যিশু নয়, বড়দিনে পুজো হোক হনুমানের। এমনই নিদান জনপ্রিয় ধর্মগুরু বাগেশ্বর বাবার। হিন্দুরা কীভাবে ক্রিসমাস পালন করবে, সেই নিয়মও শেখানে তিনি। ঠিক কী করার পরামর্শ দিলেন ধর্মগুরু? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
বড়দিন হিন্দুধর্মের উৎসব নয়। তাই এদিন সনাতনী হিন্দুদের কোনওভাবেই যিশুর পুজো করা উচিত না। সম্প্রতি এমনই নিদান দিয়েছেন জনপ্রিয় ধর্মগুরু বাগেশ্বর বাবা। তাঁর দাবি, ক্রিসমাসের দিন হিন্দুরা দলে দলে হনুমান মন্দিরে যান। একইসঙ্গে এইদিন তুলসীপুজোর তিথি। তাই দেবী তুলসীর আরাধনা হোক হিন্দুদের ঘরে ঘরে, এমনটাই চাইছেন ধর্মগুরু।
আরও শুনুন: বড়দিনেই কি জন্ম হয়েছিল যিশু খ্রিস্টের? রয়েছে অন্য মতও
সংবিধানে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, ভারত ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। তাই বছরভর সব ধর্মের অনুষ্ঠানেই শামিল হতে দেখা যায় গোটা দেশকে। দুর্গাপুজো হোক বা ইদ কিংবা নানকের জন্মদিন থেকে শুরু করে মহাবীর জয়ন্তী, সবেতেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত সেজে ওঠে উৎসবের আনন্দে। এর মধ্যে ক্রিসমাসের জাঁকজমক বরাবরই অন্য মাত্রায় পৌঁছতে দেখা যাক। কারণ এই উৎসব বিশ্বজনীন। জাতি ধর্ম নির্বিশেষে গোটা পৃথিবীর মানুষ মেতে ওঠেন ক্রিসমাসের আনন্দে। হিন্দু দেবদেবীর পুজোর মতো এক্ষেত্রে তেমন নিয়ম কানুনের বালাই নেই। স্রেফ চার্চে গিয়ে প্রার্থনা, তারপর কেক, চকোলেট বিতরণের রেওয়াজ। মূলত খ্রিস্টানরাই এই নিয়ম পালন করেন। কিন্তু অনেক জায়গাতেই হিন্দুরাও তাদের সঙ্গে যোগ দেন। নিজেদের বিশ্বাস মতো ফুল নিয়ে যিশুর মূর্তিতে তাঁরা রেখে আসেন, মোমবাতিও জ্বালান কেউ কেউ। এছাড়া বাড়িতে ক্রিসমাস ট্রি, সান্টা ক্লজ সাজানোর রেওয়াজ তো আছেই। আর এতেই ঘোর আপত্তি হিন্দু ধর্মগুরু বাগেশ্বর বাবার। মধ্যপ্রদেশের বাগেশ্বর ধামের কর্ণধার এই ধর্মগুরু গোটা দেশেই বেশ জনপ্রিয়। সোশ্যাল মিডিয়াতেও হামেশাই তাঁর বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হতে দেখা যায়। মূলত সনাতন ধর্মকে সামনে রেখে বিভিন্ন বিষয়ে হিন্দুদের উদ্দেশে বিশেষ বার্তা দেন এই বাগেশ্বর বাবা।
আরও শুনুন: ‘হ্যাপি’ নয়, বড়দিনের শুভেচ্ছায় কেন বলা হয় ‘মেরি ক্রিসমাস’?
সম্প্রতি এক সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থার সাক্ষাৎকারে বাগেশ্বর বাবা-র সাফ দাবি, ক্রিসমাস উদযাপন কোনওভাবেই ভারতীয় সংস্কৃতির অংশ নয়। তাই হিন্দুদের এই পাশ্চাত্য সংস্কৃতি বয়কটের নিদান দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, শিশুদের সান্টা ক্লজ কিনে দেওয়া একেবারেই উচত নয়। এইসময় বিভিন্ন স্কুলে সান্তা সেজে গিফট দেওয়ার চল রয়েছে। এই রেওয়াজও অবিলম্বে বন্ধ করার কথা বলেছেন বাগেশ্বর বাবা। এইদিনে দলে দলে হনুমান মন্দিরে যাওয়ার কথা বলেছেন তিনি। যিশুর পুজো নয়, বড়দিনে হনুমানকেই বিশেষভাবে পুজো করা হোক, এমনই দাবি ধর্মগুরুর। শুধু তাই নয়, এইদিন ঘরে ঘরে পুজো করা হোক তুলসীদেবীর। একইসঙ্গে তাঁর দেবী, এইদিন বাড়িতে নিজের বাবা-মা কে পুজো করুক সকলে। এটাই ভারতীয় সংস্কৃতি। সনাতনী হলে ক্রিসমাস পালন করবেন না হিন্দু ভারতীয়রা, এ কথাও সাফ জানিয়েছেন বাগেশ্বর বাবা।