এখনকার দিনে ঠিক কার কার কাছে যে আপনার ফোন নম্বর আছে, তা আপনি নিজেও জানেন না। চেনা নম্বরের পাশাপাশি তাই অচেনা নম্বর থেকেও আকছার ফোন আসে। আমরা সে ফোন ধরেও ফেলি। আর এই ফোন ধরলেই পড়তে হয় নানারকমের সমস্যায়। সম্প্রতি কলকাতা পুলিশের তরফে সতর্ক করে বলা হল, ‘ফোন ধরবেন সাবধানে’। কিন্তু কেন এই সতর্কতা জানেন? আসুন শুনে নিই।
ফোন মারফত নানা প্রতারণার জাল যে বিছানো থাকে, সে আমরা প্রায় প্রত্যেকেই জানি। অনলাইন ট্রানজকশনের ক্ষেত্রে এখন অনেক সতর্কও থাকি আমরা। কিন্তু কথায় বলে, বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরো। যত সাবধানেই থাকা যাক না কেন, ফোন ধরামাত্র যদি কেউ কারসাজি করে, তাহলে আর কিছু করারই থাকে না বলতে গেলে। তাই ফোন ধরার ক্ষেত্রেই সাবধান করল কলকাতা পুলিশ। সম্প্রতি একটি ফেসবুক পোস্টে এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
আরও শুনুন – ‘ধর্ষণ করা হচ্ছে না তো?’ পুলিশ হেফাজতে থাকা Pori Moni-কে নিয়ে বিস্ফোরক প্রশ্ন Taslima Nasrin-এর
কেন এই সতর্কতা? তার ব্যাখ্যা দিতে কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে একটি ঘটনার কথা । ওই পোস্টটিতে লেখা হয়েছে, ‘ঘটনাটি আমাদের নজরে আসে গত জুন মাসে। ফুলবাগান এলাকার ষাটোর্ধ এক বাসিন্দা ফুলবাগান থানার মাধ্যমে আমাদের লিখিতভাবে জানান, ১৭ জুন রাত নটা থেকে এগারোটার মধ্যে তাঁর সঙ্গে ভিডিও কল মারফত যোগাযোগ করে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি, এবং কল চলাকালীন তাঁর স্ক্রিনশট করে রাখে সে। পরবর্তীকালে তাঁর ছবি মিশিয়ে দেওয়া হয় কিছু অশ্লীল ছবির সঙ্গে, এবং অভিযুক্ত তাঁকে হুমকি দেয়, টাকা না দিলে সেইসব ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হবে অভিযোগকারীর ফেসবুক বন্ধুতালিকার সদস্যদের কাছে। চাপে পড়ে নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে অভিযুক্তের অ্যাকাউন্টে কিছু টাকাও পাঠান অভিযোগকারী।
আরও শুনুন – WhatsApp গ্রুপে যে কেউ Add করে? আপনি চাইলে আটকে দিতে পারেন এইভাবে…
ঘটনাটি জানার সঙ্গে সঙ্গেই তথ্য সংগ্রহের কাজে নেমে পড়ি আমরা। যে দুটি নম্বর থেকে ভিডিও কল করা হয়, সেগুলি আমাদের কাছে ছিলই, তাছাড়াও বিশ্বস্ত সোর্স মারফত সংগৃহীত খবর এবং অন্যান্য তথ্যের ভিত্তিতে ৬ অগাস্ট গভীর রাতে রাজস্থানের আলওয়ার শহর থেকে আমরা দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করি আলওয়ার পুলিশের সহযোগিতায়। ধৃতদের নাম ফকরুদ্দিন এবং আসলম দীন খান, তাদের কাছ থেকে আমরা বাজেয়াপ্ত করেছি চারটি মোবাইল ফোন এবং তিনটি ব্যাঙ্কের এটিএম কার্ড।
ধৃতদের ট্রানজিট রিমান্ড-এর অনুমতি দেন আলওয়ারের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, যার ফলে তাদের কলকাতায় নিয়ে আসি আমরা।’
অর্থাৎ শুধু টাকাপয়সা লেনদেনের ক্ষেত্রেই নয়, ফোন ধরতেও হবে সতর্কতার সঙ্গে। নইলে বিপত্তি ঘটতে পারে। তাই কলকাতা পুলিশ জানাচ্ছে, ‘ফোন ধরবেন সাবধানে’। আর কে না জানে, সাবধানের মার নেই।