ফ্যাশন শো-তে হাঁটছেন একদল তরুণী। সকলের পরনেই নানা রঙের বোরখা। আর তা দেখেই চটে লাল ইসলামি ধর্ম সংগঠন। ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের অভিযোগেই সরব তাঁরা। কী ঘটেছে ঠিক? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
ফ্যাশন শো মানেই নানারকমের বাহারি পোশাকের মেলা। সে পোশাক অনেকসময়েই রীতিমতো খোলামেলা, সাহসীও বটে। কিন্তু এই ফ্যাশন শো সেই চেনা ছকে হাঁটেনি। এখানেও র্যাম্প ছিল, ছিল র্যাম্প ওয়াকও, কিন্তু সেখানে যে তরুণীরা হেঁটেছেন তাঁদের সকলেরই আপাদমস্তক ঢাকা ছিল বোরখায়। পরনে বোরখা, মাথা ঢাকা হিজাবে, এইভাবেই দিব্যি ফ্যাশনিস্তার মতো আদবকায়দায় র্যাম্প ধরে একের পর এক হেঁটে গিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু সেই ঘটনা ঘিরেই উসকে উঠেছে বিতর্ক। বোরখা পরে র্যাম্পে হেঁটে বোরখার অসম্মান করেছেন ওই তরুণীরা, এই মর্মে অভিযোগ এসেছে মুসলিম ধর্ম সংগঠনের তরফে। আর সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই নতুন করে সরগরম যোগীরাজ্য উত্তরপ্রদেশ।
আরও শুনুন: ভিনদেশের মাটিতে হিন্দু ধর্মের প্রচার, উপার্জনের কোটি কোটি টাকা দান চিকিৎসকের
সত্যি বলতে, সাম্প্রতিক কালে বোরখা নিয়ে কম বিতর্ক দেখেনি এ দেশ। স্কুল-কলেজে পোশাকবিধিকে মান্যতা দিতে চেয়ে বোরখায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা, কিংবা পরীক্ষায় নকল করা রুখতে বোরখায় আপত্তি জানানো, এমন একাধিক ঘটনাতেই সাম্প্রদায়িক রং লেগে গিয়েছে অনেকসময়। এবার বোরখা নিয়েই নয়া বিতর্কের মুখোমুখি যোগীরাজ্য। জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশে মুজফফরনগরের শ্রীরাম কলেজের অনুষ্ঠানে ফ্যাশন শো-এর বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। ওই মুসলিম তরুণীরা একটি বিশেষ বার্তা দেওয়ার জন্যই হিজাব ও বোরখা পরে ফ্যাশন শো করতে চেয়েছিলেন। তাঁদের বক্তব্য, পোশাকের স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে ফ্যাশনের আদতে কোনও বিরোধ নেই। কেউ যদি বোরখা ছাড়া স্বচ্ছন্দ না হন, তবে তিনি বোরখা পরেই কেতাদুরস্ত হয়ে থাকতে পারেন, এমনটাই প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন তাঁরা। সেই কারণেই নানা রঙের, নানা ধরনের বোরখা ও হিজাব পরে তাঁরা র্যাম্পে হেঁটেছেন।
আরও শুনুন: ‘ভূতে ধরেছে’ মহিলাকে! মুসলিম হলে তবেই ‘ঝাড়ফুঁক’, যোগীরাজ্যে অদ্ভুত দাবি মৌলবির
কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তার উলটো ফল ঘটেছে। বোরখা পরে র্যাম্পে হেঁটে আসলে বোরখার অপমান করেছেন ওই তরুণীরা, এই অভিযোগে সরব জামিয়াত-ই-উলেমা। ওই মুসলিম তরুণীরা ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করেছেন বলেই আক্রমণ শানিয়েছেন সংগঠনের মুসলিম নেতারা। এমনকি এই ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে ঘটলে আইনি পথে হাঁটার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তাঁরা। সব মিলিয়ে বোরখা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক উসকে উঠেছে যোগীরাজ্যে।