সুপ্রিম কোর্ট বলছে জামিন পাওয়াই সাধারণ নিয়ম, জেল হেফাজত আসলে ব্যতিক্রম। অথচ অভিযুক্ত যদি ধর্মে মুসলিম হন, তবে সেই সাধারণ নিয়মটাই বদলে যায়। গেরুয়া শিবিরকে খোঁচা দিয়ে দাবি করলেন কংগ্রেস নেতা। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
সুপ্রিম কোর্ট বলছে, মামলায় জামিন মেলাই সাধারণ নিয়ম। জেল হেফাজতের নির্দেশ পাওয়াই বরং ব্যতিক্রম। অথচ অভিযুক্ত যদি ধর্মে মুসলিম হন, তবে সেই সাধারণ নিয়মটাই বদলে যায়। জামিন নয়, জেলই সেখানে নিয়ম হয়ে দাঁড়ায়। এ কথা বলছেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং। সিএএ-এনআরসির প্রতিবাদ করে উমর খালিদের মতো যেসব আন্দোলনকারীরা এখনও জেলবন্দি, তাঁদের প্রসঙ্গ তুলেই গেরুয়া শিবিরকে খোঁচা দিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি মানবাধিকার রক্ষা সংক্রান্ত এক আলোচনাসভায় এ কথা বলেছেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা। সিএএ-এনআরসির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের চার বছর অতিক্রান্ত, চার বছর ধরে জেলেই বন্দি উমর খালিদরাও। সেই সময়কে চিহ্নিত করেই এই আলোচনাসভার আয়োজন। সম্প্রতি স্বরা ভাস্করও এই দীর্ঘ বন্দিত্ব প্রসঙ্গে বলেছেন, চার বছরে দুনিয়া বদলে যায়। তাঁর নিজের জীবনেই যেমন এই সময়ের মধ্যে প্রেম হয়েছে, বিয়ে হয়েছে, তিনি মা-ও হয়েছেন। এত কিছু ঘটতে যতখানি সময় লেগেছে, সেই গোটা সময় জুড়ে উমর খালিদ, শার্জিল ইমামরা জেলেই বন্দি রয়ে গিয়েছেন। কার্যত বিনা বিচারে। মনে করে নেওয়া যাক, হাথরাসের ধর্ষিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন সাংবাদিক সিদ্দিক কাপ্পান। সেই একই ইউএপিএ আইনে। সারা দেশ যখন ৭৬তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করছিল, সেই সময়েও, দু’বছর ধরে জেলে বন্দি হয়ে ছিলেন সেই সাংবাদিক। যিনি ধর্মে মুসলিম। বারবার জামিনের আর্জি নাকচ হয়ে গিয়েছিল তাঁরও, যেমন গিয়েছে উমরের। আর এই ইস্যুতেই এবার মুখ খুললেন হাত শিবিরের বর্ষীয়ান নেতা।
এই প্রবণতার নেপথ্যে আসলে কাজ করছে ঘোর মুসলিমবিদ্বেষ, সাফ বলছেন দিগ্বিজয়। তাঁর মতে, গেরুয়া শিবির এই যে বিদ্বেষ বয়ে নিয়ে চলে, সেই দ্বেষের বীজ বুনে দেয় আর.এস.এস। তিনি এমন এক জায়গায় জন্মেছেন, বড় হয়েছেন, যেখানে আর.এস.এস-এর এই আঁতুড়ঘর-সুলভ মনোভাব সকলেরই চেনা। হিটলারের জার্মানিতে নাৎসিরা যেভাবে ইহুদিনিধন করত, তার সঙ্গেই এই প্রবণতার তুলনা টেনেছেন দিগ্বিজয় সিং। বিচারব্যবস্থাকে যদি ধর্ম কোনোভাবেই প্রভাবিত করে, তবে গণতন্ত্রের পক্ষেই তা বিপজ্জনক, উমরদের বন্দিত্বের প্রসঙ্গ তুলেই তা মনে করালেন হাত শিবিরের বর্ষীয়ান নেতা।