‘গরবা’-র অনুষ্ঠানে প্রবেশ করতে পারবে না কোনও অহিন্দু। তাই সেখানে ঢোকার আগে সবার কপালেই পরানো হবে ধর্মীয় তিলক। সেইসঙ্গে গায়ে ছিটানো হবে গোমূত্র। সম্প্রতি এমনই নিদান জারি করেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের গুজরাট শাখা। এ বিষয়ে ঠিক কী বলছেন সংগঠনের সদস্যরা? আসুন শুনে নিই।
গরবা নাচতে গেলে নিজেকে হিন্দু হিসেবে প্রমাণ করতে হবে। তার জন্য কপালে পরতে হবে ধর্মীয় তিলক। আর গায়ে মাখতে হবে গোমূত্র। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। এবার ঠিক এভাবেই গরবা অনুষ্ঠানে নাচার জন্য ঢুকতে হবে হিন্দুদের।
আরও শুনুন: বস্তাভর্তি খুচরো কয়েন নিয়ে আইফোনের দোকানে ‘ভিখারি’, কী হল তার পর?
বাংলায় যখন দুর্গাপুজো। উত্তরভারতে তখনই মহাসমারোহে পালিত হচ্ছে নবরাত্রি। উৎসবের মূল আকর্ষণ গরবা নাচ। স্রেফ এই অনুষ্ঠানের জন্যই গুজরাটের আহমেদাবাদ জগতখ্যাত। একইসঙ্গে সেখানে গোটা নবরাত্রি উৎসব ঘিরেই চলে রীতিমতো উন্মাদনা। কিন্তু এই উৎসব সবার জন্য নয়। কেবলমাত্র হিন্দু ছাড়া নবরাত্রি বা গরবা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের অধিকার নেই কারও। আর এমন নিয়ম তৈরি করেছেন বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠনই। প্রতিবছর, ‘গরবা’ অনুষ্ঠানে অহিন্দুদের ‘প্রবেশ নিষেধ’, এই জাতীয় ফতোয়া নিয়ে হাজির হন তাঁরা। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। গুজরাটের বিশ্ব হিন্দু পরিষদ সরাসরি জানিয়ে দিয়েছে, কোনও অহিন্দু গরবায় অংশ নিতে পারবে না। আর সেই নিয়মের বেড়াজাল মজবুত করতেই তাঁরা অদ্ভুত এক ব্যবস্থার কথা বলেছেন। তাঁদের দাবি, গরবা অনুষ্ঠানে যাঁরাই প্রবেশ করবেন তাঁদের সকলের কপালে দেওয়া হবে ধর্মীয় টিকা। সেইসঙ্গে ঢোকার সময় ছিটানো হবে গোমূত্র। হিন্দু এবং মুসলিমের মধ্যে বিয়ের ঘটনা ঘটলে প্রায়শই তাকে ‘লাভ জিহাদ’ বলে দাগিয়ে দিয়ে থাকেন উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। তাঁদের দাবি, কোনও প্রেম ভালবাসার টানে নয়, এই বিয়ে নিছকই এক ধর্মীয় চাল। আসলে হিন্দু মেয়েদের ভুলিয়েভালিয়ে বিয়ে করতে চায় মুসলিম ধর্মাবলম্বী পুরুষেরা। তারপর জোর করে মেয়েটির ধর্মান্তর করে এবং তার গর্ভে একাধিক সন্তানের জন্ম দিয়ে মুসলিম জনসংখ্যা বাড়ানোই তাদের লক্ষ্য, এমনটাই দাবি হিন্দুত্ববাদীদের। আর এই ইস্যু টেনেই এবার গুজরাটের হিন্দু পরিষদ গোমূত্র ও তিলকের ফরমান জারি করেছেন। ইতিমধ্যেই সে রাজ্যের একাধিক গরবা আয়োজক সংস্থাকে এই নিয়ম চালু করার আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা।
আরও শুনুন: হাত থেকে পড়ে মোবাইলে স্ক্র্যাচ! পুজোর আগে দাগ মুছে, সাজিয়ে ফেলুন পুরনো মোবাইল
এর আগেও ২০১৪ সালে গরবা প্যান্ডেলে মুসলিম সম্প্রদায়কে ঢুকতে না দেওয়ার দাবি তুলেছিলেন ঊষা ঠাকুর। নিজের বিধানসভা কেন্দ্রের গরবা উদ্যোক্তাদের তিনি চিঠি লিখে আর্জি জানিয়েছিলেন, গরবা প্যান্ডালে যেন মুসলিমদের ঢুকতে না দেওয়া হয়। এমনকি কোনও মুসলিম পুরুষ যেন হিন্দু মহিলাদের সঙ্গে কথা বলতে না পারেন, তা নিশ্চিত করারও দাবি জানিয়েছিলেন তিনি। আর এবার ফের সেই একই ইস্যু গুজরাটে গরবা অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার নিয়ম জারি করল হিন্দু পরিষদ।