প্রধানমন্ত্রী কেন বড়দিন উদযাপনে অংশ নিয়েছেন? এমনই প্রশ্ন তুলে মোদির বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন কেরলের এক বিশপ। আপত্তি স্বপক্ষে বিশেষ যুক্তিও দেখিয়েছেন তিনি। ঠিক কেন প্রধানমন্ত্রী মোদির বিরুদ্ধে চটলেন খ্রিশ্চান ধর্মগুরু? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
প্রধানমন্ত্রীর হাতে রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠায় প্রবল আপত্তি জানিয়েছিলেন শঙ্করাচার্যরা। অযোধ্যার রামমন্দির উদ্বোধনেও অংশ নেননি তাঁরা। বছর শেষেও ফের মোদির ধর্মচর্চায় আপত্তি উঠল। এবার অবশ্য হিন্দু ধর্মগুরু নন, আপত্তি জানিয়েছেন কেরলের বিশপ।
বড়দিন খ্রিষ্টানদের প্রধান উৎসব। গোটা বিশ্বের মানুষ এই উৎসবে শামিল হন। বিশেষ ভাবে সাজানো হয় চার্চগুলিকে। বিভিন্ন ধর্মীয় নিয়ম পালন করা হয় সেখানে। যার দায়িত্ব থাকে খ্রিষ্টান ধর্মগুরুদের উপরই। ভারতেও এর ব্যতিক্রম হয় না। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা চার্চে বড়দিন উপলক্ষে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। খ্রিষ্টানরা তো বটেই, তাতে অংশ নেন অন্য ধর্মের সকলেই। সম্প্রতি দিল্লিতে ক্যাথলিক বিশপ কনফারেন্স অফ ইন্ডিয়া আয়োজিত ক্রিসমাস উদযাপনে অংশ নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। সেখানে যিশুর জন্মস্থানের আদলে গড়া ক্রিবের সামনে মাথা নত করতে দেখা যায় তাঁকে। নিজেই সেইসব ছবি পোস্ট করে দেশবাসীকে বড়দিনের শুভেচ্ছা জানান মোদি। কিন্তু তাঁর এই আচরনে বেজায় চটেছেন কেরলের এক বিশপ। দিল্লির ওই অনুষ্ঠানে মোদির উপস্থিতি নিয়ে প্রবল আপত্তি তাঁর। কিন্তু কেন?
নেপথ্যে রয়েছে কয়েকদিন আগেকার দুটি ঘটনা। এমনিতে দেশজুড়ে ক্রিসমাস উদযাপন হলেও, উন্মাদনা সবথেকে বেশি চোখে পড়ে কেরলে। সেখানকার বিভিন্ন চার্চে ঘটা করে আয়োজন হয় খ্রিষ্ট উৎসবের। বড়দিনের অনেক আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় তোড়জোড়। শুধু চার্চ কেন, স্কুল-কলেজও সাজানো হয় সুন্দর ভাবেই। এবারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু কিছু অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেছে কেরলের পালাক্কড় জেলায়। অভিযোগ, সেখানকার এক স্কুলের ক্রিসমাস অনুষ্ঠান পণ্ড করেছেন স্থানীয় কয়েকজন হিন্দুনেতা। নষ্ট করা হয়েছে ক্রিসমাস ক্রিবও। এই ঘটনাগুলির পরিপ্রেক্ষিতেই প্রধানমন্ত্রীর উপর ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন কেরলের ওই বিশপ। দিল্লির অনুষ্ঠানে মোদিকে ক্রিবের সামনে দেখে তিনি খানিক অবাক হয়েছেন। তাঁর কটাক্ষ, ওখানে প্রধানমন্ত্রী ক্রিবের সামনে মাথা নত করছেন, আর এখানে ক্রিব ধ্বংস করা হচ্ছে। যদিও ক্রিসমাস অনুষ্ঠান পণ্ড করার অভিযোগ গুরুত্ব দিয়েই দেখেছে প্রশাসন। ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে ঘটনায় অভিযুক্ত ৩ জনকে। বিষয়টা নিয়ে তদন্ত চলছে। এই আবহে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিশপের এই ক্ষোভ নতুন করে বিতর্ক উসকে দিল।