‘বিকশিত ভারত’ বার্তা পাঠানো নিয়ে নিষেধাজ্ঞা নির্বাচন কমিশনের। কিন্তু ইতিমধ্যেই যাঁরা সে বার্তা পেলেন, তা নিয়ে চিন্তাভাবনাও শুরু করলেন, সেই ভাবনার দরজা বন্ধ করবে কে!
হোয়াটসঅ্যাপে আর পাঠানো যাবে না বিকশিত ভারতের বার্তা। অবিলম্বে এই প্রচার বন্ধ করার জন্য মোদি সরকারকে নির্দেশ দিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু কথা হল, ইতিমধ্যেই তো এই বার্তা পৌঁছে গিয়েছে প্রচুর মানুষের কাছেই। কেবল দেশে নয়, বিদেশে থাকা অনেক ভারতীয়ও হোয়াটসঅ্যাপে এই বার্তা পেয়েছেন বলে দাবি। এই বার্তায় যে বিকশিত ভারতের প্রতিশ্রুতি মিলেছে, স্বাভাবিকভাবেই তার প্রভাবও তো পড়েছে অনেকের উপরেই। এখন বার্তা পাঠানোর পথ নাহয় বন্ধ হল, কিন্তু সে বার্তা যে ভাবনার পথ খুলে দিয়েছে, সে পথ বন্ধ করবে কে! সরকারি প্রকল্পের খতিয়ান, সরকারের পরবর্তী কার্যক্রমের আশ্বাস যে জনমত গড়ে তুলল ইতিমধ্যেই, সেই তৈরি হওয়া মতামত কি ফিরবে আর!
-: আরও শুনুন :-
আমিষ-নিরামিষে দ্বন্দ্ব অহর্নিশ! বহু রূপে সম্মুখে ফিরছে জাতের ভাগাভাগিই?
সম্প্রতি দেশবাসী দেখেছে, ‘আমার প্রিয় পরিবার’, এই সম্বোধন করে হোয়াটসঅ্যাপে চিঠি পাঠাচ্ছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। চিঠির প্রেরকের জায়গায় তাঁরই সই, হোয়াটসঅ্যাপের প্রোফাইল পিকচারেও তাঁরই ছবি। বিকশিত ভারত নিয়ে কেন্দ্রের তরফে ওই বার্তা পাঠানো হয়েছে, যেখানে ২০৪৭ সালের মধ্যে উন্নত ভারত গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, গত ১০ বছরে ভারতের ১৪০ কোটির বেশি জনগণ সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে উপকৃত হয়েছেন। আগামী দিনেও তাঁরা উপকৃত হবেন। কিন্তু কথা হল, নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার পর, আদর্শ আচরণবিধি জারি থাকার সময় সরকার বা প্রশাসন কোনও জনমোহিনী প্রকল্প ঘোষণা বা তার প্রচার করতে পারে না। এমনকি পরিকাঠামো উন্নয়ন সংক্রান্ত কোনও প্রতিশ্রুতি দিতে পারে না। সেখানে এই বার্তা নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, সরকারি অর্থ ব্যবহার করে ভোটের আগে সরকারি প্রকল্পের প্রচার করছেন মোদি। নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগের জেরেই এবার এই প্রচারে নিষেধাজ্ঞা টেনেছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু ভোটের ঠিক আগে আগেই দেশবাসীর কাছে যে ব্যক্তিগতভাবে এই বার্তা পৌঁছল, তা যে জনমত গড়ে তুলতে শুরু করেছে, সেই মতামত তো জারি রইলই। সে প্রভাব এড়িয়ে আঙুলের কালি কি আর সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে কথা বলতে পারবে? প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যায়।