দক্ষিণ দিল্লিতে নবরাত্রির সময় মাংসের দোকান বন্ধের ফরমান নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছিল। ঠিক তার পরেই এবার আমিষ বন্ধের দাবি উঠল অন্তর্দেশীয় উড়ানেও। বিমানে আমিষ খাবার পরিবেশন করলে আঘাত লাগতে পারে নিরামিশাষীদের ধর্মীয় আবেগে। এই মর্মেই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকে চিঠি লিখলেন এক ব্যক্তি। ঘটনার সূত্রপাত কোথা থেকে? শুনে নিন।
নবরাত্রির সময় মাংস বিক্রি বন্ধের নিদান দিয়েছে দক্ষিণ দিল্লি পুরসভা। নবরাত্রি উপলক্ষে ৯৯ শতাংশ মানুষই নিরামিষ খেয়ে থাকেন এই সময়টা। তাঁদের ধর্মীয় ভাবাবেগের কথা ভেবেই এই ফরমান জারি করা হয়েছে। পুরসভার এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। ব্যাপারটি নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত রাজনৈতিক মহলও। অনেকেই মনে করিয়ে দিয়েছেন সাংবিধানিক অধিকারের প্রসঙ্গও।
দিল্লির পর এবার প্রশ্ন উঠল ডোমেস্টিক ফ্লাইটের খাদ্যতালিকা নিয়েও। সেখানেও আমিষ খাবারদাবার পুরোপুরি বন্ধের আরজি জানালেন এক ব্যক্তি। এই মর্মে অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের দ্বারস্থও হয়েছেন তিনি।
আরও শুনুন: ‘যখন খুশি মাংস খাওয়ার অনুমোদন সংবিধানই দিয়েছে’, দিল্লির ফরমানকে বিঁধলেন মহুয়া
ঘটনার সূত্রপাত দিন কয়েক আগে। এয়ার ইন্ডিয়া-র উড়ানে জৈন ধর্মাবলম্বী জনৈক যাত্রীকে ভুলবশত আমিষ খাবার দিয়ে ফেলেছিলেন বিমানকর্মীরা। গত ২৫ মার্চ টোকিও থেকে দিল্লি ফিরছিলেন তিনি। ব্যপারটি নিয়ে টুইটারে সরব হন রাঘবেন্দ্র জৈন নামে ওই ব্যক্তি। তিনি জানান, আগে থেকে নিরামিষ খাবারের কথা বলে রাখা সত্ত্বেও বিমানকর্মীরা তাঁকে আমিষ খাবার পরিবেশন করেন। আপত্তি জানানোর পরও বিমানকর্মীরা সেটাকেই নিরামিষ বলে চালানোর চেষ্টা করেন বলেও অভিযোগ। ইতিমধ্যেই এই অভিযোগ খতিয়েও দেখছে এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ। শুরু হয়েছে তদন্ত।
আরও শুনুন: কর্মীরাই সম্পদ… মূল্যবৃদ্ধিতে নাজেহাল কর্মীদের ৭৪ হাজার টাকা বোনাস, নজির মালিকের
এবার সেই ঘটনার কথা উল্লেখ করেই অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধ্রিয়ার কাছে চিঠি দিল গুজরাট অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ার বোর্ড ও জৈন কমিউনিটি। বোর্ডের তরফে রাজেন্দ্র শাহ নামে এক ব্যক্তি চিঠি লিখে জানিয়েছেন, আমিষ খাবারের জন্য অনেক সময়ই অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয় নিরামিশাষীদের। একই কারণে তাঁদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত লাগে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। তাই অবিলম্বে বিমানে আমিষ খাবার পরিবেশন বন্ধ করার আবেদন জানিয়েছেন ওই ব্যক্তি। তেমনটা হলে নিরামিশাষীদের জন্য যাত্রা অনেক স্বচ্ছন্দ হতে পারে বলেই দাবি।
তবে আশ্চর্যের কথা, জৈন ওই ব্যক্তির সঙ্গে ঘটনাটি কিন্তু ঘটেছিল একটি আন্তর্জাতিক উড়ানে। তার জন্য ডোমেস্টিক ফ্লাইট বা অন্তর্দেশীয় উড়ানে আমিষ খাবারে নিষেধাজ্ঞা জারির আবেদন কেন জানানো হল? সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। তবে বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের তরফে এখনও পর্যন্ত এই চিঠির কোনও উত্তর মেলেনি।