রামলালার মূর্তি তৈরিতে বিশেষ পরামর্শ দিয়েছেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। মন্দির উদ্বোধনের আগে সামনে এল সেই তথ্য। কী এমন প্রযুক্তি থাকবে রামলালার মূর্তিতে? আসুন শুনে নিই।
অযোধ্যার মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত হবেন রামলালা। মূর্তির ছবি প্রকাশ্যে না এলেও, সম্প্রতি এর খুঁটিনাটি সম্পর্কে নতুন কিছু তথ্য সামনে এনেছে মন্দির কর্তৃপক্ষ। আর সেখান থেকেই জানা যাচ্ছে, মূর্তি তৈরিতে বিশেষ অবদান রয়েছে দেশের মহাকাশ বিজ্ঞানীদেরও।
আরও শুনুন: ১০০০ বছরেও দরকার হবে না মেরামতির, কী এমন প্রযুক্তি থাকছে রাম মন্দিরে?
ভাবছেন তো, রামের মূর্তি তৈরিতে মহাকাশ চর্চার কোন তত্ত্ব কাজে আসতে পারে?
তাহলে খুলেই বলা যাক। বিতর্কিত জমিতে মন্দির তৈরির অনুমতী পাওয়া মাত্র শুরু হয়েছিল, রামের মূর্তি কেমন হবে সেই জল্পনা। মন্দির কর্তৃপক্ষ প্রথমে কিছু না জানালেও, ধীরে ধীরে সামনে আসে মূর্তি বিস্তারিত বিবরণ। জানা যায়, মূর্তি তৈরি হবে বালক রামের আদলে। যেহেতু অযোধ্যার এই মন্দির রামের জন্মস্থান হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে, তাই এই মূর্তির এই বিশেষ রূপ। এমনকি গর্ভগৃহে যে রামের মূর্তি থাকবে তার পাশে মা সীতাও থাকবেন না বলেই জানা যায়। বলাই বাহুল্য, সীতা ছাড়া রামের মূর্তি বেশ বিরল। মূর্তি তৈরির জন্য নেপাল থেকে আনা হয় বিশেষ নারায়ণ শিলা। যা খোদাই করে শুরু হয় মূর্তি গড়ার কাজ। কিন্তু এখানেই চমকের শেষ নয়। মন্দির কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করে, একজন নয় রামলালার মূর্তি গড়বেন কয়েকজন শিল্পী। সেরার সেরা মূর্তিটিই গর্ভগৃহে প্রতিষ্ঠা করা হবে। সম্প্রতি সেই নির্বাচনও সম্পন্ন হয়েছে। রাম মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে কর্নাটকের শিল্পী অরুণ যোগীরাজের তৈরি মূর্তি। এবার সেই মূর্তি সম্পর্কে আরও কিছু তথ্য সামনে আনলেন রাম মন্দির কমিটির সেক্রেটারি চাম্পাত রাই।
আরও শুনুন: ‘মুসলিমরাও রামেরই উত্তরসূরি’, সমন্বয়ের বার্তা দিতেই রামজ্যোতি নিয়ে পথে নামছেন দুই মুসলিম তরুণী
মূর্তি সম্পর্কে যা কিছু এতদিন সকলে জানত, সেসব আরও একবার মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। সেইসঙ্গে জানিয়েছেন, মূর্তিটি দেখে মনে হবে কোনও ৫ বছরের বালক দাঁড়িয়ে। মূর্তির উচ্চতা ৫১ ইঞ্চি। রাই-এর কথায়, মূর্তিটির গড়ন এতটাই সুন্দর হয়েছে, যে একবার দেখলে চোখ ফেরানো যাবে না। এরপরই তিনি মহাকাশ বিজ্ঞানীদের প্রসঙ্গ টানেন। বিজ্ঞানীদের পরামর্শ মেনেই নাকি মূর্তির ওই মাপ নির্দিষ্ট করা হয়েছে।। শুধু তাই নয়, মূর্তিটি গর্ভগৃহের ঠিক কোন জায়গায় বসবে, কতটা উচ্চতা হবে সব মিলিয়ে, এই সবকিছুই বিজ্ঞানীদের পরামর্শ মেনে করা হয়েছে। নেপথ্যে অবশ্য বিশেষ এক কারণ রয়েছে। জানা গিয়েছে, বিজ্ঞানীদের পরামর্শ মেনে রামলালার মূর্তি ওই স্থানে রাখার প্রধান কারণ সূর্যের আলো মূর্তির উপর কীভাবে পড়বে সেটা দেখা। কর্তৃপক্ষের দাবি, মূর্তিটি এমন অবস্থানে রাখা হয়েছে, যার দরুন প্রতি বছর রাম নবমী তিথিতে ঠিক বেলা ১২ টায় সূর্যের আলো এসে পড়বে রামলালার কপালে। দেখে মনে হবে, স্বয়ং সূর্যদেব রামলালাকে আলো দিয়ে স্নান করাচ্ছেন। সূর্যের আলো এবং উচ্চতার ওই হিসাব নির্দিষ্ট করার জন্যই পরামর্শ দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এ দৃশ্য যে নৈসর্গিক হবে তা হলফ করে বলেছেন মন্দিরের প্রায় সকল সদস্যই। এবার সত্যি সত্যি তা কেমন দেখায়, তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও কয়েক মাস। প্রতি বছর চৈত্র মাসের শুক্ল পক্ষের নবমী তিথি রামনবমী হিসেবে পালিত হয়। মনে করা হয় এই দিনটিই রামের জন্মতিথি। ওইদিনেই রামলালার মূর্তির এই বিশেষ রূপ দেখা যাবে।