শ্রী জগন্নাথদেবকে ‘মোদি ভক্ত’ বলে বিতর্কে জড়িয়েছেন পুরীর বিজেপি প্রার্থী সম্বিত পাত্র। ক্ষমা চেয়ে প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে উপবাসও শুরু করেছেন তিনি। কিন্তু সেসবের কোনও দরকার নেই বলেই বিজেপি প্রার্থীকে পরামর্শ বিজেডি নেতার। নেহাতই সৌজন্য নাকি আড়ালে অন্য কিছু? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
শ্রী জগন্নাথদেবও মোদির ভক্ত! বিতর্কিত মন্তব্য করে তুমুল বিপাকে পড়েছেন বিজেপির মুখপাত্র সম্বিত পাত্র। যদিও নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন, প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে আগামী তিন দিন উপবাস করেই কাটাবেন। কিন্তু বিজেপি নেতাকে এমন কিছু না করারই পরামর্শ দিয়েছেন বিজেডি নেতা ভি কে পাণ্ডিয়ান।
আরও শুনুন: পদ্মশ্রী-প্রশংসা সব অতীত, ভাত জোটাতে এখন নির্মাণ-শ্রমিক হয়েই দিন কাটছে ‘শিল্পী’র
বন্দুকের গুলি আর মুখের কথা, একবার বেরিয়ে গেলে ফেরানোর উপায় নেই! তাই কথা বলার সময় সাবধান না হলে বিপদে পড়তে বাধ্য। আর ভোটের আবহে এই ধরনের বিপদের ভয়ে সবসময় যেন কাঁটা হয়ে থাকেন নেতারা। মুখ ফসকে কিছু বললেই সব শেষ। মানহানির মামলা থেকে বিভিন্ন স্তরে বিক্ষোভের শিকার, সবই হতে পারে স্রেফ বেফাঁস মন্তব্যের জেরে। যদিও এ দেশে আখচার এমন ঘটনা ঘটতেই থাকে। কখনও বুঝে, কখনও আবার না বুঝেই এমন কিছু বলে ফেলেন নেতারা, যার মাশুল গুনতে হয় গোটা দলকে। সম্প্রতি এমনই কাণ্ড ঘটিয়েছেন বিজেপি মুখপাত্র তথা পুরীর গেরুয়া প্রার্থী সম্বিত পাত্র। কিছুদিন আগেই তাঁর সমর্থনে পুরীতে প্রচার সেরেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই আবহে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে সম্বিত বলেন, বলেন, “লক্ষ লক্ষ মানুষ আজ হাজির ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদিকে দেখতে। জগন্নাথ নিজে মোদির ভক্ত।” স্বাভাবিক ভাবেই বিজেপি নেতার এই মন্তব্যে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। আক্রমণের মুখে সম্বিত সাফাই দেন, ভিড়ের মধ্যে মুখ ফসকে এই কথা বলে ফেলেছেন। এখানেই শেষ নয়, জগন্নাথের কাছে ক্ষমা চেয়ে প্রায়শ্চিত্তও শুরু করেন সম্বিত। কিন্তু তাতেও লাভের লাভ হয়নি বললেই চলে। পুরীতে বিজেপি প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী তথা নবীন পট্টনায়েকের দল বিজেডি ঘটনার নিন্দায় সরব হয়। পুরীর মানুষও বিজেপি প্রার্থীর এই মন্তব্যে তীব্র আপত্তি জানান। এই আবহে জনপ্রিয় বিজেডি নেতা ভি কে পাণ্ডিয়ানকে খানিক উলটো সুরেই কথা বলতে শোনা গেল।
আরও শুনুন: নারী-পুরুষ দ্বন্দ্ব নয়, শ্রম-সম্মান-মজুরির প্রশ্নেই উঠে আসছে শ্রমজীবী নারীর পৃথিবী
বিজেপি প্রার্থী সম্বিত পাত্রর উদ্দেশে তাঁর পরামর্শ, এই গরমে উপবাসের কোনও দরকার নেই। তিনদিনের উপবাস সম্বিতের শরীরে প্রভাব ফেলতে পারে বলেই আশঙ্কা করেছেন পাণ্ডিয়ান। তাই বিজেপি প্রার্থীকে নিজের শরীরের প্রতি যত্ন নেওয়ার কথাই তিনি বলেছেন। তবে এই পরামর্শ যে নেহাতই সৌজন্য প্রর্দশন নয়, তা পাণ্ডিয়ানের বাকি কথা শুনলেই স্পষ্ট বোঝা যায়। পরামর্শের আড়ালে সম্বিতকে সম্বিৎ হারানোর খোঁচাও দিয়েছেন পণ্ডিয়ান। অর্থাৎ তিনদিন উপবাস থাকলে যদি ভোটের আগে সম্বিত জ্ঞান হারান, সেই চিন্তা প্রকাশ করেছেন পাণ্ডিয়ান। এর থেকেই স্পষ্ট, বিজেপি নেতার মন্তব্য তিনি বা তাঁর দল কোনওভাবেই মানতে পারছেন না। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ওড়িশার রাজনীতির কথাও তুলে ধরেন পাণ্ডিয়ান। সেখানকার কোনও দলই রাজনীতির সঙ্গে ভগবানকে জড়ান না বলেই দাবি তাঁর। বিশেষ করে ওড়িশার অধীশ্বর জগন্নাথকএ সবসময় সবকিছুর উর্ধে রাখা হয় বলেই দাবি বিজেডি নেতার। কিন্তু বিজেপি সেই কাজই করেছে। তাই এই ইস্যুতে গোটা ওড়িষ্যাবাসীর মনেই ক্ষোভ জন্মেছে বলে মনে করছেন পাণ্ডিয়ান।