সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে সংবিধান এ দেশের সবচেয়ে চর্চিত বিষয়গুলির মধ্যে একটি। ভোট থেকে শপথ, সংবিধানকে হাতিয়ার করছে রাজনৈতিক মহল। এই পরিস্থিতিতেই, বিয়েতেও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠল সেই সংবিধানই। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
কোনও গণতান্ত্রিক দেশে সংবিধানের তাৎপর্য নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। তবে এ দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে সংবিধান বিষয়টি যেন আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজনৈতিক মহল থেকে সংসদ ভবন, বারেবারে চর্চায় উঠে আসছে সংবিধান। তবে শুধু রাজনৈতিক মহলেই আটকে নেই, এমনকি বিয়ের আসরেও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে সংবিধান।
আরও শুনুন:
নানা ভাষা, নানা মতের বাহন নানা স্লোগান… সংসদে শপথে হাজির রাম থেকে ভীম
দেশের সংবিধানই বদলে ফেলতে চায় বিজেপি, বারে বারেই এই অভিযোগে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। বাস্তবিকই, নয়া সংসদ ভবনে প্রথমবার অধিবেশনের সময় রীতি মেনে সাংসদদের যে বিশেষ উপহার দেওয়া হয়েছিল, সেখানে সংবিধান ছিল বটে, তবে সেই কপিগুলির ‘প্রস্তাবনা’ থেকে উড়ে গিয়েছিল ‘সেকুলার’ ও ‘সোশালিস্ট’ শব্দ দুটি। অর্থাৎ সংবিধানের প্রস্তাবনায় দেশের যে ছবিটিকে দীর্ঘদিন ধরে তুলে ধরা হয়েছে, তা অনেকখানিই পালটে যায় এই নয়া সংবিধানের বক্তব্যে। লোকসভা ভোটের প্রচারে বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের অন্যতম হাতিয়ার ছিল এই সংবিধান। লোকসভা ভোটের ফল ঘোষণার পর সংবিধানে মাথা ঠেকিয়েছেন মোদি। একইভাবে সাংবাদিক সম্মেলনে সংবিধানের ‘পকেট এডিশন’ নিয়েই হাজির হয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। সংসদে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানেও সংবিধান তাঁর নিত্যসঙ্গী। প্রধানমন্ত্রী মোদির শপথবাক্য পাঠের সময় সারাক্ষণ সংবিধান উঁচু করে ধরেছিলেন রাহুল। আবার তাঁর পুরনো কেন্দ্র অমেঠি থেকে জিতে আসা কংগ্রেসের কিশোরীলাল শর্মার হাতেও সংবিধান তুলে দেন রাহুল।
আরও শুনুন:
ভিনধর্মে বিয়ে মানেই ‘লাভ জিহাদ’ নয়! সোনাক্ষীর আগেও বুঝিয়েছেন বলি তারকারা
কিন্তু এ তো গেল রাজনীতির কথা। বিয়ের প্রসঙ্গেও সগৌরবে হাজির সংবিধান। আসলে অভিনেতা ও সাংসদ শত্রুঘ্ন সিন্হার মেয়ে অভিনেত্রী সোনাক্ষী সিন্হা সম্প্রতি বিয়ে করেছেন ইসলাম ধর্মাবলম্বী জাহির ইকবালকে। আর সেই বিয়ে নিয়েতেই ‘লাভ জিহাদ’-এর ধুয়ো তুলে সরব হিন্দুত্ববাদীরা। এবার সংবিধানকে হাতিয়ার করেই তাদের পালটা জবাব দিলেন খোদ শত্রুঘ্ন সিনহা। তিনি সাফ জানালেন, ‘‘আমার মেয়ে কোনও ভুল কাজ করেনি। যা করেছে দেশের সংবিধান মেনে করেছে।” সত্যিই তো, এ দেশের সংবিধান যে কোনও মানুষকে তার নিজস্ব বিশ্বাস মেনে ধর্মাচরণের অধিকার দেয়। একইসঙ্গে, সে সংবিধানই গণতন্ত্রের কথা বলে, অর্থাৎ ভিন্নমত জারি রাখারও অধিকার দেয়। সেই আদর্শ মেনে দুই ভিনধর্মের মানুষ একসঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নিতেই পারেন, তাতে অন্যায়ের কিছু নেই। আর সংবিধানের প্রসঙ্গ টেনেই সে কথা বুঝিয়ে দিলেন সাংসদ শত্রুঘ্ন সিন্হা।