প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিজের বাড়িতে আপ্যায়ন করেছিলেন কাশ্মীরের এই নেতা। উপত্যকা থেকে বিজেপি শিবিরে যোগ দেওয়া প্রথম মুসলিম নেতা তিনিই। ৩৭০ ধারার বিলোপের পরেও মুখ খুললেন তিনি। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
৩৭০ ধারার পাকাপাকি বিলোপ নিয়ে খুশি নন কাশ্মীরের প্রায় কোনও নেতাই। কিন্তু তাঁদের মধ্যে ব্যতিক্রম এই মুসলিম নেতা। এই ইস্যুতে কেন্দ্রের মোদি সরকারকে খোলাখুলি সমর্থন জানিয়েছেন তিনি। তা অবশ্য বিশেষ অস্বাভাবিকও নয়। কারণ, উপত্যকা থেকে প্রথম যে মুসলিম নেতা বিজেপি শিবিরে যোগ দিয়েছেন, তিনি ইনিই। মহম্মদ আশরাফ আজাদ।
আরও শুনুন: ১০০০ বছরেও দরকার হবে না মেরামতির, কী এমন প্রযুক্তি থাকছে রাম মন্দিরে?
হালে নয়, সেই নয়ের দশকেই গেরুয়া শিবিরের পতাকা হাতে নিয়েছিলেন এই মুসলিম নেতা। তিনি জানিয়েছেন, ১৯৯২ সালে যখন শ্রীনগরে তিরঙ্গা যাত্রা করতে আসেন বিজেপি নেতারা, সেই সময়েই প্রথমবার তাঁদের সঙ্গে মোলাকাত হয়েছিল আশরাফের। তাঁর বক্তব্য, বিজেপি নেতাদের কথা শুনে তাঁর মনে হয়েছিল এঁদের হাতে ক্ষমতা থাকলে তবেই কাশ্মীর ভূস্বর্গ হয়ে থাকবে। আর সেই কারণেই পদ্ম শিবিরে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। সেই সময়েই তিনি জানতেন যে বিজেপি ৩৭০ ধারা বাতিল করতে চায়। দলের মত মেনেই সেই সিদ্ধান্তেও কোনও আপত্তি ছিল না তাঁর।
আরও শুনুন: রাম মন্দিরের পুরোহিতের অশ্লীল ভিডিও ‘ভুয়ো’! প্রকাশ করে গ্রেপ্তার কংগ্রেস নেতা
বস্তুত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা থাকবে কি থাকবে না, তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই তর্কবিতর্ক চলেছে। মোসি সরকারের জমানায় ২০১৯ সালেই সংবিধানের এই ধারাটি বাতিল করা হয়। তারপরেও ৩৭০ ধারা পুনর্বহাল করার দাবি জানিয়ে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, কাশ্মীরের ওই বিশেষ মর্যাদা অস্থায়ী ছিল। সংবিধান মেনেই ৩৭০ ধারা বাতিল করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সহ বিজেপি শিবিরের তরফ থেকে এই রায়কে স্বাগত জানানো হয়েছে অকুণ্ঠভাবে। কিন্তু দেশের শীর্ষ আদালত যাই বলুক না কেন, এই চূড়ান্ত রায় খুশি মনে মেনে নিতে পারছেন না গুলাম নবি আজাদ, মেহবুবা মুফতি, অমর আবদুল্লার মতো কাশ্মীরের নেতারা, ৩৭০ ধারা বিলোপের বিরোধিতায় প্রথম থেকেই যাঁরা আন্দোলন চালাচ্ছিলেন। প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ বর্তমানে মোদি-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত, কিন্তু তিনিও এই রায়কে দুঃখের এবং দুর্ভাগ্যজনক বলেছেন। আর সেখানেই বড় ব্যতিক্রম মহম্মদ আশরাফ আজাদ। তিনি সাফ জানাচ্ছেন, ২০১৯-এর ৫ আগস্ট যখন ৩৭০ ধারা বাতিল হয়, সেদিন কোনও হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেনি। যেমনটা ঘটেনি এবারেও। যারা আগে হিংসা ছড়াত, তারাই বর্তমান রায়ে অখুশি- এমনটাই দাবি আশরাফ আজাদের। মোদি-শাহের উপর অগাধ ভরসা প্রকাশ করে তিনি বলছেন, রাজনৈতিক স্বার্থেই এই ধারার অপব্যবহার করেছে বিভিন্ন দল। কিন্তু ৩৭০ ধারা বাতিলের ফলেই কাশ্মীরের যথার্থ উন্নয়ন সম্ভব হবে, প্রধানমন্ত্রীর উপরে আস্থা রেখেই জানিয়ে দিলেন আজাদ।