যত দিন যাচ্ছে, তত মাথাচাড়া দিচ্ছে ওমিক্রন আতঙ্ক। করোনা পরিস্থিতি যে ফের যথেষ্ট বিগড়েছে তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে মানুষ। তাই খুঁজছে পরিত্রাণ। এরকম অবস্থাতেই চাঞ্চল্য দেখা গেল এক ব্যক্তির দাবিতে। অন্ধ্রের ওই ব্যক্তি জানাচ্ছেন, ওমিক্রন রুখতে পারে ভেষজ ওষুধ। আর সেই ওষুধ তৈরি করে ফেলেছেন তিনি নিজেই। যদিও এই দাবি সহজে মেনে নিচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। আসুন আমরা ঘটনার গতিপ্রকৃতির দিকে একটু চোখ রাখি।
আয়ুর্বেদ যে সত্যিই ম্যাজিকের মতো রোগ সারাতে পারে, সে নিয়ে কোনও সন্দেহই নেই। বর্তমান সময়ে, বিশেষত এই করোনা পরিস্থিতিতে, আয়ুর্বেদের গুরুত্ব সকলেই টের পেয়েছেন। এই আয়ুর্বেদকে হাতিয়ার করেই এবার চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন অন্ধ্রপ্রদেশের এক ব্যক্তি। তাঁর মতে, করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনকে কাবু করার মতো রসদ আছে তাঁর ঝুলিতে। ভেষজ উপাদানেই প্রতিরোধ গড়ে তোলা যাবে ওমিক্রনের বিরুদ্ধে। আর সেই ওষুধ তিনি নিজেই তৈরি করে ফেলেছেন। সাধারণ মানুষ এর নাম দিয়েছেন ‘ম্যাজিক ওষুধ’।
আরও শুনুন: ২০২২ কি সুখের হবে! ভবিষ্যদ্বাণীতে কী ইঙ্গিত ছিল নস্ত্রাদামুসের?
কৃষ্ণপতনমের বাসিন্দা বনিগি আনন্দাইয়া একজন আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ হিসেবেই এলাকায় পরিচিত। এর আগেও তিনি করোনা মোকাবিলার ওষুধ তৈরি করেছেন। যখন করোনার প্রাদুর্ভাব মাত্রাছাড়া তখন তাঁর তৈরি ভেষজ ওষুধে করোনা আটকানো যাবে বলে দাবি করেন তিনি। সেই নিয়ে তর্ক-বিতর্কও জমে ওঠে। কেউ কেউ অভযোগ করেন, পর্যাপ্ত অনুমতি না নিয়েই তিনি ওই ওষুধের ব্যাপারে প্রচার করেছিলেন। আর তার ফলেই ভিড় জমাচ্ছিলেন সাধারণ মানুষ। তাতে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনাই ছিল বেশি। খবর পেয়ে এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয় আয়ুষ মন্ত্রকের এক প্রতিনিধি দল। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর কিছু কিছু ক্ষেত্রে আনন্দদাইয়ার ভেষজ ওষুধ ব্যবহারে অবশ্য ছাড়পত্র মেলে।
আরও শুনুন: ৩ বছর আগে মৃত্যু তরুণীর, টের পাননি কেউই, পুলিশ দেখেছিল টিভির সামনে বসে কঙ্কাল…
প্রায় সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ওমিক্রন পরিস্থিতিতেও। এবারও তাঁর দাবি, নয়া ভ্যারিয়েন্টের প্রতিরোধে কোন কোন ভেষজ উপাদান জরুরি, তা তিনি খুঁজে বের করেছেন। এবং তা দিয়েই তৈরি করেছেন নতুন ওষুধ। মুখে মুখে এই ওষুধ ছড়িয়েছে ‘ম্যাজিক ওষুধ’ নামে। বহু মানুষ ওমিক্রন কাঁটা দূর করতে সেই ওষুধ কিনতে আসছেন দূর দূরান্ত থেকে।
আরও শুনুন: সোয়েটার পরেই শুয়ে পড়া অভ্যাস! হার্টের সমস্যা থাকলে কিন্তু সাবধান
কিন্তু পালটা প্রশ্নও উঠেছে। বেশ কিছু গ্রামবাসী আনন্দাইয়ার বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের প্রশ্ন, ওই ব্যক্তি কি সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য দপ্তরের থেকে এই ওষুধ বিক্রির অনুমতি পেয়েছেন? যদি না পান, তাহলে এখনই এই ওষুধ বিক্রি করা হচ্ছে কেন? যদিও এ ব্যাপারে এখনও কোনও সদুত্তর মেলেনি। গ্রামবাসীদের আরও ভয়, বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ আসছেন এই ওষুধ কিনতে। তাতে তো ওমিক্রন আরও ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকছে। একদিক থেকে প্রতিরোধ গড়তে গিয়ে, অন্যদিকে ঢিলে দেওয়া হচ্ছে না তো! পুরো বিষটিই অবশ্য এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে।
করোনা আসার পর থেকেই আয়ুর্বেদের গুরুত্ব নতুন করে বুঝেছে বহু মানুষ। প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে নিয়মিত ভেষজ উপাদানে ভরসা রেখেছেন দেশবাসীদের একাংশ। তাই আয়ুর্বেদ বা ভেষজ উপাদান করোনা মোকাবিলায় কার্যকরী হয়ে উঠতেই পারে। তবে সেক্ষেত্রে অবশ্যই জরুরি আয়ুষ মন্ত্রকের ছাড়পত্র। এই ব্যক্তির তৈরি ওষুধের ক্ষেত্রে সেই ছাড়পত্র মেলে কিনা, এখন সেটাই দেখার।