যের মাঝেই আসরে নামেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রাহুলের হিন্দু মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেন তিনি। একইসঙ্গে বিজেপির বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানোর অভিযোগেরও প্রতিবাদ করেন। এভাবে কোনও দলকে দোষারোপ করা যায় না, এই দাবিতেই সোচ্চার হন শাহ। একইভাবে মোদি, রাজনাথ সহ অন্যান্য বিজেপি নেতারাও রাহুলের বিরোধিতা করেন সংসদে বসেই। সেই আবহ ছড়িয়ে পড়ে দেশজুড়ে। বিজেপি সমর্থকদের অধিকাংশই রাহুলের মন্তব্যের বিরুদ্ধে সরব হন। তবে কংগ্রেস নেতার মন্তব্যে হিন্দু ধর্মের কোনও অবমাননা নেই, এমনটা সাফ জানিয়ে দিলেন শঙ্করাচার্য। বরং রাহুলের বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে বলেই তার দাবি। এর জন্য বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে নিশানা করেছেন হিন্দু ধর্মগুরু। তাঁর অভিযোগ, রাহুলের বক্তব্যের নামে অর্ধসত্য প্রচার করা হচ্ছে। তাই রাহুলের সমর্থন রেখেই এই মন্তব্য সম্পর্কে নিজের মতপ্রকাশ করেছেন অবিমুক্তেশ্বরানন্দ।