রাম মন্দিরের উদ্বোধন ঘিরে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে অযোধ্যায়। সেই আবহেই আচমকা পুরনো বিতর্ক উসকে দিলেন কর্নাটকের ধর্মগুরু। দাবি করলেন, বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে ঠিক কাজ করেনি হিন্দুরা। ঠিক কী বলেছেন তিনি? শুনে নেওয়া যাক।
মসজিদ ভেঙে সেই জমিতে বানানো হবে মন্দির। এই হুঙ্কার দিয়েই তিন দশক আগে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল অযোধ্যার বাবরি মসজিদ। জমির মালিকানা চেয়ে মন্দির ও মসজিদ পক্ষের টানাপোড়েনের মধ্যেই ঘটে গিয়েছিল এই ঘটনা। অশান্তি আর আইনি বিতর্কের দীর্ঘ পথ পেরিয়ে সেই বিতর্কিত জমিতেই গড়ে উঠেছে রাম মন্দির। রামজন্মভূমিতে ফিরছেন রামলালা, এই ভাবনাতেই উচ্ছ্বসিত হিন্দু ভক্তরা। কিন্তু এই আবহেই তিন দশকের পুরনো সেই বিতর্ক উসকে দিলেন কর্নাটকের ধর্মগুরু। নিড়ুমামিড়ি মঠের শ্রী বীরভদ্র চান্নামাল্লা স্বামীজি সম্প্রতি বলেছেন, বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে ঠিক কাজ করেনি হিন্দুরা।
আরও শুনুন: রামচরিত: বাংলার আছে নিজস্ব ‘অযোধ্যা’, এখনও বইছে ক্ষীণস্রোতা ‘সরযূ’
অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতে মসজিদ থাকবে না মন্দির, তা নিয়ে এতদিন কম জলঘোলা হয়নি। হিন্দু পক্ষের দাবি, মন্দির ধ্বংস করেই একসময় মসজিদ গড়ে তোলা হয়েছিল ওই জমিতে। সেই দাবি মেনে নিয়েও মন্দির ভাঙার বিপক্ষেই সওয়াল করেছেন ওই ধর্মগুরু। তাঁর বক্তব্য, একই জমিতে মন্দির গড়তে হবে, এই দাবির নেপথ্য আবেগ বোঝা শক্ত নয়। কিন্তু মনে রাখতে হবে, মন্দির ভাঙার সিদ্ধান্ত সাধারণ মুসলিম বাসিন্দারা নেননি, সেই সিদ্ধান্ত ছিল শাসকের। সুতরাং তার দায় মুসলিম আমজনতার উপর চাপাতে নারাজ এই ধর্মগুরু। তিনি সাফ জানিয়েছেন, কোনও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানই ভেঙে ফেলা উচিত কাজ নয়। তা ছাড়া এই ইস্যুতে আদালতে মামলা চলছিলই, এবং শেষ পর্যন্ত আদালতের রায়েই মন্দির গড়া শুরু হয়েছে। সুতরাং নিজের হাতে আইন তুলে নিয়ে সেই প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করার কোনও দরকার ছিল না বলেই মনে করেন তিনি।
আরও শুনুন: রামচরিত: যুদ্ধের দিনে প্রেম… কম্বনের রামায়ণ যেন ব্যক্তিগত ঈশ্বরীতলার রূপকথা
বাবরি ধ্বংসের পর অযোধ্যায় যেমন হিংসা ছড়িয়েছিল, তেমনই তার প্রভাব পড়েছিল সারা দেশেই। সেই অশান্তির পরিবেশ যাতে তৈরি না হয়, সে কথা মাথায় রেখেই আসলে মসজিদ ভাঙার বিপক্ষে সওয়াল করেছেন এই ধর্মগুরু। তবে তাঁর এই মন্তব্যে ফের উসকে উঠল সেই পুরনো বিতর্কই।