একটা টুকরো খবর। আর পুলিশের যথাসময়ে গিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছানো। একটু এদিক ওদিক হলেই প্রাণ চলে যেত এক দুধের শিশুর। কেননা মৃত বাবার দেহে প্রাণ ফেরাতে শিশুটিকে বলি দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল এক যুবতী। রীতিমতো পরিকল্পনা করেই শিশুটিকে অপহরণ করেছিল ওই যুবতী। আসুন শুনে নিই।
প্রাণ ফেরাতে হবে মৃত বাবার দেহে। সে কারণেই একটি শিশুকে বলি দেওয়া জরুরি। এমন কথা শুনে সত্যিই সেরকম উদ্যোগ নিয়েছিল বছর ২৫-এর এক যুবতী। পুলিশের তৎপরতায় শেষমেশ প্রাণরক্ষা হয় শিশুটির।
আরও শুনুন: রূপের নেশায় ঘায়েল মাফিয়া ডনও! প্রেমের ‘ফাঁদ’ পেতেই আসামিদের ধরেন এই মহিলা পুলিশকর্মী
ঘটনা দিল্লির। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, গত অক্টোবরে বাবা মারা গিয়েছে ওই যুবতীর। তখনই সে শুনেছিল এক অদ্ভুত বিশ্বাসের কথা। সমলিঙ্গের কোনও শিশুকে বলি দিলেই মৃত ব্যক্তি নাকি প্রাণ ফিরে পাবে। এই কুসংস্কারের বশবর্তী হয়েই একের পর এক অদ্ভুত কাণ্ড করে যুবতী। শিশুবলির জন্য মানসিক ভাবে নিজেকে তৈরি করে। আর শিশুর খোঁজে নিজে সাজে এনজিও কর্মী।
আরও শুনুন: একই ছাদের তলায় বাস প্রেমিক ও স্বামীর, ‘ত্রিকোণ সম্পর্কে’ও সুখে সংসার মহিলার
অপহৃত শিশুটির বয়স মাস দুয়েক। হাসপাতালে শিশুটির মায়ের সঙ্গে দেখা করে ওই মহিলা। আলাপ-পরিচয় সেরে জেনে নেয় বাড়ির ঠিকানা। শিশুটির মাকে যুবতী জানায়, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে বিনামূল্যে শিশুটির চিকিৎসা এবং ওষুধপত্রের ব্যবস্থা করা হবে। সেই সুবাদেই শিশুটির বাড়িতে আসা-যাওয়া শুরু করে সে। ঘটনার দিন দুই আগে শিশুটির বাড়িতে আসে ওই যুবতী। স্বাস্থ্যপরীক্ষার পর চলেও যায়। পরদিন ফের ওই শিশুটিকে দেখতে আসে যুবতী। সেদিন সে জানায়, শিশুটিকে একটু বাইরে নিয়ে যাওয়া দরকার। শিশুটির মা যুবতীকে বিশ্বাস করে সেই প্রস্তাবে রাজি হন। তবে একেবারে অপরিচিতের হাতে না ছেড়ে সঙ্গে তাঁর ভাইজি ঋতুকে পাঠান। বেশ কিছুটা যাওয়ার পর যুবতী ঋতুকে ঠান্ডা পানীয় খাইয়ে অজ্ঞান করে ফেলে। তারপর ঋতুকে ফেলে রেখে শিশুটিকে নিয়ে চম্পট দেয়। একটু পরে জ্ঞান ফিরলে, ঋতু বাড়ির লোককে সব জানায়। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের দ্বারস্থ হয় পরিবার। ঋতুর মুখে রাস্তার বিবরণ শুনে পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ সূত্রে ওই যুবতীকে চিহ্নিত করে ফেলে। আর একটু খোঁজখবর করে জানা যায়, স্থানীয় এক মন্দিরের কাছে যুবতীকে দেখা গিয়েছে। এরপরই তল্লাশি চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয় ওই যুবতীকে।
আরও শুনুন: বিপাকে পর্ন তারকা! ‘নকল’ বন্দুক দেখে শুটিংয়ে হানা ‘আসল’ পুলিশের
পুলিশের খাতা বলছে, এর আগেও অপরাধমূলক কাজে নাম জড়িয়েছিল ওই যুবতীর। তবে কি এবার ছিল শিশুপাচারের ছক! জেরায় যুবতী স্বীকার করেছে, মৃত বাবাকে ফিরে পেতে বলি দেওয়ারই উদ্যোগ নিয়েছিল সে। সদ্যোজাত শিশুর খোঁজে সে হাসপাতালে প্রসূতি বিভাগে ঢুঁ দেয়। তারপর এই শিশুটিকে অপহরণের পরিকল্পনা করে। শিশু অপহরণের অভিযোগে বছর পঁচিশের ওই যুবতীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।