প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে কোনও সাংবাদিক সম্মেলনে অংশ নেননি নরেন্দ্র মোদি, এমন দাবি দেশ-বিদেশের অধিকাংশ সংবাদমাধ্যমই করে থাকে। এমনকি বিরোধীদের মুখেও হামেশাই এই অভিযোগ শোনা যায়। কিন্তু সত্যিই কি তাই? নাকি আসল সত্যিটা আদৌ সেরকম নয়? আসুন শুনে নিই।
দেশের মাটিতে প্রায়শই বক্তৃতা দিয়ে থাকেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু তার অধিকাংশই রেকর্ড করা কিংবা একমুখী। সাংবাদিক সম্মেলনে প্রশ্নোত্তরের মুখোমুখি হতে চান না মোদি, অনেকেই তাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তোলেন। তবে সম্প্রতি মার্কিন সফরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে সাংবাদিকের চোখা প্রশ্নের উত্তরও দিয়েছেন। এরপরই মোদির সংবাদ-সম্মেলনে অনীহার অভিযোগ আদৌ সত্যি কি না, তা নিয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে।
আরও শুনুন: প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে ‘মোদিজি থালি’, নতুন চমক আমেরিকার রেস্তরাঁয়
অন্যের প্রশ্নের জবাব দিতে প্রধানমন্ত্রীর বরাবরের অনীহা, দীর্ঘদিন ধরেই মোদির বিরুদ্ধে এই অভিযোগে সরব হয়েছে একাধিক বিরোধী রাজনৈতিক দল। এর সঙ্গে সুর মিলিয়েছে দেশ-বিদেশের সংবাদমাধ্যমগুলিও। সম্প্রতি নিউ ইয়র্ক টাইমস দাবি করে, ২০১৪ সালে ভারতের মসনদে বসার পর থেকে একবারও সাংবাদিক সম্মেলন করেননি মোদি। সেইসঙ্গে তাঁরা উল্লেখ করেন, মার্কিন সফরে সম্ভবত প্রথমবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হবেন মোদি। আর এই নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। মার্কিন সংবাদমাধ্যমের এই দাবি যে একেবারেই সত্যি নয়, তা টুইটে জানিয়েছেন সৈয়দ আকবরউদ্দিন। একসময় দেশের হয়ে রাষ্ট্রসংঘে প্রতিনিধিত্ব করেছেন বিদেশ মন্ত্রকের এই প্রাক্তন আমলা। তাঁর দাবি, প্রধানমন্ত্রী মোদি ২০১৫ সালে হায়দ্রাবাদে একটি সাংবাদিক সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন। প্রমাণ হিসেবে সেই সম্মেলনের ভিডিও লিঙ্কও টুইটে জুড়ে দিয়েছেন তিনি। নেটদুনিয়ায় আকবরউদ্দিনের এই দাবিকে সমর্থন জানিয়েছেন অনেকেই। তাঁরাও একযোগে মার্কিন সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন।
আরও শুনুন: ভারতে সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে মোক্ষম প্রশ্ন মোদিকে, কে এই সাবরিনা সিদ্দিকি?
তবে আকবরউদ্দিনের যুক্তিও যে পুরোপুরি সত্যি নয়, এই দাবিও তুলেছে বিরোধী শিবিরের একাংশ। তাদের দাবি, ২০১৯ সালের মে মাসে মোদি একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেছিলেন। কিন্তু সেখানে সাংবাদিকদের কোনও প্রশ্নের উত্তর দেননি। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের তরফেও সেকথার সমর্থন মিলেছে। অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে যে সাংবাদিক সম্মেলনে মোদি অংশ নিয়েছেন, তা নিয়েও চর্চা চলছেই। সেখানে সরাসরি দেশে সংখ্যালঘুদের অবস্থান, তাদের প্রতি বৈষম্য, এসব নিয়েই মোদিকে চোখা প্রশ্ন করেছেন এক মার্কিন সাংবাদিক। গণতন্ত্রকে হাতিয়ার করেই সেই প্রশ্নের উত্তরও দিয়েছেন মোদি। কিন্তু সেই উত্তর নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। সব মিলিয়ে মোদির মার্কিন সফর ও সাংবাদিক সম্মেলন ঘিরে যথেষ্ট উত্তেজনা তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।